একদিন কুশল মেন্ডিস, আরেক দিন দাসুন শানাকা। ব্যাটিংয়ে এই দুজনের বাইরে আছেন ভানুকা রাজাপক্ষেও। ওহ্, পাতুম নিসাঙ্কার কথা তো বলাই হলো না! কী দারুণ দুটি ইনিংসই না খেললেন প্রথমে ভারত, পরে পাকিস্তানের বিপক্ষে। এবার বোলিং প্রসঙ্গ। দিলশান মাদুশঙ্কার গতি ও সুইং তো দেখেছেনই, রহস্য স্পিনার মহীশ তিকশানার সঙ্গে লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার জুটিরও তারিফ না করে উপায় নেই।
বলা হচ্ছিল এবারের এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কা দলের নায়কদের কথা। গ্রুপ পর্ব থেকে শুরু করে ফাইনালে জায়গা করে নেওয়া পর্যন্ত প্রতিটি ম্যাচেই এমন একজন করে ম্যাচজেতানো ক্রিকেটার পেয়েছে লঙ্কানরা। নায়কের যেন অভাব নেই দলটিতে। সবার এখন কৌতূহল, দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় এশিয়া কাপ ফাইনালে আজ শ্রীলঙ্কার নায়ক হবেন কে?
শ্রীলঙ্কার আরেকটি শক্তির জায়গা ফিল্ডিং। বড় বাউন্ডারির দুবাই ও অপেক্ষাকৃত ছোট বাউন্ডারির শারজা—দুই মাঠেই লঙ্কানদের ফিল্ডিং ছিল ম্যাচ জেতার অন্যতম কারণ। বিশেষ করে বাউন্ডারি লাইনে প্রায় প্রতি ম্যাচেই ১০ থেকে ১২ রান করে বাঁচিয়ে দিচ্ছেন লঙ্কান ফিল্ডাররা।
শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট বরাবরই ক্রিকেটীয় চাতুর্যে ভালো। এবারের এশিয়া কাপেও সেটি দেখা যাচ্ছে। ড্রেসিংরুম থেকে সংখ্যা দেখিয়ে সরাসরি অধিনায়ক শানাকার কাছে কৌশলগত তথ্য আদান–প্রদান করতে দেখে গেছে কোচ ক্রিস সিলভারউডকে। ক্রিকেট বিশ্লেষণ মাঠে প্রয়োগ করার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট এগিয়ে শ্রীলঙ্কা। ম্যাচের নির্দিষ্ট একটি সময় বোলারদের ওপর চড়াও হন লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা।
সুপার ফোর পর্বের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের পেসার হাসান আলীকেই লক্ষ্য বানিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যানরা। ওভারপ্রতি ৬ রানরেটের ম্যাচে হাসানের প্রথম ২ ওভারেই ওঠে ২১ রান। রান তাড়ার চাপটা ওই ২ ওভারেই হাওয়ায় মিলিয়ে যায়। ভারতের বিপক্ষে অর্শদীপ সিং, বাংলাদেশের বিপক্ষে ইবাদত হোসেন—লঙ্কান আক্রমণের শিকার হয়েছেন সব দলের বোলাররাই।
অবশ্য শ্রীলঙ্কার ভাগ্যও ভালো। ব্যাটিং অর্ডারে দুই বাঁহাতি রাজাপক্ষে ও দানুস্কা গুনাতিলকা থাকায় ডানহাতি ব্যাটসম্যানদের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রাখাটা সহজ তাদের জন্য। লম্বা ব্যাটিং লাইনআপও শ্রীলঙ্কার একটা শক্তি। আর হাসারাঙ্গা তো আছেনই। তিকশানা ও আসিতা ফার্নান্ডোর মতো লেজের দিকের ব্যাটসম্যানরাও ব্যাট চালাতে পারেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে তো ফার্নান্ডোই চার মেরে ম্যাচ জেতালেন।
ফাইনালে শ্রীলঙ্কার আত্মবিশ্বাসে সবচেয়ে বড় জ্বালানি জয়ের ধারাবাহিকতা। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে ৮ উইকেটে হারের পর থেকে সব ম্যাচই জিতেছে তারা। ফাইনালের প্রতিপক্ষ পাকিস্তানকে হারিয়েছে সুপার ফোর পর্বের শেষ ম্যাচে। ফাইনালে আজ সেটিই আরেকবার করে দেখাতে চাইবে পাঁচবারের এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়নরা।