প্রতিপক্ষ বদলেছে, কিন্তু বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং বদলায়নি। পাকিস্তানের বিপক্ষে ইডেন গার্ডেনে আজও টপ অর্ডার ব্যর্থ। মাঝের ওভারে মাহমুদউল্লাহর অর্ধশত সে বিপদ থেকে বাংলাদেশকে কিছুটা হলেও উদ্ধার করেছিল। এরপর ডেথ ওভারে আরও একটি ধস। ৪৫.১ ওভারে ২০৪ রানেই থেমে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। পাকিস্তানের হয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি ও মোহাম্মদ ওয়াসিম।
ইনিংসের শুরুতেই বিশ্বকাপের আগের ম্যাচগুলোর পুনরাবৃত্তি দেখা গেল। প্রথম ওভারেই কোনো রান না করে আউট হন ওপেনার তানজিদ হাসান। শাহিন শাহ আফ্রিদির কয়েকটি আউটসুইংয়ের পর একটি ভেতরে আসা বলে এলবিডব্লু, রিভিউ নিয়েও রক্ষা পাননি তানজিদ। শাহিনের পরের ওভারে প্রায় একই লাইন থেকে ভেতরে আসা বলে আউট হয়েছেন তিনে নামা নাজমুল হোসেনও। নাজমুল অবশ্য বলটিকে লেগের দিকে ফ্লিক করতে পেরেছিলেন। কিন্তু শর্ট মিড উইকেটে উসামা মির ক্যাচ নিলে নাজমুলের ইনিংস থামে মাত্র ৪ রানে।
নিজের প্রথম ওভারে উইকেট পেয়েছেন পাকিস্তানের আরেক পেসার হারিস রউফও। পাওয়ার প্লেতে সচরাচর রউফকে বোলিং করতে দেখা যায় না। কিন্তু আজ ষষ্ঠ ওভারে বোলিংয়ে এসে অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমকে কট বিহাইন্ডের ফাঁদে ফেলেন এই ফাস্ট বোলার। ২৩ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারিয়ে আরও একবার ব্যাটিং ধসের আভাস দিচ্ছিল বাংলাদেশ। সে ধস থামাতেই হয়তো মাহমুদউল্লাহকে আজ পাঁচে নামানো হয়।
ছন্দে থাকা এই ব্যাটসম্যান বিশ্বকাপ জুড়ে যা করছিলেন, আজও তা–ই করলেন।
ওপেনার লিটনকে নিয়ে ৭৯ রানের জুটি গড়েন তিনি। দুজনের জুটিটা দীর্ঘ হতে পারত, কিন্তু লিটনের ভুলে তা হয়নি। ২১তম ওভারে ইফতেখার আহমেদের নিরীহ একটি বল লেগের দিকে খেলতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ তোলেন লিটন। ভালো খেলতে খেলতে এমন একটি শট খেলায় লিটনকেও হতাশ মনে হচ্ছিল। আউট হওয়ার আগে ৬৪ বলে করেছেন ৪৫ রান। ৭০.৩১ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে লিটন চার মেরেছেন ৬টি।
লিটনের আউটের পর বাংলাদেশ দলের রানের গতিও কমে আসে। ছয়ে ব্যাট করতে নামা সাকিব স্বাচ্ছন্দ্যে রান করতে পারছিলেন না। তাঁকে ইনিংসের প্রথম বাউন্ডারির জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ২১তম বল পর্যন্ত। যার প্রভাব পড়ছিল মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিংয়ে। দুজনই টিকে থাকার চেষ্টা করছিলেন। তাতে ২১ থেকে ৩০তম ওভারে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে রান আসে মাত্র ৩২।
সেই চাপেই কি না, ৩১তম ওভারের চতুর্থ বলে শাহিনের বলে বোল্ড হয়ে যান মাহমুদউল্লাহ। আউট হওয়ার আগে ৭০ বলে ৫৬ রান করেন তিনি, ৬টি চার ও ১টি ছক্কা ছিল তাতে। উসামা মিরের পরের ওভারে এক ছক্কায় ৭ রান করে তাওহিদ হৃদয়ও ফিরে যান ড্রেসিংরুমে।
বেশি দূর এগোয়নি সাকিবের ইনিংসও। মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে ৪৫ রানের জুটি গড়ে রউফের শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে শর্ট মিড উইকেটে ক্যাচ। এ নিয়ে এই বিশ্বকাপে তিনবার শর্ট বলে আউট হলেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক। ৬৪ বলে ৪টি বাউন্ডারিতে ৪৩ রানে শেষ তাঁর ইনিংস। সাকিব আউট হওয়ার পর বাংলাদেশ দলের ইনিংসও আর বেশিদূর এগোতে পারেনি।
রিভার্স সুইং কাজে লাগিয়ে একই ওভারে মিরাজ (২৫) ও তাসকিন আহমেদকে (৬) ইয়র্কারে বোল্ড করেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। পরের ওভারে বোল্ড করেন মোস্তাফিজুর রহমানকেও (৩)। তাতে ৪৫.১ ওভারেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস।