অবশেষে জয়ের দেখা পেল পাকিস্তান। বিশ্বকাপের পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানের টেস্ট সিরিজ হারার পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ৪ ম্যাচেই হেরেছিল তারা।
ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ম্যাচসহ সব মিলিয়ে টানা ৮ ম্যাচে হারের পর আজ ক্রাইস্টচার্চে সিরিজে পঞ্চম টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডকে ৪২ রানে হারিয়ে জয়খরা কাটিয়েছে পাকিস্তান। সেটাও রেকর্ড গড়ে। টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে সবচেয়ে কম রান করে জয় পাওয়া রেকর্ড এটি।
টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে তুলেছে ১৩৪। ছোট এই সংগ্রহ নিয়ে বোলিংয়ে নেমে নিউজিল্যান্ডকে ৯২ রানে অলআউট করেছে শাহিন আফ্রিদির দল। এর আগে ২০২১ সালে স্কোরবোর্ডে সর্বনিম্ন ১৫৬ রান তুলে জয় পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া, যদিও পাকিস্তানের এ জয়কে সান্ত্বনাই বলা ভালো। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তারা সিরিজ হেরেছে ৪-১ ব্যবধানে।
১৩৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা নিউজিল্যান্ড এদিন শুরু থেকেই নড়বড়ে ছিল। প্রথম ৫ ওভারের মধ্যেই হারায় দুই ওপেনার ফিন অ্যালেন ও রাচিন রবীন্দ্রকে। দুজনের কেউই পাওয়ারপ্লে কাজে লাগাতে পারেননি। প্রথম ৫ ওভারে রান আসে মাত্র ৩০। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা অ্যালেন ১৯ বলে আজ করতে পেরেছেন ২২ রান। এরপরও ১০ ওভার পর্যন্ত ম্যাচে ছিল নিউজিল্যান্ড। শেষ ১০ ওভারে তাদের প্রয়োজন ছিল ৮১ রান। হাতে ৭ উইকেট। তবে ১০ থেকে ১৫ ওভারের মধ্যে নিউজিল্যান্ড উইকেট হারায় ৫টি। ইফতিখার আহমেদ নেন ৩ উইকেট।
এরপর গ্লেন ফিলিপস নিউজিল্যান্ডকে আশা দেখালেও ম্যাচের ১৮তম ওভারের প্রথম দুই বলে ফিলিপস ও লকি ফার্গুসনকে আউট করে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন অধিনায়ক আফ্রিদি। ১৩৫ রানের জবাবে নিউজিল্যান্ড গুটিয়ে যায় মাত্র ৯২ রানে। অধিনায়ক হিসেবে এটি আফ্রিদির প্রথম জয়। টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয়বারের মতো ঘরের মাঠে ১০০ রানের নিচে গুটিয়ে গেছে নিউজিল্যান্ড। অন্য ঘটনাটিও এই পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০১০ সালে।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটিং করা পাকিস্তান ওপেনিংয়ে সাইম আইয়ুবকে সরিয়ে এদিন খেলায় হাসিবুল্লাহ খানকে। অভিষেক ম্যাচ জ্বলে উঠতে পারেননি তিনি। টিম সাউদির বলে ফিরেছেন শূন্য রানেই। এরপর বাবর আজমকে সঙ্গে নিয়ে ৫৩ রানের জুটি গড়েন মোহাম্মদ রিজওয়ান, যদিও সেটা টি-টোয়েন্টি মেজাজে খেলে নয়। এই জুটি ৫৩ রান তুলতে বল খরচ করেছে ৫৬টি। দুবার ‘জীবন’ পেয়েও বাবর ১৩ রান করে আউট হন ২৪ বল খেলে।
বাবর আউট হওয়ার পর ফখর জামানকে নিয়ে ১৯ বলে ৩৫ রানের জুটি গড়েন রিজওয়ান। এই ৩৫ রানের জুটিতে ১৬ বলে ৩৩ রানই আসে ফখরের ব্যাট থেকে। দলীয় ৮৮ রানে ফখর আউট হওয়ার পর ৯১ রানে ফেরেন মোহাম্মদ নওয়াজ। ৩৮ বলে ৩৮ রান করা রিজওয়ানও দলীয় ৯১ রানেই পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন। সেখান থেকে পাকিস্তানের রান ১৩৪-এ গেছে শাহিবজাদা ফারহানের ১৪ বলে ১৯ ও আব্বাস আফ্রিদির ৬ বলে ১৪ রানে। সাউদি, ম্যাট হেনরি, লকি ফার্গুসন ও ইশ সোধি প্রত্যেকে ২টি উইকেট নিয়েছেন।
বোলারদের ম্যাচে ২৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন ইফতিখার। ৫ ম্যাচে ৫৫ গড়ে ২৭৫ রান করে সিরিজসেরা হয়েছেন নিউজিল্যান্ডের ওপেনার ফিন অ্যালেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৩৪/৮ (হাসিবুল্লাহ ০, রিজওয়ান ৩৮, বাবর ১৩, ফখর ৩৩, নওয়াজ ১, ইফতিখার ৫, সাহিবজাদা ১৯, শাহিন শাহ আফ্রিদি ১, আব্বাস আফ্রিদি ১৪*, উসামা ১*; সাউদি ২/১৯, হেনরি ২/৩০, ফার্গুসন ২/২৪, স্যান্টনার ০/৩০, সোধি ২/২২)।
নিউজিল্যান্ড: ১৭.২ ওভারে ৯২ (অ্যালেন ২২, রবীন্দ্র ১, সাইফার্ট ১৯, ইয়াং ১২, চাপম্যান ১, ফিলিপস ২৬, স্যান্টনার ৪, হেনরি ১, সোধি ১, সাউদি ৪*, ফার্গুসন ০; শাহিন শাহ আফ্রিদি ২/২০, নওয়াজ ২/১৮ জামান ১/৪, উসামা ১/২১, আব্বাস আফ্রিদি ০/৪, ইফতিখার ৩/২৪)।
ফল: পাকিস্তান ৪২ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা: ইফতিখার আহমেদ
সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে নিউজিল্যান্ড ৪-১ ব্যবধানে জয়ী।
সিরিজসেরা: ফিন অ্যালেন