বাংলাদেশকে বিদায় করে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে নিউজিল্যান্ড
বাংলাদেশকে বিদায় করে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে নিউজিল্যান্ড

ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ

হারের হ্যাটট্রিকে বাংলাদেশের বিদায়

ফাইনাল খেলার সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখতে জয়ের বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের। বাংলাদেশের সেই সম্ভাবনা বাঁচাতেই যেন আজ মাঠে নেমেছিলেন নিউজিল্যান্ডের ফিল্ডাররা। এক নাজমুল হোসেনকেই দুবার জীবন উপহার দিলেন তাঁরা। সাকিব আল হাসানও জীবন পেলেন দুবার। তবে তাতে কী! বাংলাদেশ যথারীতি হেরেছে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা না গড়েই। ২০৯ রানের লক্ষ্য ছুঁতে নেমে পুরো ২০ ওভার খেলে ৭ উইকেটে ১৬০ রান তুলে হেরেছে ৪৮ রানে। আর তাতেই নিশ্চিত শুক্রবারের ফাইনালে নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের মুখোমুখি হওয়া।

রান তাড়ায় ইনিংসের তৃতীয় বলেই ক্যাচ তুললেন বাংলাদেশ ওপেনার নাজমুল। আকাশে উঠে যাওয়া ক্যাচটি নিতে চার কিউই ফিল্ডার এগিয়ে গেলেও শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্তহীনতায় থমকে দাঁড়ালেন চারজনই।

বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৭০ রান করেছেন সাকিব আল হাসান

শূন্য রানে জীবন পাওয়া নাজমুল আবার জীবন পেলেন ১০ রানে। এবার অ্যাডাম মিলনের বলে মিড অনে তাঁর তোলা সহজ ক্যাচটি ছেড়েছেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টিম সাউদি। দুই বল পরেই আর ১ রান যোগ করেই অবশ্য কিউইদের স্বস্তি দিয়ে ফিরলেন নাজমুল। এবার আর কোনো ফিল্ডারের ক্যাচিং পরীক্ষা নিলেন না তিনি, আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে মিলনের বলেই হলেন বোল্ড।

বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান প্রথম ক্যাচ তোলেন ১১ রানে। গ্লেন ফিলিপসের সৌজন্যে আউট হওয়ার পরিবর্তে বাউন্ডারি পেয়ে যাওয়া সাকিব সেই সুযোগে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের একাদশ ফিফটিটি তুলে নেন। তবে ৬৭ রানে বদলি ফিল্ডার ব্লেয়ার টিকনার আবারও জীবন দেওয়ার পরও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সাকিব। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭০ রান করে সাকিবের আউট হওয়ার আগেই অবশ্য ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়েছে বাংলাদেশ। ১৯ তম ওভারে সাকিব যখন ফিরলেন শেষ ১০ বলে ৫৯ রানের সমীকরণ বাংলাদেশের।

সাকিবের ক্যাচ ছাড়ছেন গ্লেন ফিলিপস

৮ চার ও ১ ছক্কায় সাজানো সাকিবের ৪৪ বলের ইনিংসটা ছাড়া বাংলাদেশের হয়ে বলার মতো রান পেয়েছেন শুধু লিটন দাস ও সৌম্য সরকার। ওপেনিংয়ে ফেরা লিটন ১৬ বলে করেছেন ২৩ রান। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশের জার্সিতে প্রথম খেলতে নামা সৌম্যও ২৩ রান করেছেন ১৭ বলে।

অ্যাডাম মিলনের শর্ট বলে র‌্যাম্প শট খেলতে গিয়ে সৌম্য যখন আউট হলেন বাংলাদেশের স্কোরটা একদম খারাপ ছিল না—১০ ওভারে ৯০/৩। ৭ উইকেট হাতে নিয়ে শেষ ১০ ওভারে দরকার ১১৯ রান, বাংলাদেশ তুলতে পারল মাত্র ৭০ রান। ওই রানের ৪৪-ই আবার করেছেন সাকিব।

আফিফ হোসেন, নুরুল হাসান, ইয়াসির আলীদের ডানা মেলতে দেননি কিউই বোলাররা। আফিফ করেছেন ৪, নুরুল ২, আর ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ তোলার ইয়াসির ফিরেছেন ৬ রানে। কিউই পেসার অ্যাডাম মিলনে ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট পেয়েছেন টিম সাউদি ও মাইকেল ব্রেসওয়েল।

২৪ বলে ৬০ রান করেছেন গ্লেন ফিলিপস

এর আগে টস হেরে ব্যাটিং পাওয়া নিউজিল্যান্ডের ইনিংস ২০০ পেরোয় মূলত ডেভন কনওয়ে ও গ্লেন ফিলিপসের ঝড়ে। ফিন অ্যালেনের (১৯ বলে ৩২) সঙ্গে ৪৫ রানের ওপেনিং জুটি গড়া কনওয়ে ৪০ বলে করেছেন ইনিংস সর্বোচ্চ ৬৪ রান। দ্বিতীয় উইকেটে মার্টিন গাপটিলকে (২৭ বলে ৩৪) নিয়ে ৮২ রানের জুটি গড়া কনওয়ে ফিরেছেন ১৭ তম ওভারের প্রথম বলে সাইফউদ্দিনের বলে নাজমুলের ক্যাচ হয়ে। নিউজিল্যান্ডের রান তখন ৩ উইকেট ১৬১। শেষ দিকে ঝড় তুলেছেন ফিলিপস। চারে নামা ব্যাটসম্যান ৩২ চার ও ৫ ছক্কায় ২৪ বলেই করেন ৬০ রান।

ফাইনাল খেলা না হলেও আগামীকালই আবার মাঠে নেমে পড়তে হচ্ছে বাংলাদেশকে। টুর্নামেন্টে নিজেদের শেষ ম্যাচে এদিন বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ পাকিস্তান।