জিততে হলে রান তাড়ার নতুন রেকর্ড গড়তে হতো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। জোহানেসবার্গে টেস্টে তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ৩১০ রানের, তা-ও অস্ট্রেলিয়া করেছিল এক যুগ আগে। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ৩৯১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ক্রেগ ব্রাফেটের দল রেকর্ড গড়তে তো পারেইনি, হেরেছে ২৮৪ রানের বড় ব্যবধানে।
ব্যবধানটা আরও বাড়তে পারত, ৩৪ রানে ৬ উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে নিজেদের সর্বনিম্ন রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ড থেকে বাঁচিয়ছেন জেসন হোল্ডার ও জোসুয়া ডি সিলভা। এই জয়ে টেস্ট সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে টেম্বা বাভুমার দল।
গতকাল বাভুমার অনবদ্য ইনিংসেই জয়ের সুবাস পাচ্ছিল বাভুমার দল। এটি বাভুমার অধিনায়ক হিসেবে প্রথম আর টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ২৬২১ দিন আর ৮৮ ইনিংসের পর তিন অঙ্কে পৌঁছান বাভুমা। তাঁর ১৭১ রানের ইনিংসে ৭ উইকেটে ২৮৭ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
চতুর্থ দিনে এসে আর ইনিংস বড় করতে পারেননি প্রোটিয়া অধিনায়ক। ১ রান যোগ করেই হোল্ডারের বলে ফিরে যান বাভুমা। বাভুমার বিদায়ে শেষ দিকের ব্যাটসম্যানরা খুব বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি। শেষ দিকে কাগিসো রাবাদার ১০ বলে ১৬ রানেই মূলত স্কোরটা ৩২১ রান পর্যন্ত যায়।
এর জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস ভেঙে পড়ে তাসের ঘরের মতো। যে ভাঙনের শুরুটা হয়েছে অধিনায়ক ব্রাফেটকে দিয়ে। পিঠের চোট থেকে সেরে ওঠা রাবাদার সামনে আজও কথা বলেনি ব্রাফেটের ব্যাট। এই নিয়ে চলতি সিরিজে টানা ৪ বার রাবাদার বলে ফিরেছেন তিনি। রাবাদার পেসের সঙ্গে বাভুমা নতুন বল তুলে দেন স্পিনার সাইমন হার্মারের হাতে। প্রথম ইনিংসে নতুন বলে বল করা উইয়ান মুল্ডার চোটের কারণে দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিং করতে পারেননি।
নতুন বলে প্রথম বল থেকেই টার্ন পাচ্ছিলেন হার্মার। ডানহাতি এই স্পিনারের সামনে অনেকটা অসহায় লাগছিল তেজনারায়ন চন্দরপলকে। শেষ পর্যন্ত এই স্পিনারের বলেই উইকেট দিয়েছেন শিবনারায়ন চন্দরপলের ছেলে। ২১ থেকে ২৬—৫ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এমন পরিস্থিতিতে ব্যাটিং করতে এসেও হার্মারের বলে সুইপ শট খেলে মিড উইকেটে ধরা পড়েন জার্মেইন ব্ল্যাকউড। চতুর্থ দিনের মধ্যাহ্নবিরতির আগে ৩৪ রানে ৬ উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর ডি সিলভা ও হোল্ডার ৪৮ রানের জুটি গড়েন।
হোল্ডার এদিন আর ইনিংসটাকে বড় করতে পারেননি। ১৯ রান করে আউট হয়েছেন জেরাল্ড কোয়েটজির বলে। হোল্ডারের মতো কোয়েটজির বলেই আউট হয়েছেন ডি সিলভা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ গুটিয়ে যায় ১০৬ রানে। হার্মার ও কোয়েটজি দুজনেই নিয়েছেন তিনটি করে উইকেট।
দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দুই দলের জন্যই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বর্তমান চক্রের শেষ ম্যাচ ছিল এটি। এই জয়ে পয়েন্ট তালিকার তিন নম্বরে ওঠার সম্ভাবনা বেড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার। বর্তমানে তারা আছে চার নম্বরে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ আছে পয়েন্ট তালিকার সাত নম্বরে।