মাহমুদউল্লাহ আরও দুটি ম্যাচ খেলবেন। তারপর বিদায় নেবেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে। তাতে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলার তালিকায় যৌথভাবে তৃতীয় স্থানে উঠে আসবেন বাকি দুই ম্যাচ খেলার পর। বাংলাদেশ থেকে তাঁর কাছাকাছি থাকবেন ১২৯ ম্যাচ খেলা সাকিব আল হাসান।
কিন্তু সাকিব তো এবার ভারত সিরিজেই কানপুর টেস্টের আগে টেস্টের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি থেকেও অবসর ঘোষণা করেছেন। অর্থাৎ ভবিষ্যতে যা–ই হোক, বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মধ্যে মাহমুদউল্লাহ আপাতত থেকে যাবেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে একটি ধারাও কিন্তু খেয়াল করা যায়।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহর যত রেকর্ড, তার ধারেকাছে কোনো না কোনোভাবে আছেন সাকিব। কিংবা সাকিব এগিয়ে, তার ধারেকাছে মাহমুদউল্লাহ।
যেমন ধরুন, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়ক হিসেবে ৪৩ ম্যাচ খেলেছেন মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশের হয়ে এটি রেকর্ড। দ্বিতীয় কে? ৩৯ ম্যাচে অধিনায়কত্ব করা সাকিব। কিন্তু ম্যাচ জয়ে আবার দুজনে সমানে সমান। মাহমুদউল্লাহর মতো সাকিবের নেতৃত্বেও ১৬টি করে ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। ব্যাটিংয়ে তাকালে দুজনের মধ্যে মিল খুঁজে পাওয়া যায় আরও একটি—এই সংস্করণে দুজনের ব্যাটিং গড়ই ২৩–এর ঘরে। মাহমুদউল্লাহর ২৩.৪৮, সাকিবের ২৩.১৯।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত ছিলেন ২৬ বার। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে মাহমুদউল্লাহ এ তালিকায় শীর্ষে, সাকিব ১৭ বার অপরাজিত থেকে দ্বিতীয়। দুজনে পাশাপাশি আরও একটি জায়গায়। অপরাজিত থাকা ইনিংসগুলোয় স্ট্রাইক রেটের হিসাবেও খুব কাছাকাছি দুজন। অন্তত ১৫ বার অপরাজিত ছিলেন—বাংলাদেশের এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে শুধু মাহমুদউল্লাহ ও সাকিবের স্ট্রাইক রেটই ১৪০–এর ওপরে। আর রানের বিষয়টি নিশ্চয়ই আপনার জানা।
২৩৯৫ রান নিয়ে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মাহমুদউল্লাহ। ২৫৫১ রান নিয়ে শীর্ষে সাকিব। মাহমুদউল্লাহ যেহেতু আরও দুটি ম্যাচ খেলবেন, তাই ১৫৬ রানের এই ব্যবধান কমার সম্ভাবনাই বেশি। এমনকি এই শেষ দুই ম্যাচে দুটি ভালো ইনিংস খেলে ফেললে মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব চলে আসবেন আরও কাছাকাছি।
ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রথম ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ। ধরুন, আজ দিল্লিতে দ্বিতীয় ম্যাচ ও হায়দরাবাদে তৃতীয় ম্যাচ জিতল বাংলাদেশ। তখন কী হবে? আনন্দ-উল্লাস তো হবেই, এর পাশাপাশি রেকর্ড বইয়েও একটি হিসাব পাল্টে যাবে।
তখন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অন্তত ৫০ ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের অংশ হয়ে থাকার গৌরবতিলক থাকবে শুধু সাকিব-মাহমুদউল্লাহর। আপাতত তা শুধুই সাকিবের। বাংলাদেশের ৫২টি জয়ের অংশ সাকিব। মাহমুদউল্লাহ ৪৯টি জয়ের অংশ।
হায়দরাবাদে শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি খেলার পর এই সংস্করণে মাহমুদউল্লাহর ক্যারিয়ারের বয়স হবে ১৭ বছর ৪১ দিন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি হবে কোনো খেলোয়াড়ের তৃতীয় দীর্ঘ ক্যারিয়ার। বাংলাদেশ থেকে শুধু আর একজন খেলোয়াড়ের আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারই ১৭ বছর টিকে থেকেছে। ঠিকই ধরেছেন। সাকিব আল হাসান। ১৭ বছর ২০৯ দিন। এই সংস্করণে তাঁর ক্যারিয়ারই দীর্ঘতম।