গত তিন বছরে সবচেয়ে বেশি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন কে, প্রশ্নটার উত্তর কি আপনি জানেন? না জানা থাকলে অনুমান করুন তো। কোন নামগুলো সবচেয়ে বেশি আসবে, তা অনুমান করা অবশ্য কঠিন কিছু নয়। ক্রিস গেইল কিছুদিন একটু অনিয়মিত হয়ে না পড়লে হয়তো তাঁর নামই বলতেন অনেকে। গেইলের মতোই ‘টি–টোয়েন্টির ফেরিওয়ালা’ তিন ক্যারিবীয় আন্দ্রে রাসেল, ডোয়াইন ব্রাভো, কাইরন পোলার্ডদের নামও হয়তো উঁকি দিচ্ছে আপনার মনে।
তবে এ ক্ষেত্রে একটা পালাবদল ঘটে গেছে। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে হিসাব করলে সবচেয়ে বেশি টি–টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন রশিদ খান। এতে অবশ্য খুব বেশি অবাক হওয়ার কিছু নেই। আইপিএল, পিএসএল থেকে শুরু করে সিপিএল, বিগ ব্যাশ—সব ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টেই নিয়মিত মুখ আফগান লেগ স্পিনার। এ সময়ে তিনি খেলেছেন ১৮০টি টি–টোয়েন্টি ম্যাচ।
তালিকার ৩ নম্বরে আছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক নিকোলাস পুরান। গেইল, রাসেল, ব্রাভোদের যোগ্য উত্তরসূরি বলা হয় পুরানকে। তবে তাঁদের সঙ্গে একটু পার্থক্যও আছে পুরানের। কারণ, ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় দলে অনেকটাই অনিয়মিত রাসেল–নারাইনরা। সেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মেরুন জার্সিতে পুরান খেলেন নিয়মিত। তাঁর নেতৃত্বেই আগামী মাসে হতে যাওয়া টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে আইপিএলে পাঞ্জাব কিংস ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, পিএসএলে মুলতান সুলতান, বিগ ব্যাশে সিডনি সিক্সার্সের মতো দলে খেলছেন পুরান। সব মিলিয়েই তালিকার তিনে পুরান। এ সময়ে তিনি খেলেছেন ১৪৫টি ম্যাচ।
গত তিন বছরে সবচেয়ে বেশি টি–টোয়েন্টি ম্যাচ খেলায় ৪ নম্বরে আছেন ইংল্যান্ড পেসার ক্রিস জর্ডান। ডেথ ওভারে দুর্দান্ত বোলিংয়ের জন্য জাতীয় দলের সঙ্গে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতেও নিয়মিত মুখ তিনি। আইপিএল, পিএসএল, বিগ ব্যাশ, সিপিএলে খেলেন। তবে পিএসএল–বিগ ব্যাশের মতো আইপিএলে নিয়মিত ম্যাচ খেলা হয় না জর্ডানের। সব মিলিয়ে গত তিন বছরে জর্ডান খেলেছেন ১৪৩টি ম্যাচ।
তালিকার ৫ নম্বরেও আছেন একজন ইংলিশ। জেমস ভিন্স ইংল্যান্ডের জাতীয় দলে আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকেন, আইপিএলেও নিয়মিত খেলার সুযোগ পান না। তবে পিএসএল ও বিগ ব্যাশ, ন্যাটওয়েস্ট টি–টোয়েন্টি ব্লাস্টের নিয়মিত মুখ ভিন্স। এ সময়ে ইংল্যান্ডের এই ব্যাটসম্যান ন্যাটওয়েস্ট ব্লাস্টে খেলেছেন সর্বোচ্চ ৪৭ ম্যাচ, বিগ ব্যাশে ৪০ ম্যাচ। পিএসএল, মাজানসি সুপার লিগ ও দ্য হান্ড্রেডে খেলেছেন যথাক্রমে ১৬, ৮ ও ১৮ ম্যাচ। এ ছাড়া ইংল্যান্ডের জার্সিতে খেলেছেন ৯ ম্যাচ। এতগুলো লিগে নিয়মিত খেলার কারণে ১৩৮টি ম্যাচ খেলে তালিকার পঞ্চম স্থানে ভিন্স।
অগত তিন বছরে সবচেয়ে বেশি টি–টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা পাঁচজনের কথা বলা হয়েছে, অথচ নাম বলা হয়েছে চারটি। রশিদ খানের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলেছেন যিনি, সেই অ্যালেক্স হেলসের নামটা ইচ্ছা করেই বলা হয়নি এখনো। যে নামটা কয়েক দিন আগে সংবাদ শিরোনাম হয়েছে। উপলক্ষ তিন বছরের বেশি সময় পর ইংল্যান্ডের টি–টোয়েন্টি দলে ফেরা। সেটাও আবার টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে।
দলে ফেরার পর প্রথমবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে হেলস জানিয়েছেন, তিন বছর ধরে তিনি ক্যারিয়ারের সেরা ক্রিকেটটা খেলছেন। এমনকি দলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রব কিকে ফোন করে তিনি সরাসরিই জানতে চেয়েছিলেন, কেন বারবার তাঁকে উপেক্ষা করা হচ্ছে, ‘আসলেই আমার কোনো সুযোগ আছে নাকি সংবাদমাধ্যমের সামনে শুধু বলার জন্যই বলা। আপনারা যদি শুধু ক্রিকেটের কথা বলেন, আমার তো মনে হয় স্কোয়াডে জায়গা আমার প্রাপ্য।’
হেলসের এমন আত্মবিশ্বাসের হয়ে কথা বলে পরিসংখ্যানও। জাতীয় দলে না খেললেও বিশ্বব্যাপী টি-টোয়েন্টি লিগগুলোতে এ সময়ে তিনি খেলেছেন ১৫৫টি ম্যাচ। হেলস খেলেছেন বিগ ব্যাশের দল সিডনি থান্ডার, পিএসএলে ইসলামাবাদ ইউনাইটেডের মতো দলেও। ব্যাট হাতে দাপট দেখিয়েছেন সেখানে। ২০১৯ সালের ১ অক্টোবরের পর বিগ ব্যাশে এখন সর্বোচ্চ রানের মালিকও হেলস (১৫০২)।
এ জন্যই হয়তো হেলস বলেছেন, ‘আমাকে সুযোগ দিলে তা কাজে লাগানোর সামর্থ্য আমার আছে, বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়ার মতো জায়গায়।’