অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় খেলা ক্রিকেট, জনপ্রিয়ও। তবে সদ্য সমাপ্ত ফিফা নারী বিশ্বকাপ ঘিরে অস্ট্রেলিয়ায় ফুটবলের যে জাগরণ দেখা গেছে, ভবিষ্যতে ফুটবলই অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় খেলা হয়ে যেতে পারে বলে ধারণা মিচেল জনসনের।
বিশ্বকাপজয়ী এই পেসারের মতে, অস্ট্রেলিয়ার খেলাধুলার জগতে ক্রিকেটের দাপট ক্রমেই কমার পথে।
ক্রিকেটে পাঁচবার ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ডের সঙ্গে অ্যাশেজ নামের টেস্ট দ্বৈরথ ব্যাপক জনপ্রিয়। তুলনায় ফুটবলে সাফল্য নেই বললেই চলে। গত বছর কাতার বিশ্বকাপে শেষ ষোলো থেকে ছিটকে যায় ছেলেদের দল। আর মেয়েদের বিশ্বকাপে এবারের আগে সর্বোচ্চ অবস্থান ছিল শেষ আট।
তবে এ বছর নিজেদের মাটিতে অনুষ্ঠিত ফিফা নারী বিশ্বকাপে আগের অর্জনকে ছাড়িয়ে সেমিফাইনালে উঠে যায় ‘মাটিলডাস’ নামে পরিচিত দলটি। অস্ট্রেলিয়াজুড়ে মেয়েদের ফুটবল ঘিরে উৎসাহ–উদ্দীপনাও ছিল চোখে পড়ার মতো।
অস্ট্রেলিয়ায় মেয়েদের ফুটবলের এই জনপ্রিয়তা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে বলে মনে করছেন জনসন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৭৩ টেস্ট খেলা এই বাঁহাতি পেসার ওয়েস্ট অস্ট্রেলিয়ানে একটি কলাম লিখেছেন, যার শিরোনাম ‘কেন ফুটবল অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় খেলা হয়ে ওঠার সম্ভাবনা আছে’।
ফিফা নারী বিশ্বকাপের মাধ্যমে ফুটবলের জনপ্রিয়তার পরিপ্রেক্ষিতে ক্রিকেটের সতর্ক হওয়ার আছে বলে মনে করেন জনসন, ‘ক্রিকেটের কি এ নিয়ে ভাবা দরকার? আমি তা–ই মনে করি। অস্ট্রেলিয়ার খেলাধুলা অঙ্গনের আগামী এক দশক কৌতূহলোদ্দীপক হতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে সারা দেশে ফুটবলে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বেড়েছে। ফুটবলের দীর্ঘদিনের যে অভিযোগ ছিল যে তারা সরকারি অনুদান সমানুপাতিক হারে পায় না। এখন দেশের মাটিতে বিশ্বকাপের মাধ্যমে সেটা ঘুচতে চলেছে।’
ওজট্যাম রেটিং ও চ্যানেল সেভেনের তথ্য বলছে, ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার সেমিফাইনাল একই সময়ে ১ কোটি ১১ লাখ দর্শক দেখেছেন, যা দেশটির ক্রীড়া ইতিহাসে রেকর্ড। জনসনের মতে, টিভি ও অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের খেলা দেখার সুযোগ বৃদ্ধি পাওয়ায় অস্ট্রেলিয়ায় ’৮০, ’৯০ দশকের মতো ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা নেই, ‘ইতিহাসের অন্যতম আগ্রহজাগানিয়া অ্যাশেজ এবং অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট দলের মাটিলডাসের মতো পুরো দেশকে এক সুতায় গাঁথার ক্ষমতা থাকার পরও ২০২৩ সালে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা এখানে কমছে।’
কেন কমছে, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন ২০১৫ বিশ্বকাপজয়ী এই পেসার, ‘ক্রিকেট এখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজি টি–টোয়েন্টির দিকে মোড় নিচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ায় ক্রিকেট এখন সেই জায়গায় যাচ্ছে, যেটা একসময় মাটিলডাস, সকারুস (অস্ট্রেলিয়ার ছেলেদের ফুটবল দল) ও বুমারসদের (অস্ট্রেলিয়ার বাস্কেটবল দল) ছিল। এর মধ্যে টেস্ট ক্রিকেটটা এখনো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ভবিষ্যতে কী হবে, আমি নিশ্চিত নই।’