আজ নিজেদের ১০০তম টেস্ট খেলতে নেমেছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও জনি বেয়ারস্টো
আজ নিজেদের ১০০তম টেস্ট খেলতে নেমেছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও জনি বেয়ারস্টো

১০০তম টেস্ট: অশ্বিন স্মারক নিলেন মেয়ের কাছ থেকে, বেয়ারস্টো কাঁদলেন মাকে জড়িয়ে

দেশের হয়ে ১০০ টেস্ট খেলা চাট্টিখানি কথা নয়। দিনের পর দিন, বছরের পর বছর অনেক নিবেদনের পর ছুঁতে হয় সেই মাইলফলক। ১৪৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ইতিহাসে কমপক্ষে ১০০ টেস্ট খেলা ক্রিকেটারের সংখ্যা ছিল ৭৬। আজ সেটি বেড়ে দাঁড়াল ৭৮-এ।

ধর্মশালায় আজ ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচে নিজেদের ১০০তম টেস্ট খেলতে নেমেছেন ভারতের স্পিন অলরাউন্ডার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যান জনি বেয়ারস্টো। ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে দুজনই নিজের অনুভূতি জানিয়েছিলেন। অশ্বিন বলেছিলেন, ১০০তম টেস্টের আগে তাঁর চোখের সামনে পুরো ক্যারিয়ার ভাসছে। আর বেয়ারস্টো বলেছিলেন, আবেগ সামলাতে না পেরে যেকোনো মুহূর্তে দুচোখ ভিজে যেতে পারে তাঁর। তাই টিস্যু পেপার সঙ্গে রেখেছেন।

মাইলফলক ছোঁয়ার এই ম্যাচ খেলতে নেমে সত্যি সত্যিই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন বেয়ারস্টো। সতীর্থ জো রুটের কাছ থেকে ১০০তম টেস্টের ক্যাপ পাওয়ার পর মা জ্যানেটকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছেন। এ সময় বোন রেবেকা, প্রেমিকা মেগান ও পুত্রসন্তান এডওয়ার্ড বেয়ারস্টোর সঙ্গেই ছিলেন।

১০০তম টেস্ট খেলতে নামার দিনে মা, বোন, প্রেমিকা ও সন্তানকে কাছে পেয়েছেন বেয়ারস্টো

বেয়ারস্টোর সংগ্রামী জীবনের কাহিনি অনেকেরই জানা। তাঁর বাবা ডেভিড বেয়ারস্টোও ইংল্যান্ডের হয়ে খেলেছেন। কিন্তু নানা সমস্যায় জর্জরিত ডেভিড একদিন নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন, বেয়ারস্টোর বয়স তখন ৮ বছর।

এরপর মা জ্যানেটই তাঁকে বড় করেছেন। বেয়ারস্টোকে আজকের বেয়ারস্টো বানাতে স্তন ক্যানসারজয়ী এই নারীর ভূমিকাই বেশি। মা জ্যানেটই তাঁর ক্যারিয়ারের চালিকা শক্তি, সেটা সংবাদ সম্মেলনেও বলেছেন বেয়ারস্টো। ১০০তম টেস্ট খেলতে নামার দিনে মাকে কাছে পেয়ে তাই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়াই স্বাভাবিক।

১০০তম টেস্ট খেলতে নামার সময় অশ্বিনকে গার্ড অব অনার দেন সতীর্থরা

বিশেষ দিনে বেয়ারস্টোকে অভিনন্দন জানিয়েছে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। বেয়ারস্টোর বেশ কয়েকটি ছবি কোলাজ করে ইসিবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছে। লিখেছে ‘তার শক্তি। তার বিপত্তি। তার উদ্‌যাপন। তার দৃঢ়তা। তোমরা তাকে থামাতে পারবে না। জোনাথন মার্ক বেয়ারস্টো ১০০ টেস্টের ক্লাবে ঢুকে পড়েছে।’

অশ্বিনকে স্মারক হিসেবে ‘১০০’ লেখা একটি টুপি উপহার দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। কাচের কেবিনেটে করে সেই টুপি নিয়ে আসেন দলের কোচ রাহুল দ্রাবিড়। এরপর দ্রাবিড় নিজেই সেটি অশ্বিনের হাতে তুলে দেন। পরে স্মারক টুপিটি আরও একবার পেয়েছেন অশ্বিন, তাঁর দুই মেয়ে আকহিরা ও আধিয়া দিয়েছে। এ সময় করতালি দিয়ে অশ্বিনকে অভিনন্দন জানান তাঁর স্ত্রী প্রীতি নারায়ণ ও সতীর্থরা। বেয়ারস্টোর মতো অশ্বিন না কাঁদলেও বোঝা যাচ্ছিল, আবেগ সামলাতে তাঁর কষ্ট হচ্ছে।

অশ্বিনকে বিশেষ স্মারক উপহার দেওয়া পর ভারতের কোচ দ্রাবিড় তাঁর উদ্দেশে বলেন, ‘গ্রেট শব্দটা মানুষ খুব সহজেই ব্যবহার করে। কিন্তু গ্রেট হতে গেলে দীর্ঘদিন ধরে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হয়। এটা অনেক পরিশ্রম, অনুশীলন, ত্যাগ, নিবেদন, সময়ের সঙ্গে নিজেকে বদলে ফেলা, প্রতিনিয়ত শেখা এবং দলকে নিজের সেরাটা দেওয়ার মাধ্যমে সম্ভব হয়। অ্যাশ (অশ্বিনের ডাকনাম), তুমি সবকিছুই বিশ্বস্ততার সঙ্গে করেছ।’