মুশফিকুর রহিমের পর এবার মার্শাল আইয়ুব! প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড আউট হওয়া বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানের সংখ্যা এখন ২।
গত ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অহেতুক হাত দিয়ে বল সরাতে গিয়ে অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড আউট হয়েছিলেন মুশফিক। ইংলিশ কিংবদন্তি লেন হাটনের পর টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড আউট হয়েছিলেন মুশফিক। তবে এমসিসি আইন না পাল্টালে মুশফিক হ্যান্ডলড দ্য বল আউটই হতেন। ২০১৭ সালে এমসিসি হ্যান্ডলড দ্য বল আউটকে অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড আউটের অন্তর্ভুক্ত করে।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটসম্যানের অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড আউট হওয়ার একমাত্র উদাহরণ হয়ে ছিল সেটি। সাড়ে ১০ মাস পর সংখ্যাটা ২ হয়ে গেল আজ। জাতীয় ক্রিকেট লিগে এমন দুর্ভাগ্যের সঙ্গে পরিচয় হয়েছে মার্শাল আইয়ুবের। সিলেট একাডেমি গ্রাউন্ডে বরিশালের বিপক্ষে ঢাকা মহানগরের প্রথম ইনিংসে অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড আউট হয়েছেন মার্শাল। মুশফিকের মতো হ্যান্ডলড দ্য বল করে নয় ‘আসল’ অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড আউটই হয়েছেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান।
মহানগরের ইনিংসের ১১৬তম ওভারের ঘটনা। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিজের ২৫তম সেঞ্চুরি পেয়ে যাওয়া মার্শাল এগোচ্ছিলেন আরও বড় কিছু করার দিকেই। পেসার কামরুল ইসলামের করা ওভারের দ্বিতীয় বলটাকে কাভারের দিকে ঠেলেই ১ রান নিতে ছোটেন মার্শাল। ফিল্ডার বল ধরে ছুড়ে দেন নন–স্ট্রাইকিং প্রান্তে। সেটি গিয়ে লাগে ধাবমান মার্শালের গায়ে। বোলার কামরুল ও ফিল্ডার দুজনই আম্পায়ারের কাছে অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ডের আবেদন করেন। মার্শাল ইচ্ছা করেই রানআউট হওয়া থেকে বাঁচতে এমন করেছেন—এমনটা মনে করে আম্পায়ার দাবি মেনে আউট দিয়ে দেন। ‘ইতিহাস গড়ে’ মার্শাল যখন ফিরলেন, তখন তাঁর রান ১২৭।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের ২০০ বছরের ইতিহাসে অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড আউটের ঘটনা মাত্র ৩৯টি।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড আউটে মার্শাল বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হলেও লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে সংখ্যাটা চার। ২০০১-০২ ও ২০০২-০৩ মৌসুমে জাতীয় লিগের ওয়ানডে ফরম্যাটে মাহবুব আলম ও নুরুজ্জামান, ২০১৯-২০ মৌসুমে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে মোহাম্মদ নাঈম ও ২০২৩-২৪ মৌসুমের ডিপিএলে কাজী অনীক এভাবে আউট হয়েছেন।
স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে ইয়াসিন আরাফাত ও নুরুল হাসান অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ড আউট হয়েছেন। দুটি ঘটনাই ২০২১ সালে ডিপিএল টি-টোয়েন্টির।
মার্শালের অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ডের দিনে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছেন তাঁর সতীর্থ আইচ মোল্লা। ২৫০ বলে ১৫ চার ও ১ ছক্কায় ১২২ রান করেছেন আইচ। মার্শাল ১২৭ রান করেছেন ১৯৯ বলে, আইচের মতোই ১৫টি চার ও ১টি ছক্কা তাঁর ইনিংসেও। তৃতীয় উইকেটে দুজন যোগ করেন ১৭৪ রান। মার্শালের দল ৫ উইকেটে ৪০৮ রান তোলার পর ইনিংস ঘোষণা করে। ব্যাট করতে নেমে বরিশাল বিনা উইকেটে ২২ রান তুলে শেষে করেছে দিন।
পাশের সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে ২৩২ রানের লিড নিয়েছে রাজশাহী। ৪ উইকেটে ৩৮৫ রান নিয়ে দিন শুরু করা রাজশাহী আর মাত্র ৪১ রান যোগ করেই অলআউট ৪২৬ রানে। খুলনার আল আমিন নিয়েছেন ৫ উইকেট। ৯১ রান নিয়ে দিন শুরু করা ফরহাদ ফিরেছেন ৯৩ রানে। এরপর খুলনা অলআউট ১৯৪ রানে। রাজশাহীর অফ স্পিনার এসএম মেহরব ৩৫ রানে নিয়েছেন ৬ উইকেট।
খুলনায় দ্বিতীয় দিনে শুরু ম্যাচে সিলেট প্রথম ইনিংসে অলআউট ১৪৬ রানে। ঢাকা বিভাগ করেছে ১ উইকেটে ৩৮ রান। বগুড়ায় রংপুর-চট্টগ্রাম ম্যাচ দ্বিতীয় দিনে মাঠে গড়ালেও খেলা হয়েছে মাত্র ২১ ওভার। রংপুর ১ উইকেটে করেছে ৬৯ রান।