ঘটনাটা সিলেট স্ট্রাইকার্সের অনুশীলনের। আজ সকালে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের আউটারে অনুশীলনে বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম। ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমের বিপক্ষে একটি বলে এলবিডব্লুর আবেদন করেন নাজমুল।
পাশেই দাঁড়ানো সিলেটের আরেক ব্যাটসম্যান জাকির হাসান নাজমুলের আবেদনের প্রতিবাদ করেন, ‘গ্লাভসে লেগেছে, আউট হবে কেন?’ উত্তরে মজার ছলে নাজমুল বলেন, ‘এডিআরএস তো, আউট দিয়েও দিতে পারে।’
নাজমুলের মজা করে বলা কথাটাই ঘণ্টাখানেক পর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ও ফরচুন বরিশালের ম্যাচে সত্যি হলো। কুমিল্লার রান তাড়ায় দলটির উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান জাকের আলীকে বরিশালের অফ স্পিনার ইফতেখার আহমেদের বল এলবিডব্লু দেওয়া হয়। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে আসায় বলটি লেগ স্টাম্পের বাইরেই পিচ করার সম্ভাবনা বেশি ছিল। তবু আম্পায়ার মোর্শেদ আলী খান আউট দেন, জাকেরও সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ নেন।
রিপ্লেতেও শেষ পর্যন্ত দেখা গেছে বলটি লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করেছে। কিন্তু টিভি আম্পায়ার তানভীর আহমেদ অনফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই বহাল রাখেন। জাকেরের মুখে তখন শ্লেষাত্মক হাসি, ধারাভাষ্য কক্ষে অবিশ্বাস। আম্পায়ারের সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক আরও বড় হয়েছে পরে কুমিল্লার কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের মন্তব্যে।
সংবাদ সম্মেলনে আম্পায়ারিং ও এডিআরএস নিয়ে একেবারে অসহায়ের মতোই জাতীয় দলের সাবেক এই কোচ বলেন, ‘এটা নিয়ে তো বিতর্ক চলছেই। আমি শুরুতেই বলেছিলাম একটা-দুইটা সিদ্ধান্তে আপনি ম্যাচটা হেরে যাবেন। সিদ্ধান্তগুলো আরেকটু চিন্তাভাবনা করে দেয় তাহলে ভালো। খালি চোখে যেটা আমরা দেখছি নট আউট, সেটা থার্ড আম্পায়ার আউট দিয়ে দিচ্ছে। কী করতে পারি? আমাদের তো কিছু করার নেই। আমরা মাঠে চিল্লাচিল্লি করি, এটাই কি চান? এমনিই সাসপেন্ড করে দেবে। যেহেতু খেলা চলছে। প্রতিবাদ করেও তো লাভ নেই। আমরা লিখিত দেব বা প্রতিবাদ করব, সেটাও তো লাভ নেই। আসলে কিছু করার নেই। হাত-পা বাঁধা আছে, যা হওয়ার তাই হবে আরকি।’
সালাউদ্দিন এর আগেও বলেছিলেন, এমন ডিআরএস থাকার চেয়ে না থাকাই বরং ভালো। আজ সে কথাটা আরও একটা মনে করিয়ে দিলেন তিনি, ‘এডিআরএস থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো আমার মনে হয়। আম্পায়ার যেটা দিয়ে দেবে, সেটা দেওয়াই ভালো। এটা তো একেবারে লেগ স্টাম্পের বাইরে পিচ করেছে, এমন না যে...। আমাদের প্রথম ম্যাচেও একটা সিদ্ধান্ত খারাপ হয়েছে, আজকেও। এমন ডিআরএস থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো।’
এর আগে এডিআরএসে স্বচ্ছতার চেয়ে বেশি সংশয় বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন রংপুর রাইডার্সের অধিনায়ক নুরুল হাসান। তিনিও এমন এডিআরএস থাকার চেয়ে না থাকার পক্ষেই ভোট দিয়েছেন। ডাচ পেসার পন ভ্যান ম্যাকেরেনও বলেছিলেন, এডিআরএস স্বচ্ছতার চেয়ে অস্বচ্ছতাই বাড়াচ্ছে বেশি। বিপিএল যত এগোচ্ছে, এডিআরএস বিতর্কেরই জন্ম দিচ্ছে।