একসময় ছিল ‘বিগ থ্রি’। তবে ক্রিকেটে আর্থিক দাপটে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের সেই ‘বিগ থ্রি’ বেশি দিন টেকেনি। অবশ্য নতুন প্রস্তাবিত লভ্যাংশ ভাগাভাগির মডেলে ভারতই হতে যাচ্ছে ‘বিগ ওয়ান’। তবে নতুন এই মডেলে খুশি নয় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
ক্রিকইনফোর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪-২৭ চক্রে আইসিসির লভ্যাংশের ৩৮.৫ শতাংশ পাবে ভারত একাই। দুইয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়া সেখানে পাবে ৬.৮৯ শতাংশ। পাকিস্তানের ভাগে আসবে ৫.৭৫ শতাংশ, বাংলাদেশ পাবে ৪.৪৬ শতাংশ। আইসিসির পূর্ণ সদস্য ১২ দেশ পাবে মোট ৮৮.৮১ শতাংশ, বাকি অর্থ যাবে ৯৬টি সহযোগী দেশের মধ্যে।
তবে প্রস্তাবিত এ মডেলে সন্তুষ্ট নন পিসিবি চেয়ারম্যান নাজাম শেঠি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি লন্ডন থেকে বলেছেন, ‘আইসিসিকে আমাদের বলতে হবে, কীভাবে এ অঙ্কটা ঠিক করা হলো। এখনকার যে অবস্থা, তাতে আমরা খুশি নই।’
এখনো অবশ্য এই মডেল চূড়ান্ত হয়নি। আগামী মাসে আইসিসির বোর্ড সভায় ভোটাভুটির পরই ঠিক হবে সেটি। সেখানে পিসিবি এর বিপক্ষে যেতে পারে, এমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন নাজাম, ‘জুনে আইসিসির বোর্ড যখন এই আর্থিক মডেল অনুমোদনের প্রত্যাশা করছে, আমাদের বিস্তারিত না জানালে আমরা অনুমোদন দেব না।’
শেঠি বলেছেন, এরই মধ্যে বিসিসিআইয়ের সচিব জয় শাহর নেতৃত্বে আইসিসির ফিন্যান্স ও কমার্শিয়াল অ্যাফেয়ার্স কমিটি কীভাবে এই অঙ্ক ঠিক করল, সে ব্যাপারে আইসিসির কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছেন তাঁরা। শেঠির মতে, অন্তত আরও দুটি টেস্ট খেলুড়ে দেশ প্রস্তাবিত এ মডেলে অখুশি।
পিসিবি প্রধানের মতে, নীতিগত দিক দিয়ে ভারতেরই বেশি পাওয়া উচিত। তবে সেটি কীভাবে নির্ধারিত হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। কোনো দেশের পুরুষ ও মহিলা দলের পারফরম্যান্স, আইসিসির বাণিজ্যিক লভ্যাংশের অবদানের ব্যাপারগুলো বিবেচনায় আনা হয়েছে এমন মডেল তৈরিতে, জানা গেছে এমন। তবে রয়টার্স আইসিসির কারও কাছ থেকে কোনো ব্যাখ্যা এ ব্যাপারে পায়নি।
ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক ক্রিকেট লিগগুলোর কারণে এমনিতেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বেশ চাপে আছে। এসব ফ্র্যাঞ্চাইজির একটা বড় অংশ আবার ভারতীয় মালিকানার। এদিকে যুক্তরাজ্যের সংবাদপত্র টাইমসে লেখা নিজের কলামে সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইক আথারটন আইসিসির আর্থিক এ মডেলের সমালোচনা করেছেন। তাঁর মতে, এর মাধ্যমে ক্রিকেটের বর্তমান বৈষম্য আরও বড় হয়ে উঠবে।
আথারটন লিখেছেন, ‘যদি এই ব্যবস্থা অনুমোদিত হয়, তাহলে শক্তিশালীরা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে, দুর্বলরা তুলনামূলক আরও দুর্বল হয়ে পড়বে। আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আরও কম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে পড়বে। যেটি দীর্ঘ মেয়াদে কারও স্বার্থই পূরণ করবে না।’