পাকিস্তান ক্রিকেটে তাঁকে ডাকা হয় ‘প্রফেসর’ নামে। সতীর্থসহ অনেকের কাছে তিনি প্রফেসর হলেও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পর্বই শেষ হয়নি মোহাম্মদ হাফিজের।
পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক এবার সেই অসমাপ্ত কাজটা শেষ করার পথে হাঁটছেন। ভর্তি হয়েছেন করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
পাকিস্তানের টেলিভিশন জিওসুপারের খবরে বলা হয়, পেশাদার ক্রিকেটের ব্যস্ততায় পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি হাফিজ। গতকাল শুক্রবার করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ ফিজিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড স্পোর্টস সায়েন্সের (এইচপিইএসএস) ব্যাচেলর প্রোগ্রামে ভর্তি হয়েছেন তিনি।
ভর্তি হওয়ার পর করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডক্টর খালিদ মাহমুদ ইরাকি ও এইচপিইএসএসের চেয়ারম্যান ডক্টর বাসিত আনসারির সঙ্গে দেখা করেন হাফিজ।
পরে করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পাকিস্তানের সরকারি খাতের সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ হতে পেরে উচ্ছ্বসিত হাফিজ। তিনি আশা করেন এইচপিইএসএস তাঁর উচ্চশিক্ষা গ্রহণের স্বপ্নপূরণে সহায়তা করবে। করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের আশা, সাবেক পাকিস্তান অধিনায়কের ক্রিকেটীয় অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবেন।’
হাফিজের সঙ্গে কথপোকথনের একপর্যায়ে উপাচার্য বলেছেন, ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত ও নিউজিল্যান্ডকে হারানোর পর পাকিস্তান দলের খেলোয়াড়দের জন্য পূর্ণাঙ্গ শিক্ষাবৃত্তি ঘোষণা করেছিল করাচি বিশ্ববিদ্যালয়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যে সব ক্রীড়াবিদ পাকিস্তানকে গর্বিত করেছেন, তাদের জন্য সব প্রাতিষ্ঠানিক ব্যয়সহ সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়।
১৯৮০ সালে পাঞ্জাবে জন্ম নেওয়া হাফিজ পাকিস্তান দলের হয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন ২০০৩ সালে। সব মিলিয়ে পাকিস্তানের হয়ে ৫৫ টেস্ট, ২১৮ ওয়ানডে এবং ১১৯ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। ২০১২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন হাফিজ।
হাফিজকে কেন প্রফেসর ডাকা হয়
পাকিস্তান দলের ক্রিকেটাররা মোহাম্মদ হাফিজকে ‘প্রফেসর’ নামে ডাকতেন। এই নাম ব্যবহার করতেন ধারাভাষ্যকাররাও। এমনকি ২০২১ সালে লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে গল গ্লাডিয়েটরসের হয়ে খেলার সময় জার্সিতে তাঁর নাম ছিল ‘প্রফেসর’। কেন এই নামে ডাকা হতো, এক সাক্ষাৎকারে তার ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন হাফিজ নিজেই।
বলেছিলেন, তাঁর জানার ইচ্ছা এবং খেলা বুঝতে পারার সামর্থ্যের জন্য প্রফেসর নামে ডাকা হয়, ‘আমার মনে হয় আমার জিজ্ঞাসু মনোভাব ও খেলা নিয়ে জ্ঞানের জন্য আমাকে ওরা প্রফেসর বলে ডাকে। ইংল্যান্ডে খেলার সময় এক এজেন্ট আমাকে এই নামে ডাকা শুরু করে। কারণ, ওকে আমি প্রচুর প্রশ্ন করছিলাম। তার পরে ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় রমিজ রাজাও নামটি উচ্চারণ করেন। এভাবে সবাই আমাকে প্রফেসর বলে ডাকা শুরু করে।’