ক্রিকেটে দর্শকদের অন্যতম কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত—ছক্কার সংকেত দেখাচ্ছেন আম্পায়ার
ক্রিকেটে দর্শকদের অন্যতম কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত—ছক্কার সংকেত দেখাচ্ছেন আম্পায়ার

সর্বোচ্চ ছক্কা: টেস্টে তো স্টোকস, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে কে

স্কট কুগলায়েনকে ফাইন লেগ দিয়ে ছক্কা মেরে রেকর্ডটি করে ফেললেন বেন স্টোকস। মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে আজ তৃতীয় দিনে স্টোকসের রেকর্ড গড়া ছক্কাটি দেখে একটি প্রশ্ন উঠতে পারে। টেস্টে তো সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড গড়লেন বেন স্টোকস। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড কার?

কার—শব্দটিতে মনে হতে পারে বাকি দুই সংস্করণে এ রেকর্ড বুঝি একজনেরই। না, তা নয়। ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদির, টি-টোয়েন্টিতে ভারতের রোহিত শর্মার। ৩৯৮ ওয়ানডেতে ৩৫১ ছক্কা মেরেছেন আফ্রিদি। ১৪৮ টি-টোয়েন্টিতে ১৮২ ছক্কা রোহিতের।

আর টেস্টে আজ ক্যারিয়ারের ৯০তম ম্যাচে এসে এই সংস্করণে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ডটি গড়েছেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বেন স্টোকস। ১০৯টি ছক্কা মেরেছেন বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার। অর্থাৎ, টেস্ট ক্রিকেটের বয়সের চেয়েও এককভাবে সর্বোচ্চ ছক্কার সংখ্যা কম!

জানিয়ে রাখা ভালো, টেস্ট ক্রিকেটের বয়স ১৪৬ বছর চলছে। এই খেলায় ব্যাটসম্যানের মেজাজ কেমন রাখতে হয়, সেটির ধারণা আছে এই পরিসংখ্যানে। যদিও ইংল্যান্ড হাল সময়ে যেভাবে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলছে, তাতে ধারণাটা একসময় পাল্টে যেতেই পারে।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির বয়স দেড় যুগ (১৮ বছর) হতে চলল। সংস্করণটি যেহেতু খুনে মেজাজের ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে বেশি মানানসই, তাই ছক্কাসংখ্যাও দেখার মতো। টেস্টে সর্বোচ্চ ছক্কার তালিকায় যেখানে ন্যূনতম ১০০ ছক্কা মারার রেকর্ডধারী মাত্র তিনজন, সেখানে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ন্যূনতম ১০০ ছক্কা মেরেছেন ১৩ জন!

সংস্করণের মেজাজটা কিন্তু এই পরিসংখ্যানেই পরিষ্কার। রোহিত ১৪০ ইনিংসে ১৮২ ছক্কা নিয়ে এই সংস্করণে সেরা ‘ছক্কাবাজ’। অর্থাৎ, ইনিংসপ্রতি ১.৩টি করে ছক্কা মেরেছেন ভারতের অধিনায়ক। ১২২ ম্যাচে ১১৮ ইনিংস ব্যাট করে ১৭৩ ছক্কা নিয়ে দুইয়ে নিউজিল্যান্ডের ওপেনার মার্টিন গাপটিল। ইনিংসপ্রতি তাঁর ছক্কাসংখ্যা রোহিতের চেয়ে বেশি (১.৪৬)।

কিছুদিন আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছেড়ে দেওয়া অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ১০৩ ম্যাচে (১০৩ ইনিংসও) ১২৫ ছক্বা নিয়ে তিনে। ইনিংসপ্রতি ১.২১ করে ছক্কা মেরেছেন ফিঞ্চ। জানিয়ে রাখা ভালো, টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ছক্কা মাহমুদউল্লাহর। ১২১ ম্যাচে ১১৩ ইনিংসে ৬৪ ছক্কা মেরেছেন। ইনিংসপ্রতি ছক্কা ০.৫৬ করে।

ওয়ানডে ক্রিকেট টি-টোয়েন্টির মতো অতটা খুনে মেজাজের নয়। মানে, ব্যাটিং একটু রয়ে-সয়ে করা যায়। কিন্তু এই সংস্করণে সর্বোচ্চ ছক্কার তালিকায় শীর্ষ পাঁচ ব্যাটসম্যানকে দেখুন—শহীদ আফ্রিদি, ক্রিস গেইল, রোহিত শর্মা, সনাৎ জয়াসুরিয়া ও মহেন্দ্র সিং ধোনি। সবাই টি-টোয়েন্টির মেজাজে বেশি মানানসই হলেও অন্যান্য সংস্করণেও সফল।

আফ্রিদি ৩৬৯ ইনিংসে ৩৫১ ছক্কা মারায় ইনিংসপ্রতি তাঁর ছয়ের সংখ্যা ০.৯৫টি করে। মোট ম্যাচ খেলেছেন অবশ্য ৩৯৮টি। ৩০১ ওয়ানডে ক্যারিয়ারে কিংবদন্তি ক্রিস গেইল ২৯৪ ইনিংস ব্যাট করে মেরেছেন ৩৩১ ছক্কা। ইনিংসপ্রতি তাঁর ছক্কাসংখ্যা আফ্রিদির চেয়ে বেশি—১.১২টি করে। ২৪১ ওয়ানডে খেলা ভারতের বর্তমান ওপেনার রোহিতের সামনে এখন এই দুই সাবেককে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ। ২৩৪ ইনিংসে ২৭৩ ছক্কা মেরেছেন রোহিত। ইনিংসপ্রতি ১.১৬টি করে ছক্কা ভারত অধিনায়কের।

৪৪৫ ম্যাচে ৪৩৩ ইনিংসে ২৭০ ছক্কা নিয়ে চারে জয়াসুরিয়া। ইনিংসপ্রতি তাঁর ছক্কাসংখ্যা ০.৬২। ৩৫০ ম্যাচ খেলা ধোনি ২৯৭ ইনিংসে ২২৯টি ছক্কা মেরেছেন। ইনিংসপ্রতি তাঁর ছক্কাসংখ্যা ০.৭৭।