গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ওই ম্যাচের কথা ভোলেননি প্রোটিয়া অধিনায়ক বাভুমা।
শ্রীলঙ্কার পর অস্ট্রেলিয়া—সাবেক দুই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নকে বড় হার ‘উপহার’ দিয়েই এবারের বিশ্বকাপ শুরু করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আজ সেই টেম্বা বাভুমার দল খেলবে ১২ বছর পর বিশ্বকাপে ফেরা নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। ধর্মশালার এইচপিসিএ স্টেডিয়ামে ম্যাচটা নিরঙ্কুশ ফেবারিট হিসেবেই শুরু করবে দক্ষিণ আফ্রিকা।
তবে প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা ফেবারিট তকমা দূরে সরিয়ে রেখেই খেলতে চাইছেন ম্যাচটা। সতর্ক বাভুমা কাল সংবাদ সম্মেলনে জানান, ‘হামবড়া’ ভাব নিয়ে খেলে বিপদে পড়তে চাওয়ার কোনো মানে নেই।
প্রতিপক্ষে ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ের ১৪ নম্বর দল, তবু বাভুমার সতর্ক থাকতে চাওয়ার কারণ আছে। প্রায় ১১ মাস আগের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দক্ষিণ আফ্রিকা-নেদারল্যান্ডস ম্যাচটির কথা যে ভোলেননি দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক। অ্যাডিলেডে সুপার টুয়েলভের ম্যাচটায় যে দক্ষিণ আফ্রিকাকে স্তম্ভিত করে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল ডাচরা। কমলা জার্সির ১৫৮ রানের জবাবে সবুজ জার্সিরা থেমেছিল ১৪৫ রানে।
তবে আজকের ম্যাচটা ৫০ ওভারের বলেই নিজেদের একটু এগিয়ে রাখার কথাও কাল সংবাদ সম্মেলনে বললেন বাভুমা, ‘আমরা অবশ্যই ওদের হালকাভাবে নেব না। গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একটা ম্যাচ খেলেছিলাম আমরা, এবারেরটা দীর্ঘ পরিসরের ৫০ ওভারের ম্যাচ। ভিন্ন সংস্করণ, নিজেদের দক্ষতা দেখানোর প্রক্রিয়াটাও ভিন্ন। এখানে নিজের দক্ষতা দেখানোর লম্বা সময় পাওয়া যায়। বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে সবাইকে।’
ওয়ানডেতে দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের হিসাবে নিরঙ্কুশ ব্যবধানেই এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। সাত ম্যাচ খেলে ছয়টিতেই জিতেছে প্রোটিয়ারা। অন্য ম্যাচটি এক ইনিংস হওয়ার পর ভেসে যায় বৃষ্টিতে। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে প্রোটিয়াদের শেষ দুটি ওয়ানডে জয়ের স্মৃতি আবার টাটকাই। অ্যাডিলেডের হারের সেই স্মৃতিকে ইতিহাস বানিয়ে গত মার্চ-এপ্রিলে ঘরের মাঠে সুপার লিগের ম্যাচে ডাচদের বড় ব্যবধানে হারায় বাভুমারা।
কখনোই বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠতে না পারলেও চারবার সেমিফাইনাল খেলা দক্ষিণ আফ্রিকাকে আজ ডাচদের ছাড়াও চিন্তা করতে হচ্ছে ধর্মশালার ‘বাজে’ আউটফিল্ড নিয়ে। বাভুমা বললেন, ফিল্ডারদের সতর্ক থাকতে বলে দিয়েছেন তাঁরা, ‘আমরা সতর্ক থাকার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। ফিল্ডারদের ঝাঁপ দেওয়ার কৌশলে হয়তো একটু পরিবর্তন আনতে হবে। এটা বলা সহজ, কিন্তু ম্যাচের সময় মুহূর্তের উত্তেজনার সময় এটা করা সহজ নয়।’
এই ম্যাচে বাভুমাদের মাথাব্যথার কারণ হতে পারেন ডাচ দলে থাকা পাঁচ ‘বিভীষণ’ কলিন অ্যাকারম্যান, সিব্রান্ড এঙ্গেলব্রেখট, রোলফ ফন ডার মারওয়ে, রায়ান ক্লাইন ও ওয়েসলি বারেসি। দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া এই পাঁচ খেলোয়াড় প্রোটিয়া ক্রিকেটের ভেতরের খবর ভালোই জানেন। নেদারল্যান্ডসের কোচ রায়ান কুকের বাড়ি তো দক্ষিণ আফ্রিকাতেই। সেই কুক কাল জানালেন, পারস্পরিক জানাশোনার সুবিধাটা নেওয়ার চেষ্টা করবে তাঁর দল, ‘ব্যক্তিগত ও পেশাদার সম্পর্কের কারণে ওদের অনেক খেলোয়াড়ের অনেক কিছুই জানা আমাদের। দেখি, এ থেকে কোনো সুবিধা নিতে পারি কি না।’
ওই পাঁচজনের একজন স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার ফন ডার মারওয়ে ২০০৯-১০ সালের দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ১৩টি ওয়ানডেও খেলেছেন। তাঁর কথা আলাদা করে বলা কুক বললেন, এবার ৫০ ওভারের ক্রিকেটেও কিছু করে দেখানোর পালা তাঁর দলের, ‘৫০ ওভারের ক্রিকেটটাই তো আমরা বেশি খেলি। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে কতটা সফল হতে কতটা ধারাবাহিক হতে হয়, সেটিও জানা। আমরা এটাও জানি, আগামীকাল (আজ) যদি লম্বা সময় ধরে ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি, তবে ম্যাচটা জমবে।’
ডাচ রূপকথা হবে কি আজ ধর্মশালায়!