জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে হেরে যাওয়া পাকিস্তানের জন্য নতুন কিছু নয়। মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্টেও একই কাণ্ড করেছে পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ৩১৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে একপর্যায়ে ৫ উইকেটে ২১৯ রান তুলে ফেলেছিল সফরকারীরা। ক্রিজে তখন ভালোভাবেই থিতু হয়েছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও আগা সালমান।
কিন্তু প্যাট কামিন্সের এক বাউন্সারেই ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। কামিন্সের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রিজওয়ান। যদিও সেই আউট তুমুল বিতর্কের জন্ম দেয়। এরপর আর ১৮ রান তুলতেই বাকি ৪ উইকেট হারায় পাকিস্তান। ৭৯ রানে ম্যাচ জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া। পার্থে আগের টেস্টও জেতায় স্বাগতিকেরা এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ নিজেদের করে নেয়।
ম্যাচ–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের ক্রিকেট পরিচালক ও এই সফরের কোচ মোহাম্মদ হাফিজ দাবি করেন, তাঁর দল ম্যাচজুড়ে অনেক ভুল করলেও অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে ভালো খেলেছে।
হাফিজ বলেন, ‘দল যেভাবে আক্রমণাত্মক খেলার সাহস দেখিয়েছে, তা নিয়ে আমি গর্বিত। যদি আমি ম্যাচের সারসংক্ষেপ করি, তাহলে পাকিস্তান দল ওদের চেয়ে ভালো খেলেছে। হ্যাঁ, আমরা কিছু ভুল করেছি। ম্যাচ হেরে সেসব ভুলের মাশুল দিতে হয়েছে। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, আমাদের খেলার ধরন ইতিবাচক ছিল।’
পরে হাফিজের এই মন্তব্যের বিষয়ে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক কামিন্সের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলেন সংবাদকর্মীরা। কামিন্স উত্তরটা বেশ বিনয়ের সঙ্গেই দিয়েছেন। দুই ইনিংস মিলিয়ে ১০ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে জেতানো এই ফাস্ট বোলার হাসতে হাসতে বলেছেন, ‘আহ...শান্ত হোন। ওরা ভালো খেলেছে। কিন্তু তাতে কিছু আসে–যায় না। দিন শেষে জেতাটাই মুখ্য।’
সংবাদ সম্মেলনে আম্পায়ারের ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস) নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাফিজ। বিশেষ করে রিজওয়ানের বিতর্কিত আউট নিয়ে। বল তাঁর গ্লাভস স্পর্শ করেনি, বরং রিস্ট ব্যান্ডে লেগেছে—রিজওয়ান এমন দাবিতে অনড় ছিলেন। কিন্তু ডিআরএসের মাধ্যমে রিজওয়ানকে আউট ঘোষণা করা হয়।
ডিআরএসকে ‘অভিযুক্ত’ প্রযুক্তি উল্লেখ করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরও ভালোভাবে যাচাইয়ের দাবি তোলেন হাফিজ। তাঁর এমন মন্তব্যের জবাবও কামিন্স ঠান্ডা মাথায়ই দিয়েছেন। জানিয়েছেন, প্রযুক্তির ব্যবহারের ওপর সবার আস্থা রাখা উচিত। প্রযুক্তিই ক্রিকেটে ভারসাম্য নিয়ে এসেছে।
হাফিজের সঙ্গে বাগ্যুদ্ধে না জড়িয়ে একজন দক্ষ ও পরিপক্ব নেতার মতো জবাব দেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ প্রশংসিতও হচ্ছেন কামিন্স।