বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেমিফাইনাল খেলার সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেছে আরও আগে। কিন্তু এরপরও ম্যাচগুলো শুধুই নিয়মরক্ষার হয়ে যায়নি। বিশ্বকাপ দিয়েই যে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির টিকিট নিশ্চিত করতে হবে। আর সেটি করতে হলে থাকতে হবে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের পয়েন্ট তালিকায় আটের মধ্যে। যেহেতু স্বাগতিক পাকিস্তানসহ ছয়টি দল এরই মধ্যে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ আটে থেকে প্রথম পর্ব শেষ করা নিশ্চিত করে ফেলেছে, তাই এখন লড়াই শুধু ৭ ও ৮ নম্বরের জন্য।
ওই দুই স্থানের জন্য লড়াইয়ে আছে চারটি দল—শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস, বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ড। আর সে ধারায় আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচটি ছিল একরকম বাঁচা–মরার। আর বহুল আলোচিত সে ম্যাচটিতে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছে ৩ উইকেটে। এই জয়ের পর বাংলাদেশ এখন আছে ৭ নম্বরে। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বাংলাদেশ আশা বাঁচিয়ে রাখলেও এখনো কোনো কিছুই নিশ্চিত নয়। বাংলাদেশ পরের ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। সেই ম্যাচের ফলের ওপরও নির্ভর করবে অনেক কিছু।
তবে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হওয়ার আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাওয়া জয়টি বাংলাদেশকে আত্মবিশ্বাস দেবে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আজ দিল্লিতে ম্যাচ–পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি নিয়ে আশার কথায় শুনিয়েছেন সাকিব।
এই জয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলা নিয়ে বাংলাদেশকে আশাবাদী করেছে কি না, জানতে চাইলে সাকিব বলেছেন, ‘আমার মনে হয় আজকের ম্যাচটা আমাদের একটু হলেও আত্মবিশ্বাস দেবে। ড্রেসিংরুমটা একটু হলেও শান্ত হবে। আরেকটু ভালো খেলতে সাহায্য করবে। তবে অস্ট্রেলিয়া অবশ্যই অনেক ভালো দল। শিরোপাপ্রত্যাশী। আমাদের আজকের ম্যাচটা ভালো ছিল। তবে এটা ধরে রাখতে পারলে আমরা ভালো একটা ম্যাচ খেলতেও পারি। আমাদের বিশ্বাস আছে, এই জয়টা সাহায্য করবে সে জন্য। আরেকটি ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেটা যদি জিতি তাহলে মোটামুটি হয়তো শিউর থাকব আমরা কোয়ালিফাই করব। তাই আমাদের জন্য বাঁচা-মরা পরিস্থিতি। আমরা চেষ্টা করব সবকিছু দিয়ে ম্যাচটা জেতার।’
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে চোখ রেখে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শুধু জয়ই নয়, রানরেট বাড়ানোর তাড়নাও ছিল বলে মন্তব্য করেছেন সাকিব, ‘১৭-১৮ ওভারের দিকে আমরা বলেছিলাম আমরা যদি ৩০ ওভার পর্যন্ত ব্যাট করতে পারি আমরা তখন ম্যাচকে শেষের কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারব। আর আমাদের একজন যদি উইকেটে থাকতে পারে তবে আমরা ম্যাচ দ্রুতই শেষ করতে পারব। কিন্তু আমরা দ্রুত কিছু উইকেট হারিয়েছি। আমি ও শান্তও আউট হয়ে গেছি। আমরা তবু চেষ্টা করছিলাম ৪১.২ ওভারের মধ্যে ম্যাচ শেষ করার, যা আমাদের কয়েকটি দলের চেয়ে এগিয়ে রাখবে। এর জন্য আমাদের কয়েকটি উইকেট হারাতে হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত যেভাবে খেলেছি আমরা খুশি।’
আজকের জয়ের পর অস্ট্রেলিয়াকে বাংলাদেশ হারাতে পারে, এই বিশ্বাসটা আরও অটুট হলো কি না? সাকিবের উত্তর, ‘আমি যেটা বললাম আত্মবিশ্বাস তো দেবেই। ম্যাচ জেতা ছাড়া অন্য কিছু ভাবার সুযোগ নেই আসলে। সো আমাদের জিততেই হবে এবং সেটার জন্য সবকিছু করতে প্রস্তুত থাকব। অনেক সময় হয় যে হারতে থাকলে মনের ভেতর থেকে জিদটা আসে না, আত্মবিশ্বাসটা আসে না। এই ম্যাচটা হয়তো আমাদের আত্মবিশ্বাস ও জিদ দুটোই দেবে। আমি বিশ্বাস করি আমাদের দল ভিন্ন মনোভাব নিয়েই খেলবে পরের ম্যাচে। ভালো খেলার এবং ম্যাচ জেতার (চেষ্টা করবে)।’