শ্রীলঙ্কার ক্রীড়ামন্ত্রী রোশান রানাসিংহে, আজ বরখাস্ত করা হয়েছে তাঁকে
শ্রীলঙ্কার ক্রীড়ামন্ত্রী রোশান রানাসিংহে, আজ বরখাস্ত করা হয়েছে তাঁকে

ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে এবার বরখাস্ত শ্রীলঙ্কার ক্রীড়ামন্ত্রী

শ্রীলঙ্কার ক্রীড়ামন্ত্রী রোশান রানাসিংহেকে বরখাস্ত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে। ক্রিকেট বোর্ডে দুর্নীতিমুক্ত অভিযান চালানোর কারণে প্রেসিডেন্ট তাঁকে হত্যার চেষ্টা করছেন, এমন অভিযোগ তোলার পর বরখাস্ত করা হলো রানাসিংহেকে।

আজ সোমবার মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে রানাসিংহেকে এ–সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যম। পরে সেটি নিশ্চিত করে বার্তা সংস্থা এএফপিও। রানাসিংহের সঙ্গে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট বোর্ডের দ্বন্দ্ব চলছে বেশ কিছুদিন ধরেই, সরকারি হস্তক্ষেপের কারণে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটকে বরখাস্তও করেছে আইসিসি।

এর আগে আজ সংসদে রানাসিংহে বলেন, ‘ক্রিকেট বোর্ড পরিচ্ছন্ন করার কাজের জন্য আমাকে হত্যা করা হতে পারে, এমন আশঙ্কা করছি। যদি রাস্তায় আমাকে হত্যা করা হয়, তাহলে প্রেসিডেন্ট এবং তাঁর চিফ অব স্টাফ দায়ী থাকবেন।’

কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও বরখাস্ত হওয়ার খবরটি নিশ্চিত করেছে তাঁর অফিস, জানিয়েছে এএফপি। শ্রীলঙ্কার ডেইলি মিরর, নিউজওয়্যার জানায়, আজ বিকেলে মন্ত্রিসভার বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছিলেন রানাসিংহে। সেখানেই তিনি বরখাস্ত হওয়ার চিঠি পান। শুধু মন্ত্রিত্ব থেকে নয়, সরকারের অন্যান্য পদ থেকেও বরখাস্ত করা হয়েছে এই ৪৮ বছর বয়সীকে।

সম্প্রতি দেশটির ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন রানাসিংহে। এর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে ক্রিকেট বোর্ডকে বরখাস্ত করেন তিনি। এরপর শ্রীলঙ্কাকে ১৯৯৬ বিশ্বকাপ জেতানো সাবেক অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গাকে চেয়ারম্যান করে বোর্ডে অন্তর্বর্তীকালীন কমিটিও গঠন করা হয়।

শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের প্রেসিডেন্ট শাম্মি সিলভা

যদিও এক দিন পরই শ্রীলঙ্কার আদালত সে কমিটির কার্যক্রম দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। এরপর শ্রীলঙ্কার আইনসভাতেও এসএলসির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এমনিতে ১৯৭৩ সালে জাতীয় ক্রীড়া আইন অনুযায়ী, শ্রীলঙ্কার সব জাতীয় দল চূড়ান্ত অনুমোদনে ভূমিকা রাখেন দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী।

১০ নভেম্বর শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটকে বরখাস্ত করে আইসিসি। ২১ নভেম্বর আহমেদাবাদে আইসিসির বোর্ড মিটিংয়ের পর জানানো হয়, শ্রীলঙ্কাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার অনুমতি দেওয়া হলেও আগামী বছর সেখানে হতে যাওয়া অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সেটি নিয়ে যাওয়া হয় দক্ষিণ আফ্রিকায়। সঙ্গে শ্রীলঙ্কা বোর্ডকে দেওয়া তহবিল সীমিত করে আনার ঘোষণাও দেয় আইসিসি। আইসিসির নিষেধাজ্ঞা তদন্ত করতে একটি কমিটি গঠন করেছেন প্রেসিডেন্ট বিক্রমাসিংহে।

এদিকে প্রেসিডেন্ট অনুরোধ করা সত্ত্বেও বোর্ডকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসার ব্যাপারে অনড় থাকেন রানাসিংহে। সংসদকেও পাশে পান তিনি। এ–সংক্রান্ত একটি বিলও পাস করা হয় তিন সপ্তাহ আগে, যাতে আর্থিক বিবরণী পর্যবেক্ষণের আগপর্যন্ত ক্রিকেট বোর্ডকে পদত্যাগ করতে বলা হয়।