নাজমুল হোসেনের ব্যাপারটা একটু যেন উল্টো। স্বাভাবিকভাবে ওপেনার বা টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের টেস্ট বা ওয়ানডের গড়টা টি–টোয়েন্টির চেয়ে বেশিই থাকার কথা। কিন্তু নাজমুলের টি–টোয়েন্টি গড় টেস্ট ও ওয়ানডের চেয়ে বেশি। টি–টোয়েন্টিতে তাঁর গড় ২৮.৮৪ হলেও ২২ টেস্টের ক্যারিয়ারে তা ২৪.৭০। আজকের আগে পর্যন্ত ২২ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের গড় ছিল ২২.০৪।
আজকের আগে পর্যন্ত টি–টোয়েন্টিতে তাঁর সর্বোচ্চ রানের স্কোর ৭১, ওয়ানডেতে ৭৩। টেস্টে দুটি সেঞ্চুরি থাকলেও ওয়ানডে তিন অংকের কোনো ইনিংস ছিল না নাজমুলের। আজ চেমসফোর্ডে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সেই অপূর্ণতা ঘোচালেন বাংলাদেশ দলের এই ব্যাটসম্যান। সেটাও আবার দলের অত্যন্ত প্রয়োজনের সময়ে।
বৃষ্টির কারণে ৪৫ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে টসে হেরে ৬ উইকেটে ৩১৯ রান করে আইরিশরা। রান তাড়া করতে নেমে ৪০ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। এমন সময়ে জ্বলে ওঠেন নাজমুল। দুর্দান্ত সব শট খেলে দলকে নিয়ে যেতে থাকেন লক্ষ্যের দিকে।
শুধু তাই নয়, ক্যারিয়ারের শুরু থেকে কম স্ট্রাইক রেটের যে বদনাম তাঁর পিঠে লেগে গেছে, সেটিকেও যেন মুছে ফেলার পণ করে নেমেছিলেন নাজমুল। ওয়ানডেতে তাঁর ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট ৬৮.৪৯। আর আজ ওয়ানডেতে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি পাওয়ার ইনিংসে এখন পর্যন্ত ব্যাট করেছেন প্রায় ১২১ গড়ে।
এই প্রতিবেদন লেখার সময় ৮৫ বলে ১০৩ রান নিয়ে ব্যাটিং করছিলেন নাজমুল। মেরেছেন ১১টি চার ও ২টি ছয়। ৩৩.১ ওভারে বাংলাদেশের রান তখন ৩ উইকেটে ২২৯। ১৩১ রানের চতুর্থ উইকেট জুটিতে তাঁকে দারুন সঙ্গ দিয়েছেন তৌহিদ হৃদয়। ৫৮ বলে ৬৮ রান করে ফিরেছেন তিনি।
এখান থেকে বাংলাদেশ ম্যাচটা কতদূর টেনে নিতে পারে তার অনেকটাই নির্ভর করছিল নাজমুলের ওপর। যেভাবে শুন্যে লাফিয়ে নিজের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরিটা উদযাপন করেছেন, নাজমুল নিশ্চয়ই চাইবেন ম্যাচ শেষে সেই উদযাপনটাকে বহুগুন বাড়িয়ে নিতে।