শহীদুল ইসলাম, রাকিবুল হাসান, তাইবুর রহমানের বোলিং পারফরম্যান্সের পর হাবিবুর রহমানের রেকর্ড গড়া শতকে মধ্যাঞ্চলকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে তাদের টপকে বিসিএলের ফাইনালে চলে গেছে উত্তরাঞ্চল। প্রথম দুই ম্যাচেই জিতে ফাইনালের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেলেও আজ হোঁচট খায় মধ্যাঞ্চল। তাদের দেওয়া ২০২ রানের লক্ষ্য ২৪.৪ ওভারেই পেরিয়ে গিয়ে নেট রান রেটে বড় লাফ দিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে উত্তরাঞ্চল। আগামী ৩০ ডিসেম্বর মিরপুরের ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ পূর্বাঞ্চল, আজ যারা ৭ উইকেটে হারিয়েছে দক্ষিণাঞ্চলকে।
কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ওভারে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান জিশান আলমকে হারালেও মোহাম্মদ নাঈম ও সাইফ হাসানের ৬৩ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে শুরুটা ভালোই হয় মধ্যাঞ্চলের। তবে মিডল অর্ডারের ধসে পিছিয়ে পড়ে তারা। ১১৭ রানে ২ উইকেট থেকে তারা পরিণত হয় ১৪১ রানে ৬ উইকেটে। চারে নামা মাহিদুল ইসলাম শেষ পর্যন্ত ৯৯ বলে ৬৭ রান করে অপরাজিত থাকেন। কিন্তু অষ্টম উইকেটে (৬০ বলে ৪৪ রানের জুটি) আবু হায়দার (২৪) ছাড়া তাঁকে সেভাবে কেউ সঙ্গ দিতে পারেননি। ৪৮.১ ওভারে ২০১ রানেই থামে তাদের ইনিংস। ৪১ রানে ৪ উইকেট নেন শহীদুল। রাকিবুল ও তাইবুর নেন ২টি করে উইকেট।
রান তাড়ায় হাবিবুরের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ১০ ওভারেই ১২৪ রান তুলে ফেলে উত্তরাঞ্চল। হাবিবুর অবশ্য ভাগ্যের সহায়তা পান, ০ রানেই ক্যাচ তুলেও বেঁচে যান। ১৯ বলেই অর্ধশতক পূর্ণ করেন তিনি, লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানের মধ্যে যা দ্বিতীয় দ্রুততম। অর্ধশতকের পর বাঁচেন আরেকবার। শতক পূর্ণ করতে তাঁর লাগে ৪৯ বল, বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যা দ্রুততম। আগের রেকর্ড ছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার। ২০১৬ সালে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ৫০ বলে শতক করেছিলেন কলাবাগানের হয়ে খেলা মাশরাফি।
তানজিদ হাসানের সঙ্গে হাবিবুরের উদ্বোধনী জুটিতেই ওঠে ১৪০ রান। শেষ পর্যন্ত ৬১ বলে ১১৭ রানের ইনিংসে হাবিবুর মারেন ৯টি করে চার ও ছক্কা। ১৭৪ রানে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন তিনি, তবে আর কোনো উইকেট না হারিয়েই উত্তরাঞ্চলের জয় নিশ্চিত করে আবদুল্লাহ আল মামুন ও অমিত হাসানের জুটি।
দিনের অন্য ম্যাচে দল ফাইনালে উঠলেও ১ রানের আক্ষেপে পুড়েছেন জাকির হাসান। দক্ষিণাঞ্চলকে ৭ উইকেটে হারানো ম্যাচে ৯৯ রানে রানআউট হন পূর্বাঞ্চলের এ ব্যাটসম্যান।
এ ম্যাচেও পূর্বাঞ্চলের জয়ের ভিত গড়ে দেন বোলাররাই। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণাঞ্চল গুটিয়ে যায় ৪১.৩ ওভারে ২০৭ রানেই। দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম চার ব্যাটসম্যানই ভালো শুরু পেয়েছিলেন, তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি কেউ। সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেন ছয়ে নামা মোসাদ্দেক হোসেন। দ্বিতীয় উইকেটে আসে সর্বোচ্চ ৪৯ রানের জুটি। পূর্বাঞ্চলের অফ স্পিনার নাঈম হাসান ৪ উইকেট নেন ৫৫ রানে, ২টি উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ।
রান তাড়ায় দলীয় ২৬ রানে পারভেজ হোসেনকে হারালেও জাকির ও মাহমুদুলের ১১১ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে কাজ সহজ হয়ে আসে পূর্বাঞ্চলের। ৫৪ রান করে আউট হন মাহমুদুল। শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে জাকির এরপর তোলেন আরও ৬৮ রান। জয়ের জন্য যখন ৩ রান দরকার, জাকির তখনই হন রানআউট। ১০৭ বলের ইনিংসে ১১টি চারের সঙ্গে তিনি মারেন ৩টি ছক্কা। ১১ ওভার বাকি থাকতেই জয় নিশ্চিত হয় তাদের।
এ জয়ে তালিকার শীর্ষে থেকেই ফাইনালে গেল পূর্বাঞ্চল। অন্যদিকে ৩টি ম্যাচই হারল দক্ষিণাঞ্চল।