হায়দরাবাদের বিপক্ষে আউট হয়ে ফিরছেন বিরাট কোহলি
হায়দরাবাদের বিপক্ষে আউট হয়ে ফিরছেন বিরাট কোহলি

কোহলির ব্যাটিং আবার সমালোচনায়

অবশেষে আরেকটি ম্যাচ জিতেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। টানা ৬টি ম্যাচ হারার পর গতকাল রাতে সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে ৩৫ রানে হারিয়ে মৌসুমের দ্বিতীয় জয় পেয়েছে দলটি। তবে এ জয়ের পরও বরাবরের মতোই আলোচনায় একজন—বিরাট কোহলি।

এবারের আইপিএলে ১৪৫.৭৬ স্ট্রাইক রেট ও ৬১.৪২ গড়ে সর্বোচ্চ ৪৩০ রান কোহলিরই। গতকাল ৪৩ বলে ৫১ রানের ইনিংস খেলার পথে আইপিএলে শিখর ধাওয়ান, ডেভিড ওয়ার্নার ও ক্রিস গেইলের পর চতুর্থ ওপেনার হিসেবে পূর্ণ করেছেন ৪ হাজার রান। তবে শেষ পর্যন্ত বেঙ্গালুরু ২০৬ রানের স্কোর গড়লেও মাত্র ১১৮.৬০ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসটির জন্য কোহলিকে শুনতে হচ্ছে সমালোচনা।

পাওয়ারপ্লেতে কোহলির ব্যাটিং বেশ দ্রুতগতির ছিল, প্রথম ৬ ওভারে এ ওপেনার ১৮ বলে করেন ৩২ রান। তবে অন্য প্রান্তে ফাফ ডু প্লেসি ও উইল জ্যাকস আউট হওয়ার পর খোলসবন্দী কোহলি পরের ২৫ বলে করেন মাত্র ১৯ রান। জয়দেব উনাদকাটের স্লো বাউন্সারে ক্যাচ তুলে ফেরেন।আউট হওয়ার আগে কোহলি ভুগেছেন বেশ।

এ নিয়ে ধারাভাষ্যে সুনীল গাভাস্কার বলেন, ‘কোহলি শুধু সিঙ্গেল, সিঙ্গেল আর সিঙ্গেলই নিচ্ছে। (দিনেশ) কার্তিক আছে, (মহিপাল) লমরোর আছে। একটু ঝুঁকি নেওয়ার চেষ্টা তো করতে হবে। (রজত) পাতিদারকে দেখুন। এরই মধ্যে তিনটি ছক্কা মেরেছে ওই ওভারে। সে চাইলে সিঙ্গেল নিতে পারত বা ওয়াইডের জন্য বল ছেড়ে দিতে পারত। কিন্তু না, সে সুযোগ দেখেছে বলে ব্যাট চালিয়েছে।’

টানা ৬ ম্যাচ হারের পর জিতেছে বেঙ্গালুরু

এরপর তিনি যোগ করেন, ‘হ্যাঁ, কোহলি খেলেছে এবং মিস করেছে—এটা সহজ না। খোলসবন্দী হয়ে থাকলে, শুধু সিঙ্গেল নিতে থাকলে ব্যাটে বল লাগানো সহজ হবে না। কিন্তু কোহলির এটিই করতে হবে, চেষ্টা করতে হবে। এখন বড় শট খেলার চেষ্টা করতে হবে।’

কোহলি আউট হওয়ার সময় বেঙ্গালুরুর স্কোর ছিল ৪ উইকেটে ১৪০ রান, বাকি ৩১ বল। ক্যামেরন গ্রিন, কার্তিক, স্বপ্নিল সিংরা এরপর বেঙ্গালুরুকে নিয়ে লাফ দেন, ওই ৩১ বলে আসে ৬৬ রান। সেটিই যথেষ্ট হয়েছে এ মৌসুমে একের পর এক রেকর্ড ভেঙে চলা হায়দরাবাদকে হারাতে।

কোহলির এমন ব্যাটিংয়ের একটি কারণ হিসেবে সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার অজয় জাদেজা বলছেন, বেঙ্গালুরু হয়তো বড় লক্ষ্যে খেলেইনি। জিওসিনেমায় তিনি বলেছেন, ‘কোহলির ধারাবাহিকতা নিয়ে কথা বলে হচ্ছে সূর্যের অস্তিত্ব ব্যাখ্যা করার মতো। (কিন্তু) পাওয়ারপ্লে শেষ হয়ে যাওয়ার পরই সে গতি কমিয়েছে। হতে পারে বেঙ্গালুরুর ২ উইকেট হারানোর কারণে। মাঝেমধ্যে এটাও মনে হচ্ছে, বেঙ্গালুরু তাদের খেলোয়াড়দের ভূমিকা নিয়ে বেশ অনড়। ডিকে (কার্তিক) সব সময়ই শেষে আসবে। সেটি করতে গিয়েই ব্রেক চেপে ফেলছে বেঙ্গালুরু।’

এবারের আইপিএলে সর্বোচ্চ রান কোহলির

আর সাবেক পেসার রুদ্র প্রতাপ সিং অবশ্য একটা ভালো দিকও দেখতে পাচ্ছেন, ‘সে পাওয়ারপ্লেতে নিজেকে বদলে ফেলেছে। আমরা এখন আর তার কাছ থেকে এমন শট দেখি না। সে সময় নেয়, নিজের ওপর বিশ্বাস রাখে, বল অনুযায়ী খেলে। সে আক্রমণ করতে গিয়েছিল ঠিকই। বোলারের লাইন ও লেংথ নষ্ট করতে চেয়েছে, কিন্তু উইকেট পড়ে যাওয়ার পর গতি কমিয়ে ফেলেছে। সাধারণত সে এতটাও ধীরগতির না, এখানে প্রায় ২৪-২৫টি বলে সে কোনো বাউন্ডারিই মারেনি। যার প্রভাব অনেক বড় হতে পারত। তবে ভালো দিক হচ্ছে, সে এক দিক ধরে রেখেছিল, রজত পাতিদারকে কাজটি করার সুযোগ করে দিয়েছে।’

তবে কোহলি যেমনই খেলুন না কেন, শেষ পর্যন্ত আরেকটি জয় পেয়েই বড় স্বস্তি পাচ্ছেন বেঙ্গালুরু অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি, ‘বিশাল স্বস্তি। যেখানেই (পয়েন্ট তালিকার) থাকি না কেন, না জিতলে এটা আপনার ওপর প্রভাব ফেলে। মানসিক দিক দিয়ে প্রভাব ফেলে, আত্মবিশ্বাসে প্রভাব ফেলে। আমি হয়তো আজ একটু সহজে ঘুমাতে পারব।’