খবরটা শুনে চমকে উঠেছিলেন অনেকেই। দুই বছর ধরে যাঁরা দলের দায়িত্বে ছিলেন, বিশ্বকাপ শুরুর এক মাস আগে তাঁরা একসঙ্গে পদত্যাগ করলেন।
২০২১ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে পাকিস্তান ক্রিকেটে বিস্ময় জাগানো সেই পদত্যাগ দুটি ছিল প্রধান কোচ মিসবাহ–উল হক ও বোলিং কোচ ওয়াকার ইউনিসের। পরবর্তী সময়ে মিসবাহ বলেছিলেন, পিসিবি চেয়ারম্যান রমিজ রাজা চাননি তাঁরা দায়িত্বে থাকেন। এ কারণে বিশ্বকাপের আগে নিজেরাই সরে গিয়েছিলেন।
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের পালাবদলে রমিজও এখন বোর্ডে নেই। দুই সপ্তাহ আগে তাঁকে সরিয়ে ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নাজাম শেঠিকে।
চেয়ারম্যানের পদ হারানোর পর থেকে শেঠির সমালোচনায় মুখর রমিজ। তাঁকে কার্যালয় থেকে নিজের জিনিসপত্র আনতে দেওয়া হয়নি, অসম্মানজনকভাবে সরানো হয়েছে বলে ক্ষোভও জানিয়েছেন। প্রায় প্রতিদিনই দায়িত্ব হারানো ও নিজের সময়ের নানা কার্যক্রম নিয়ে কথা বলছেন টুইটার, ইউটিউব ও টেলিভিশনের টক শোতে।
এমনই এক টিভি আলোচনায় মিসবাহ–ওয়াকারবিষয়ক প্রশ্নের মুখে পড়েছেন রমিজ। সামা টিভির ওই অনুষ্ঠানে রমিজকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়, তিনি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় মেয়াদ থাকার পরও টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগমুহূর্তে দুই কোচকে সরে যেতে হয়েছিল।
জবাবে সেই ঘটনার ব্যাখ্যা দেন রমিজ, ‘ওরা পুরো দুই বছরের বেতন পেয়েছিল। পূর্ণ সম্মানই দেওয়া হয়েছিল। আর চেয়ারম্যান হিসেবে ওদের সরিয়ে দেওয়ার অধিকার আমার ছিল। এখনো তো ওরা (বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটি) সাকলায়েনকে সরিয়ে মিকি আর্থারকে নিয়ে আসার কথা বলছে। আমি কোচদের সঙ্গে এমনভাবে চুক্তি করেছি, যাতে কাউকে তিন বছরের দায়িত্ব দিয়ে বোর্ড বিদায় না দেয়।’
মিসবাহ ও ওয়াকার পাকিস্তান দলের কোচের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে। আর রমিজ দায়িত্ব নেন ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে। সাবেক এই ক্রিকেটার জানান, মিসবাহ ও ওয়াকারের সঙ্গে কথা বলেই তাঁদের সরে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, ‘তখন বাৎসরিক চুক্তি ছিল। ওরা এমনিতেই জানুয়ারি–ফেব্রুয়ারির দিকে চলে যেত। আমরা নতুন ম্যানেজমেন্ট আনলাম। কাজটা সহজ ছিল না। আমি ওয়াকারের সঙ্গে খেলেছি। ওর সঙ্গে কথা বলে আমার ভাবনা জানিয়েছিলাম। সিইও মিসবাহর সঙ্গে কথা বলেছিলেন।’
তবে বিশ্বকাপ শুরুর আগে প্রধান কোচ ও বোলিং কোচ বদলে ফেলাটা দৃষ্টিকটু ছিল বলে স্বীকার করেছেন রমিজ, ‘এটা ঠিক যে বিশ্বকাপ শুরুর সপ্তাহ–দশ দিন আগে কোচ বদলে ফেলাটা ভালো দেখায় না। তবে আমার একটা ভাবনা ছিল। যে কারণে ওদের নিয়ে শুধু নির্দিষ্ট একটা পর্যায় পর্যন্ত যাওয়া যেত। আমি যখন ধারাভাষ্য দিতাম, তখনই বুঝেছিলাম একটা পরিবর্তন দরকার।’