নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটার হামিশ রাদারফোর্ড
নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটার হামিশ রাদারফোর্ড

ক্রিকেটই ছেড়ে দিচ্ছেন রাদারফোর্ড

নিউজিল্যান্ডের অন্যতম সম্ভাবনাময় ব্যাটসম্যান হিসেবে আবির্ভাব হয়েছিল হামিশ রাদারফোর্ডের। ২০১৩ সালে অভিষেক টেস্টেই পেয়েছিলেন শতকের দেখা। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তাঁর প্রতিভাও যেন হারিয়ে যেতে শুরু করে। কিউইদের হয়ে সর্বশেষ খেলেছেন ২০১৯ সালে। জাতীয় দলে আর কখনো ডাক পড়ত বলেও মনে হয় না। ৩৪ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান আজ সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সুযোগ কম পেলেও রাদারফোর্ড নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত মুখ। আঞ্চলিক দল ওটাগো ভোল্টসের হয়ে নিয়মিত পারফর্ম করছেন। এবার সেখান থেকেও সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। টি–টোয়েন্টি লিগ সুপার স্ম্যাশে আগামী মঙ্গলবার নর্দার্ন ব্রেভের বিপক্ষে পেশাদার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলবেন ৩৪ বছর বয়সী এ ওপেনার।

আজ এক বিবৃতিতে অবসরে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাদারফোর্ড। তিনি বলেছেন, ‘ওটাগোর হয়ে খেলা এবং এই আইকনিক প্রদেশের অংশ হতে পারা আমার জন্য বিশেষ ব্যাপার। নিউজিল্যান্ডের হয়ে খেলা সব সময়ই আমার স্বপ্ন ছিল। ক্রিকেট আমাকে এবং আমার পরিবারকে যে সুযোগ দিয়েছে, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমি (খেলোয়াড়ি জীবনের) প্রতিটি মিনিট ভালোবেসেছি। আমি পরিবার, বন্ধু, সতীর্থ, কোচ এবং সমর্থকদের কাছ থেকে যে সমর্থন পেয়েছি, সেটা প্রশংসনীয়।’

টেস্ট অভিষেকেই শতক করেছিলেন রাদারফোর্ড

ওটাগোর ডানেডিনে এক ক্রিকেট পরিবারে জন্ম হামিশ রাদারফোর্ডের। তাঁর বাবা কেন রাদারফোর্ড নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক। তাঁর চাচা ইয়ান রাদারফোর্ডের কখনো জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চড়ানোর সৌভাগ্য না হলেও প্রথম শ্রেণি ও লিস্ট ‘এ’ মিলিয়ে খেলেছেন ১০০ ম্যাচ।

২০১৩ সালে তিন সংস্করণেই অভিষেক হয়েছিল হামিশ রাদারফোর্ডের। তবে সবচেয়ে কম এগিয়েছে তাঁর ওয়ানডে ক্যারিয়ার। ৪ ওয়ানডের সর্বশেষটি খেলেছেন সে বছরেরই অক্টোবরে, বাংলাদেশের বিপক্ষে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। দ্বিতীয়বার ‘বাংলাওয়াশ’ হওয়ার সেই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মাশরাফি বিন মুর্তজার বলে ১ রান করে বোল্ড হন।

নিজের সর্বশেষ ওয়ানডেতে মাশরাফির বলে বোল্ড হয়েছিলেন রাদারফোর্ড

১৬ টেস্টের সর্বশেষটি খেলেছেন ২০১৫ সালে ওয়েলিংটনে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই ম্যাচে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৭৭ রান করলেও অজানা কারণে টেস্টে আর কখনো একাদশে জায়গা হয়নি।

জাতীয় দলে ৪ বছর উপেক্ষিত থাকার পর সুযোগ এসেছিল ২০১৯ সালে। কিউইদের হয়ে ফিরেছিলেন টি–টোয়েন্টি সংস্করণ দিয়ে। কিন্তু লাসিথ মালিঙ্গার ‘দুর্বোধ্য’ এক ইয়র্কারে প্রথম বলেই এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন। সেই ‘গোল্ডেন ডাকের’ পর আর কখনো আন্তর্জাতিক আঙিনায় ফেরা হয়নি। সব মিলিয়ে ২৮ ম্যাচে ৯২১ রানেই থেমে গেছে তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্রাত্য হয়ে পড়লেও ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিতই রান করেছেন রাদারফোর্ড। ওটাগোর হয়ে সব সংস্করণ মিলিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৯২ ম্যাচ খেলেছেন এই বাঁহাতি ওপেনার।

রাদারফোর্ডের অবসরের খবরে ওটাগো ক্রিকেটের প্রধান নির্বাহী মাইক কোগান বলেছেন, ‘নিঃসন্দেহে হামিশ (রাদারফোর্ড) ওটাগোর অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হিসেবে বিবেচিত হবেন। আমি তাঁকে এমন কিছু ইনিংস খেলতে দেখেছি, যেটার সামর্থ্য খুব কম ক্রিকেটারের আছে। ইনিংসের শুরু থেকে তিনি বিনোদন দিয়ে এসেছেন। একজন খেলোয়াড় ও ব্যক্তি হিসেবে তাঁর প্রতি আমার সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা রয়েছে। ওটাগো ক্রিকেটে তাঁর অবদান অপরিসীম।’ মঙ্গলবার বিদায়ী ম্যাচে রাদারফোর্ডকে সম্মান জানানো হবে বলেও জানিয়েছেন কোগান।