বিশ্বকাপে এখনো অপরাজেয় ভারত
বিশ্বকাপে এখনো অপরাজেয় ভারত

বিশ্বকাপের অর্ধেক পথ পেরিয়ে কোথায় দাঁড়িয়ে দলগুলো

শুধু ভারতই ‘কলঙ্কহীন’!

না, মানে ‘কলঙ্ক’ বলতে ‘হার’ বোঝানো হয়েছে। চলতি বিশ্বকাপে ৬ ম্যাচ খেলে এখনো অপরাজিত রোহিত শর্মার দল। বাকি ৯টি দলের কেউই ‘অক্ষত’ থাকতে পারেনি। কোনো না কোনোভাবে হারের রক্তক্ষরণ হয়েছে।

কিন্তু ভারত কোনো ম্যাচ না হেরে ৬ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে। পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষ চারে থাকা বাকি তিন দল দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। শেষ দুই দল হেরেছে ২টি করে ম্যাচ। ১ ম্যাচ হেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

এখন পর্যন্ত ৬টি করে ম্যাচ খেলেছে সব দল (গতকাল বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের আগ পর্যন্ত)। সর্বোচ্চ ৫টি করে ম্যাচ হেরেছে ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশ। ৪টি করে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও নেদারল্যান্ডস এবং ৩ ম্যাচ হেরেছে আফগানিস্তান। পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষ চার দল এখন সেমিফাইনাল নিশ্চিতের লক্ষ্যে নিশ্চয়ই নিজেদের খেলার ‘ফাইন টিউনিং’ করবে। ভুলগুলো হচ্ছে কোথায়, সেগুলো কীভাবে ঠিক করা যায়—এসব আরকি।

এই শীর্ষ চার থেকে একাধিক দলকে হটিয়ে সেখানে জায়গা করে নিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিতের চেষ্টা করবে বাকি দলগুলো। যদিও বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের সুযোগ এরই মধ্যে মোটামুটি শেষ হয়ে গেছে। তবু টুর্নামেন্ট যেহেতু বিশ্বকাপ, তাই আনুষ্ঠানিকতার ম্যাচেও জিততে মরিয়া থাকে দলগুলো। আর সেমিফাইনালে ওঠার সুযোগ থাকলে তো কথাই নেই! তাই মাঠে কী ঠিক হচ্ছে, আর কী কী ভুল হচ্ছে, সেগুলো কীভাবে শুধরে নেওয়া যায় বাকি ম্যাচগুলোয়—দলগুলোর ড্রেসিংরুমে এখন নিশ্চিতভাবেই এসব নিয়ে ‘হোমওয়ার্ক’ হচ্ছে। আইসিসির ওয়েবসাইটে করা বিশ্লেষণ থেকে পাঠকও জেনে নিতে পারেন এসব নিয়ে কিছু পর্যালোচনা:

বিশ্বকাপে দুর্দমনীয় ফর্মে আছে ভারত

ভারত (৬ জয়, হার ০) :

শক্তি: দাপুটে ব্যাটসম্যান ও বোলার

২০১১ সালের পর এই প্রথম ভারতে আয়োজিত হচ্ছে বিশ্বকাপ। স্বাগতিকেরা টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই দারুণ ফর্মে। দাপুটে ব্যাটিং ও বোলিংয়ে জিতেছে টানা ৬ ম্যাচ। রান তাড়া কিংবা বোলিংয়ের শুরুটাও দুর্দান্ত হচ্ছে ভারতের। টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত ৬ ম্যাচে সম্ভাব্য ৬০ উইকেটের মধ্যে ৫৬টি নিয়েছেন ভারতের বোলাররা। অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের মতো দল ভারতের বোলারদের বিপক্ষে পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করতে পারেনি। ৫টি ইনিংসে রান তাড়া করে জিতেছে ভারত এবং তাতে দারুণ ভূমিকা ছিল বিরাট কোহলি ও রোহিতের।

দুর্বলতা: হার্দিক পান্ডিয়ার চোট

বিশ্বকাপ এগিয়ে চলার সঙ্গে আরও কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে পারে ভারত। আর তাতে হার্দিক পান্ডিয়া অনুপস্থিত থাকলে ভুগতে পারে স্বাগতিকেরা। বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে গোড়ালিতে চোট পেয়েছিলেন ভারতের এই পেস অলরাউন্ডার। মোহাম্মদ শামি তাঁর জায়গায় দলে ঢুকে দারুণ বোলিং করলেও একাদশে একজন পেস অলরাউন্ডারের অনুপস্থিতি ভোগাতে পারে রোহিতের দলকে।

ম্যাচ বাকি: শ্রীলঙ্কা (২ নভেম্বর), দক্ষিণ আফ্রিকা (৫ নভেম্বর) ও নেদারল্যান্ডস (১২ নভেম্বর)

দক্ষিণ আফ্রিকা (৫ জয়, হার ১) :

শক্তি: আগে ব্যাট করে রানের পাহাড়

ওপেনিং থেকে মিডল অর্ডারের শেষ পর্যন্ত বিস্ফোরক সব ব্যাটসম্যান। কুইন্টন ডি কক থেকে হাইনরিখ ক্লাসেন হয়ে ডেভিড মিলার! আর এই ব্যাটিং শক্তি নিয়ে চার ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৩০০–এর বেশি স্কোর গড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই তুলেছিল রেকর্ড গড়া ৪২৮। এইডেন মার্করাম, রাসি ফন ডার ডুসেন ও মার্কো ইয়ানসেনরাও কার্যকর সব ইনিংস খেলছেন। এই ব্যাটিং অর্ডারে কেউ টিকে গেলে তা প্রতিপক্ষের জন্য যথেষ্ট দুশ্চিন্তার।

দক্ষিণ আফ্রিকার অনুশীলনে ফুরফুরে মেজাজে ক্লাসেন–মার্করামরা

দুর্বলতা: রান তাড়া

বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত ২ ম্যাচে রান তাড়া করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এর মধ্যে হেরেছে একটিতে, বাকি ম্যাচে জিতেছে সৌভাগ্যবান হিসেবে! নেদারল্যান্ডসের ২৪৫ রান তাড়া করতে নেমে ৩৮ রানে হেরেছিল প্রোটিয়ারা। এবার বিশ্বকাপেই এটি অন্যতম অঘটন। আর পাকিস্তানের বিপক্ষে রান তাড়া করে জিতেছে ১ উইকেটে।

ম্যাচ বাকি: নিউজিল্যান্ড (১ নভেম্বর), ভারত (৫ নভেম্বর) ও আফগানিস্তান (১০ নভেম্বর)।

নিউজিল্যান্ড (৪ জয়, হার ২) :

শক্তি: উঠতি তারকারা

রাচিন রবীন্দ্র! বিশ্বকাপে অভিষেক ম্যাচেই সেঞ্চুরি করেছেন। পরে আরও একটি সেঞ্চুরি, ফিফটিসহ এখন তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। বিশ্বকাপে এসেই মাত করে দিয়েছেন ২৩ বছর বয়সী এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার। ড্যারিল মিচেল ও ডেভন কনওয়েদের পাশাপাশি নিউজিল্যান্ডের অন্য তরুণ ক্রিকেটারেরাও টুর্নামেন্টে আলো ছড়াচ্ছেন।

দুর্বলতা: চাপে গড়বড়

নিউজিল্যান্ড টেবিলের শীর্ষ চারে (তৃতীয়) থাকলেও সেমিফাইনাল আগেভাগেই নিশ্চিতের সুযোগ ছিল। যে দুই ম্যাচে হেরেছে, এ দুটি ম্যাচেই জয়ের সুযোগ ছিল কিউইদের। কিন্তু ম্যাচের কিছু মুহূর্তে চাপ কাটিয়ে উঠতে পারেনি কেইন উইলিয়ামসনের দল। ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চাপের দুটি ম্যাচে হেরেছে নিউজিল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও চাপ কাটিয়ে উঠতে পারেনি তারা।

ম্যাচ বাকি: দক্ষিণ আফ্রিকা (১ নভেম্বর), পাকিস্তান (৪ নভেম্বর) ও শ্রীলঙ্কা (৯ নভেম্বর)।

টুর্নামেন্ট এগিয়ে চলার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়াও নিজেদের মেলে ধরছে

অস্ট্রেলিয়া (৪ জয়, হার ২):

শক্তি: টপ অর্ডার ভয়ংকর

ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্রুত উইকেট হারানোয় অস্ট্রেলিয়ান টপ অর্ডারকে দুর্বল মনে হয়েছিল। কিন্তু মিচেল মার্শ-ডেভিড ওয়ার্নাররা এর পর থেকেই যেন ফুঁসে উঠেছেন! শেষ ৩ ম্যাচে ৪ শতক তুলে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়ান টপ অর্ডার। ওয়ার্নার নিজে দুটি শতকের পাশাপাশি ৮১ রানের ইনিংস খেলেছেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। ট্রাভিস হেড চোট কাটিয়ে আসার পর দলের শক্তি আরও বেড়েছে। ছন্দে আছেন মিচেল মার্শও। এই তিন ব্যাটসম্যান মিলে যেকোনো বোলিং গুঁড়িয়ে দিতে পারেন।

দুর্বলতা: ধীরে শুরুতে বিপদে

ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে প্রথম দুই ম্যাচ হেরে নিজেদের বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। পরে টানা ৪ ম্যাচ জিতে ঘুরে দাঁড়ালেও সেমিফাইনাল এখনো নিশ্চিত হয়নি। প্রথম দুই ম্যাচে হেরে শুরুটা মন্থর হওয়ার মাশুল দিচ্ছে প্যাট কামিন্সের দল।

ম্যাচ বাকি: ইংল্যান্ড (৪ নভেম্বর), আফগানিস্তান (৭ নভেম্বর) ও বাংলাদেশ (১১ নভেম্বর)।

আফগানিস্তান (৩ জয়, হার ৩):

শক্তি: জায়ান্ট কিলার

শেষ বিশ্বকাপে ১ ম্যাচ জিতেছিল আফগানিস্তান। কিন্তু এবার এরই মধ্যে জিতেছে ৩ ম্যাচ। বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারানোর পাশাপাশি জিতেছে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও। পরের ম্যাচ যেহেতু নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে, তাই আফগানিস্তানের সেমিফাইনালে ওঠার আশাটা ধীরে ধীরে গাঢ় হওয়াই স্বাভাবিক।

দুর্বলতা: ভঙ্গুর মিডল অর্ডার

নিজেদের শেষ ৪ ম্যাচের ৩টিতে জিতেছে আফগানিস্তান। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে হারটা নিশ্চিতভাবেই পোড়াচ্ছে রশিদ খান-মোহাম্মদ নবীদের। সে ম্যাচে ২ উইকেটে ১১২ তুলে ফেললেও বাকি ৮ উইকেট হারিয়েছে ৪৪ রানে। তাই মিডল অর্ডার নিয়ে শঙ্কা আছে আফগানিস্তানের। বাকি তিন ম্যাচে কঠিন পরিস্থিতিতে যা বিপদের কারণ হতে পারে।

ম্যাচ বাকি: নেদারল্যান্ডস (৩ নভেম্বর), অস্ট্রেলিয়া (৭ নভেম্বর) ও দক্ষিণ আফ্রিকা (১০ নভেম্বর)।

এবার বিশ্বকাপে চমক দেখাচ্ছে আফগানিস্তান

শ্রীলঙ্কা (২ জয়, হার ৪):

শক্তি: নিশাঙ্কার ফর্ম

ওপেনার পাতুম নিশাঙ্কা বিশ্বকাপে দারুণ ফর্মে আছেন। টানা ৪ ম্যাচে পেয়েছেন ফিফটি। শেষ ৫ ইনিংসের প্রতিটিতেই ভালো শুরু পেয়েছেন। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪৬ রানে আউট না হলে বিশ্বকাপে টানা পাঁচ ফিফটির রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলতেন নিশাঙ্কা।

দুর্বলতা: চোট

চোটের কারণে তারকা স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে ছাড়াই বিশ্বকাপে এসেছে শ্রীলঙ্কা। বিশ্বকাপেও চোটে জর্জরিত হয়েছে দল। অধিনায়ক দাসুন শানাকা, পেসার লাহিরু কুমারা ও মাতিশা পাতিরানাও চোটে পড়েছেন। তাঁদের জায়গায় এসেছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, চামিকা করুনারত্নে ও দুষ্মন্ত চামিরা। অর্থাৎ, চোটের কারণে সেরা একাদশ খেলাতে পারছে না শ্রীলঙ্কা।

ম্যাচ বাকি: ভারত (২ নভেম্বর), বাংলাদেশ (৬ নভেম্বর) ও নিউজিল্যান্ড (৯ নভেম্বর)।

পাকিস্তান (২ জয়, হার ৪):

শক্তি: দুর্দান্ত শাহিন শাহ আফ্রিদি

শাহিন আফ্রিদি ছন্দে ফিরতে কয়েক ম্যাচ সময় নিয়েছেন। কিন্তু এখন তিনি দারুণ নেতৃত্ব দিচ্ছেন পাকিস্তানের বোলিং বিভাগের। বাংলাদেশের বিপক্ষে গতকাল ম্যাচে ৩ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় শীর্ষ স্থানে ভাগ বসিয়েছেন আফ্রিদি। এই বিশ্বকাপে পেসারদের মধ্যে তাঁর উইকেটসংখ্যাই সর্বোচ্চ। বাংলাদেশের মুখোমুখি হওয়ার আগে ৬ ম্যাচে মোট ৪২ উইকেট নিয়েছে পাকিস্তান। এর মধ্যে ৩১ উইকেটই পেসারদের। আর এই পেস বিভাগের নেতৃত্বেই দিন দিন আরও ধারালো হয়ে উঠছেন শাহিন আফ্রিদি।

দুর্বলতা: বারুদহীন টপ অর্ডার

পাকিস্তানের ওপেনাররা এবং অধিনায়ক বাবর আজম রান পেলেও সেখানে পোড়া বারুদের গন্ধ অনুপস্থিত। এখনো কেউ বিস্ফোরক কোনো ইনিংস খেলতে পারেননি। সে কারণে দ্রুত রান তোলার চাপটা পড়ছে মিডল অর্ডারের ওপর। ইফতিখার আহমেদ, সৌদি শাকিল ও শাদাব খানরা চেষ্টা করছেন, কিন্তু অন্য দলের মিডল অর্ডারের মতো বিস্ফোরক ইনিংস খেলতে পারেননি।

ম্যাচ বাকি: নিউজিল্যান্ড (৪ নভেম্বর) ও ইংল্যান্ড (১১ নভেম্বর)।

দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া পাকিস্তান সব সময়ই বিপজ্জনক

নেদারল্যান্ডস (২ জয়, হার ৪):

শক্তি: অঘটনপটিয়সী

গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। এবার ওয়ানডে বিশ্বকাপেও একই প্রতিপক্ষকে হারিয়ে চমক দেখিয়েছে স্কট এডওয়ার্ডসের দল। ৭৮ রান করে ডাচদের জয়ে অধিনায়ক নিজে রেখেছিলেন দারুণ অবদান। এরপর বাংলাদেশকেও হারিয়েছে তারা।
দুর্বলতা: হাল ছেড়ে দেওয়া

প্রতিপক্ষের কেউ চড়াও হতে শুরু করলে বোলাররা কীভাবে যেন লাইন-লেংথ হারিয়ে ফেলেন! অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্রুততম শতকের ইনিংসটি খেলার সময় ডাচদের এমন হাল দেখা গেছে। দ্রুত কিছু উইকেট পড়লেও হাল ছেড়ে দেওয়ার ‘বদ–অভ্যাস’ আছে দলটির। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৯০ রানে অলআউট হওয়ার পথে ৬ রানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়েছে নেদারল্যান্ডস।

বাংলাদেশ (১ জয়, হার ৫):

শক্তি: পেসাররা ভবিষ্যতের আলো

বিশ্বকাপে অভিজ্ঞ স্কোয়াড নিয়ে এসেও চরমভাবে ভুগছে বাংলাদেশ। তবে পেসাররা একদম খারাপ করছেন না। ৮ উইকেট নেওয়া শরীফুল ইসলাম ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সম্পদ। প্রতিপক্ষকে সমস্যায় ফেলতে পারেন তাসকিন আহমেদও।

দুর্বলতা: ভালো শুরু পেয়েও শেষটা হতাশার

টুর্নামেন্টের শুরুতে মনে হয়েছিল, বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ বেশ গভীর। সাতে ব্যাট করতে হয় মাহমুদউল্লাহর মতো ব্যাটসম্যানকে। পরে তাঁকে ওপরে নিয়ে আসা হলেও ভালো শুরু কাজে লাগাতে পারছে না বাংলাদেশ। শুধু মাহমুদউল্লাহ শতক পেয়েছেন। ফিফটি পেয়েছেন ৬ জন। দুটি করে ফিফটি পেয়েছেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম।

ম্যাচ বাকি: শ্রীলঙ্কা (৬ নভেম্বর) ও অস্ট্রেলিয়া (১১ নভেম্বর)।

ইংল্যান্ড (১ জয়, হার ৫):

শক্তি: বিদায়ের আগে টপলির আলো ছড়ানো

ইংল্যান্ডের হয়ে এই বিশ্বকাপে সেরা পারফরমার পেসার রিস টপলি দলের প্রথম ম্যাচে জায়গা পাননি। পরে দলে ফিরে দারুণ পারফর্ম করলেও চোটের কারণে তাঁর বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেছে। টপলি বাংলাদেশের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের জয়ের ম্যাচে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হারের ম্যাচে নিয়েছেন ৩ উইকেট, যা বিশ্বকাপে কাজে না লাগলেও ভবিষ্যতের জন্য শক্তি হিসেবে দেখাই যায়।

এবার বিশ্বকাপে শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ ইংল্যান্ড

দুর্বলতা: অভিজ্ঞদের ব্যর্থতা

এবারের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের সমস্যাতালিকার শেষ নেই! এর মধ্যে অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের একসঙ্গে ছন্দ হারানো সবচেয়ে দুশ্চিন্তার। ব্যাটিংয়ে যেমন রান পাচ্ছেন না জনি বেয়ারস্টো ও জস বাটলারের মতো তারকা। বেন স্টোকসের মতো প্রিমিয়ার অলরাউন্ডারের ব্যাটেও রান নেই। দুই পেসার মার্ক উড ও স্যাম কারেনও প্রত্যাশানুযায়ী খেলতে পারছেন না।

ম্যাচ বাকি: অস্ট্রেলিয়া (৪ নভেম্বর), নেদারল্যান্ডস (৮ নভেম্বর) ও পাকিস্তান (১১ নভেম্বর)।