সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কাল একটা ছবি পোস্ট করেছেন ওয়াসিম আকরাম। ছবিটিতে আকরামের সঙ্গে যে ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে, তিনি পরিচিত কেউ নন। অন্তত পাকিস্তানের কিংবদন্তি বাঁহাতি ফাস্ট বোলারের তুলনায় তো বটেই। তবে এই অপরিচিত মানুষটিই আকরামের জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ—তিনি ওয়াসিম আকরামের ‘শিক্ষক’, তাঁর কোচ।
তাঁর নাম সউদ খান। শিক্ষক বলতে আকরামের ক্রিকেটার হয়ে ওঠার পেছনে তাঁর ভূমিকা বিশাল। ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সেরা বাঁহাতি এই ফাস্ট বোলার যখন ক্রিকেট শিখছেন, কলেজের মাঠে সারা দিন ধরে বোলিং করে নিজেকে গড়ছেন, তখন সউদ খান হাত ধরে তাঁকে বোলিং শিখিয়েছিলেন। এই মানুষটিই প্রতিদিন নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে একটি আনকোরা ক্রিকেট বল কিনে নিয়ে আসতেন আকরামের জন্য। যেটি দিয়ে বোলিং অনুশীলন করতেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক।
আকরাম ভুলতে পারেননি সেই দিনগুলোর কথা। ফেসবুকে এই ক্রিকেট কোচের সঙ্গে ছবি দিয়ে বলেছেন, ‘আমার কোচ সউদ খান প্রতিদিন আমার জন্য একটি করে নতুন ক্রিকেট বল কিনে নিয়ে আসতেন নিজের পকেটের পয়সা খরচ করে, যেন আমি তাঁদের সঙ্গে বোলিং করতে পারি। সবকিছুর জন্য ধন্যবাদ কোচ, আমি মনে করি, আমি আপনাকে গর্বিত করতে পেরেছি।’
ক্রিকেট বল খুব সস্তা কিছু নয়। নেট অনুশীলনে বলের ঔজ্জ্বল্যও খুব বেশি সময় থাকে না। একটি বল দিয়ে টানা কয়েক দিন ফাস্ট বোলিং অনুশীলন প্রায় অসম্ভবই। আর একজন উঠতি ক্রিকেটারের পক্ষেও প্রতিদিন একটি করে নতুন বলে অনুশীলন করা খুবই কঠিন বিষয়। আকরাম তাই কীভাবে ভোলেন সউদ খানের মহানুভবতার কথা!
আকরাম একজন ছাত্রের জীবনে শিক্ষকের অবদানের কথাও বলেছেন এই পোস্টে, ‘শিক্ষককে সব সময়ই মাথায় করে রাখা উচিত। আমরা বিষয়টা খুব পাত্তা দিই না, কিন্তু বিশ্বাস করুন, আজ আপনি যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছেন, এর পেছনে আছে শিক্ষকের ভূমিকা।’
সউদ খানের বিনিয়োগ বিফলে যায়নি। ক্রিকেট ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা তারকা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন পাকিস্তানি কিংবদন্তি আকরাম। দেশের হয়ে বিশ্বকাপ জিতেছেন। ১০৪ টেস্টে উইকেট নিয়েছেন ৪১৪টি। ৩৫৬ ওয়ানডেতে নিয়েছেন ৫০২ উইকেট। দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন—শিক্ষককে এতটা গর্বিত বোধ হয় খুব কম ছাত্রই করতে পারেন।