২০০৭ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানোর পর আয়ারল্যান্ডের খেলোয়াড়দের উল্লাস
২০০৭ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানোর পর আয়ারল্যান্ডের খেলোয়াড়দের উল্লাস

টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

আইরিশ রূপকথার ঝুলিতে কি যোগ হবে ভারতের নাম

‘আইরিশ রূপকথা’—ক্রিকেট–বিশ্বের এই শব্দযুগলের সঙ্গে ভালোই পরিচয় আছে। এক-দুবার তো নয়, অনেকবারই তো আইরিশরা বিশ্বকাপে  ‘বড় শিকার’ ধরে হইচই ফেলেছে। ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ—সবারই আয়ারল্যান্ডের কাছে বিশ্ব আসরে হারের স্বাদ আছে। আজ সেই আইরিশদের সামনে শিকার তালিকায় আরেকটি নাম যোগ করার সুযোগ। আর সেটি করতে আইরিশদের আজ ক্রিকেটের নতুন মৃগয়া নিউইয়র্কে এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের অন্যতম ফেবারিট ভারতকে হারাতে হবে।

নাসাউ কাউন্টি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় আজ রাতে ভারতের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে ইতিহাস থেকেই অনুপ্রেরণা নিতে হবে আয়ারল্যান্ডকে। আরেকটি ইতিহাস অবশ্য ভুলে গিয়েই আজ মাঠে নামতে হবে দলটিকে। ভারতের বিপক্ষে ১০টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে যে ১০টিতেই হেরেছে আয়ারল্যান্ড।

ভারতের বিপক্ষে দুর্দশার ‘দশে দশ’ ভুলে আইরিশরা টাইম মেশিনে করে  ঘুরে আসতে পারে বড় শিকার ধরার সেই ম্যাচগুলো থেকে। আয়ারল্যান্ড প্রথম বিশ্বকাপ খেলে ২০০৭ সালে। ওয়ানডে বিশ্বকাপ অভিষেকে প্রথম ম্যাচে সে সময়ে আইসিসির সহযোগী দেশটি টাই করে টেস্ট খেলুড়ে দল জিম্বাবুয়ের সঙ্গে। বিদ্রোহ-বিসংবাদে হীনবল হয়ে পড়ে সে সময়ে অবশ্য টেস্ট ক্রিকেট থেকে স্বেচ্ছানির্বাসন নিয়েছিল জিম্বাবুয়ে।

ইউনিস খানকে আউটকে বয়েড র‌্যাঙ্কিনের উল্লাস। ২০০৭ বিশ্বকাপে

তাই ওই টাইকে বড় কিছু মনে না হতেই পারে। তবে ঠিক পরের ম্যাচেই পাকিস্তানকে হারিয়ে ক্রিকেট–বিশ্বকে রীতিমতো কাঁপিয়ে দেয় আয়ারল্যান্ড। ওই হারই বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় করে দেয় পাকিস্তানকে। আয়ারল্যান্ড যে সর্বশেষ দুটি ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পায়নি, সেটির পেছনেও তাঁদের ওই পাকিস্তান জয়ের সম্পর্ক আছে।

২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে আয়ারল্যান্ড

২০০৭ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে প্রথম পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল প্রতিবেশী ভারতও। সোনার ডিম পাড়া দুই হাঁসকে হারিয়ে দিশাহারা আইসিসি পরে তো বদলেই ফেলে ওয়ানডে বিশ্বকাপের কাঠামো। ২০১৯ ও ২০২৩—টানা দুবার তো হলো ১০ দলের বিশ্বকাপ।

তবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ ১০ দলের হওয়ার আগে ২০১১ ও ২০১৫ সালেও বড় শিকার ঝুলিতে পোড়ে আইরিশরা। ওয়ানডে বিশ্বকাপে সাতটি জয় দলটি, এর পাঁচটিই টেস্ট খেলুড়ে দলের বিপক্ষে পেয়েছে সহযোগী সদস্য হিসেবেই তিনটি বিশ্বকাপ খেলা আয়ারল্যান্ড। ২০০৭ সালে পাকিস্তানকে বিদায় করে সুপার এইটে উঠে বাংলাদেশকে হারায় তারা। ২০১১ সালে বেঙ্গালুরুতে প্রতিবেশী ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দেয় আয়ারল্যান্ড। সেই ম্যাচে কেভিন ও’ব্রায়েনের অবিশ্বাস্য এক ইনিংসে (৬৩ বলে ১১৩) ইংলিশদের ৩২৭ রান টপকে জিতে যায় আয়ারল্যান্ড। এরপর ২০১৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়েকে হারায় দলটি।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও এ পর্যন্ত সাতটি জয় আয়ারল্যান্ডের। এই সাত শিকারের মধ্যে আছে বাংলাদেশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডও। ২০০৯ সালে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে গিয়ে প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশকে হারায় তারা। ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ যে সুপার টুয়েলভে খেলতে পারল না, তাতে আইরিশদের কাছে হারের বড় অবদান ছিল। সুপার টুয়েলভে উঠে আয়ারল্যান্ড হারায় ইংল্যান্ডকে।

আজ কি ভারতকে হারিয়ে নিজেদের শিকার–ইতিহাসকে আরেকটু সমৃদ্ধ করতে পারবে আয়ারল্যান্ড?