১১ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন স্টিভ স্মিথ
১১ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন স্টিভ স্মিথ

শুধু ইনিংস ব্যবধানে হারটাই এড়াতে পারল ওয়েস্ট ইন্ডিজ

ম্যাচটা দ্বিতীয় দিনেই নাগালে নিয়ে এসেছিল অস্ট্রেলিয়া। বাকি ছিল শুধু শেষের আনুষ্ঠানিকতা। অ্যাডিলেড টেস্টের তৃতীয় দিনে সেই শেষটুকু সম্পন্ন করতে অস্ট্রেলিয়ার লেগেছে ১৯.১ ওভার।

দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ৭৩ রান নিয়ে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১২০ রানে থামালে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৬ রানের, যা কোনো উইকেট না হারিয়েই তুলে ফেলে প্যাট কামিন্সের দল। যদিও শামার জোসেফের বাউন্সারে মুখে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন উসমান খাজা।

তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনের মধ্যে ম্যাচ জিতে নিয়ে দুই টেস্ট সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া।

অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে প্রথম ইনিংসে ৯৫ রানে পিছিয়ে থাকা ক্যারিবীয়রা গতকাল দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনে ২২.৫ ওভারেই হারিয়েছিল ৬ উইকেট। কামিন্সদের চেয়ে তখনো ২২ রানে পিছিয়ে থাকায় ইনিংস ব্যবধানের শঙ্কাও উঁকি দিচ্ছিল। তৃতীয় দিনের সকালে সেটি প্রায় হয়েও গিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে ১ রানে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় আউট হন ওয়েস্ট ইন্ডিজের নবম ব্যাটসম্যান।

দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেটসহ ম্যাচে নয় উইকেট নিয়েছেন জশ হ্যাজলউড

এখান থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস ব্যবধানে হার ঠেকান জোসেফ ও কেমার রোচ। প্রথম ইনিংসে শেষ উইকেটে ৫৫ রান তোলা এই দুই বোলার দ্বিতীয় ইনিংসে যোগ করেন ২৬ রান। অভিষিক্ত জোসেফ নাথান লায়নের শিকার হওয়ার আগে করেন ১৫ রান, এর আগে প্রথম ইনিংসেও তুলেছিলেন ৩৬ রান।

২৪ বছর বয়সী এই গায়ানা পেসার অবশ্য অভিষেক ম্যাচটিকে সবচেয়ে বেশি স্মরণীয় করে রেখেছেন প্রথম ইনিংসে বল হাতে ৫ উইকেট নিয়ে।

দ্বিতীয় ইনিংসে উইকেট পাননি, তবে অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার উসমান খাজাকে রীতিমতো কাঁপিয়ে দিয়েছেন।

শামার জোসেফের বাউন্সারে আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন উসমান খাজা

খাজা ও স্টিভ স্মিথের জুটি সহজেই দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ইনিংসের সপ্তম আর নিজের দ্বিতীয় ওভার করতে আসা জোসেফের দ্বিতীয় বলেই বাউন্সারে আহত হন খাজা, তাঁর মুখ থেকে রক্তও বের হতে থাকে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন খাজা। মারনাস লাবুশেন এসে এক বল পরেই অস্ট্রেলিয়াকে জয়ের রান এনে দেন। স্মিথ অপরাজিত থাকেন ১১ রানে।

এমন জয়ের পর উইকেট যে সহজ ছিল না, সেটিও মনে করিয়ে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক প্যাট কামিন্স, ‘দারুণ টেস্ট ম্যাচ, তিন দিনের মধ্যে শেষ করতে পেরে ভালো লাগছে। (তবে) এমন একটা উইকেট, যেখানে মনে হবে, আপনি পরের বলেই এজড হবেন।’ ব্যাটিংয়ের চ্যালেঞ্জের কথা বলেছেন ম্যাচসেরা ও ঘরের ছেলে ট্রাভিস হেডও, ‘চ্যালেঞ্জিং ছিল। ভাগ্য ভালো যে অভিজ্ঞতা কাজে লাগছে। ব্যস্ত মৌসুমে ঘরে চার-পাঁচ দিন কাটাতে পেরে ভালো লাগছে।’

অ্যাডিলেডে জিতে সিরিজে এগিয়ে গেল স্টিভ স্মিথের দল

আর ক্যারিবীয় অধিনায়ক ক্রেগ ব্রাফেট বলছেন ব্যাটসম্যানদের দ্রুত শিখতে, ‘ব্যাটসম্যানদের জন্য এক নম্বর দলের বিপক্ষে খেলার অনুভূতি কেমন, সেটি দারুণ। কীভাবে স্কোর করা যায়, বাজে বলে মারা যায়, সেগুলো শিখতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ভালোভাবে শেখা এবং দ্রুত শেখা।’

সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট শুরু ২৫ জানুয়ারি ব্রিসবেনে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস: ৬২.১ ওভারে ১৮৮ ( ব্রাফেট ১৩, চন্দরপল ৬, ম্যাকেঞ্জি ৫০, অ্যাথানেজ ১৩, হজ ১২, গ্রেভস ৫, জশুয়া ৬, আলজারি জোসেফ ১৪, মোতি ১,রোচ ১৭, শামার জোসেফ ৩৬) স্টার্ক ১/৩৭, হ্যাজলউড ৪/৪৪, কামিন্স ৪/৪১, লায়ন ১/৩৬, মার্শ ০/৫, গ্রিন ০/১২)।

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৮১.১ ওভারে ২৮৩ ( স্মিথ ১২, খাজা ৪৫, লাবুশেন ১০, গ্রিন ১৪, হেড ১১৯, মার্শ ৫, ক্যারি ১৫, স্টার্ক ১০, কামিন্স ১২, লায়ন ২৪, হ্যাজলউড ০* ; রোচ ২/৪৮, আলজারি ১/৫৫, জোসেফ ৫/৯৪, মোতি ০/৪২ গ্রেভস ২/৩৬)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২য় ইনিংস: ৩৫.২ ওভারে (ব্রাফেট ১, চন্দরপল ০, ম্যাকেঞ্জি ২৫, অ্যাথানেজ ০, হজ ৩, গ্রেভস ২৪, জশুয়া ১৮, আলজারি ১৬, মোতি ৩, রোচ ১১*, শামার ১৫; স্টার্ক ২/৪৬, হ্যাজলউড ৫/৩৫, কামিন্স ০/২৫, গ্রিন ১/৯ লায়ন ২/৪)।

অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: ৬.৪ ওভারে ২৬/০ (স্মিথ ১১*, খাজা ৯* (রিটায়ার হার্ট), লাবুশেন ১*; রোচ ০/৬, আলজারি ০/১২, শামার ০/৭)।

ফল: অস্ট্রেলিয়া ১০ উইকেটে জয়ী।

ম্যাচসেরা: ট্রাভিস হেড।