স্লো ওভার রেটের কারণে শাস্তি—এমন খবর বোধ হয় এখন প্রতি সিরিজের পরই শোনা যায়। তা খেলাটা যে সংস্করণেই হোক না কেন! এই তো সর্বশেষ অ্যাশেজেও স্লো ওভার রেটের কারণে জরিমানার পাশাপাশি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট কাটা হয়েছে দুই দলেরই। ৫ টেস্টের সিরিজে সব মিলিয়ে ১৯ পয়েন্ট কাটা গেছে ইংল্যান্ডের। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার কাটা গেছে ১০ পয়েন্ট।
পাঁচ দিনের খেলাতেই যদি এমন হয়, তাহলে ক্রিকেটের ছোট সংস্করণ টি-টোয়েন্টিতে কী হচ্ছে! টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে শাস্তি দিয়েও নির্ধারিত সময়ে খেলা শেষ করা যাচ্ছে না। চলতি ভারত–ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেও এই কারণে জরিমানা গুনতে হয়েছে দুই দলকে।
এবার তাই ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ স্লো ওভার রেটের কারণে নিয়ে আসছে অভিনব এক শাস্তি। এই লিগে স্লো ওভার রেটের কারণে ক্রিকেটারদের দেখানো হবে লাল কার্ড, যে কারণে মাঠ থেকে বের হয়ে যেতে হবে একজন ক্রিকেটারকে।
সাধারণত ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় ফিল্ডিং দলের অধিনায়ক ঘন ঘন বোলারের সঙ্গে পরামর্শ করেন। প্রতি বলেই ফিল্ডিং পরিবর্তন, বোলিং প্রান্তে বোলারের অন্য সতীর্থের সঙ্গে পরামর্শ—সময়ক্ষেপণ হয় নানাভাবে। ব্যাটসম্যানেরাও অনেক ক্ষেত্রে সময় নষ্ট করেন। তবে সিপিএলে সিপিএলে স্লো ওভার রেটের কারণে যে শাস্তি রাখা হয়েছে তাতে বোধ হয় এবার ব্যাটসম্যান ও বোলার দুই পক্ষকেই বাড়তি সতর্ক হতে হবে।
সিপিএলে এবারের আসরে ফিল্ডিং দল যদি ১৮তম ওভার নির্ধারিত সময়ে শুরু করতে না পারে, তাহলে একজন অতিরিক্ত ফিল্ডারকে ৩০ গজের বৃত্তের মধ্যে রাখতে হবে। অর্থাৎ তখন বৃত্তে থাকবে ৫ জন ফিল্ডার। ১৯তম ওভার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শুরু করতে না পারলে ফিল্ডার ৩০ গজের বৃত্তে ঢোকাতে হবে আরও একজন। অর্থাৎ তখন বৃত্তের মধ্যে থাকবে ৬ জন।
আর ২০ তম ওভার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শুরু না করলে শাস্তি আরও বড়। তখন একজন ফিল্ডারকে যেতে হবে মাঠের বাইরে। সেই ফিল্ডার কে হবে সেটা ঠিক করবেন অধিনায়ক। তখনো ৬ জন ফিল্ডারকে থাকতে হবে বৃত্তের মধ্যে। ব্যাটসম্যানরাও একই ভুল করলে আছে শাস্তি। আম্পায়ারদের প্রথম ও ফাইনাল ওয়ার্নিংয়ের পর সময় নষ্ট করলে প্রতি ঘটনায় কাটা হবে ৫ রান করে।
সিপিএলের টুর্নামেন্ট অপারেশন পরিচালক মাইকেল হল আশা করছেন মাঠে এই শাস্তির প্রয়োগ করতে হবে না, ‘ আমরা হতাশ, আমাদের টি-টোয়েন্টি খেলাগুলোও প্রতি বছর দীর্ঘ হয়ে যাচ্ছে। এই ট্রেন্ড বন্ধ করার জন্য, আমরা যা করার তা করতে চাই। খেলাটা চলমান রাখার দায়িত্ব ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সবার। আমরা টুর্নামেন্ট শুরুর আগে ফ্র্যাঞ্চাইজি ও ম্যাচ অফিশিয়াল সবাইকে তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে অবহিত করেছি। আশা করছি খেলায় শাস্তির ব্যবহার করতে হবে না।’
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সাধারণত প্রতি ইনিংস শেষ করতে হয় ৮৫ মিনিটের মধ্যে। ইনিংসের ১৭ ওভার শেষ করার নির্ধারিত সময় ৭২ মিনিট ১৫ সেকেন্ড, ১৮তম ওভার ৭৬ মিনিট ৩০ সেকেন্ড। ১৯ ওভার ৮০ মিনিট ৪৫ সেকেন্ড শেষ করতে হবে, সব মিলিয়ে শেষ করতে হয় ৮৫ মিনিটের মধ্যে। নির্ধারিত সময়ে প্রতি ওভার শেষ হচ্ছে কি না সেটা এবার ভালো করে তদারকি করবে ম্যাচ অফিশিয়ালরা।
এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, ‘ওভার রেট থার্ড আম্পায়ার পর্যবেক্ষণ করবে এবং প্রতি ওভার শেষে ফিল্ড আম্পায়ারের মাধ্যমে অধিনায়কের সঙ্গে কথা বলবে। খেলোয়াড়দের চোট, ডি আরএস আর যখন প্রয়োজনে ব্যাটসম্যানদের কিছুটা সময় দরকার হয় তখন নিয়মটা একটু শিথিল হবে।’
চলতি বছরের সিপিএল শুরু হতে যাচ্ছে ১৭ আগস্ট। মেয়েদের টুর্নামেন্ট শুরু হবে ৩১ আগস্ট।