২৩৮ রানের বড় জয়ে এশিয়া কাপ শুরু করেছে পাকিস্তান
২৩৮ রানের বড় জয়ে এশিয়া কাপ শুরু করেছে পাকিস্তান

বাবর-ইফতিখারের সেঞ্চুরির পর নেপালকে গুঁড়িয়ে দিল পাকিস্তান

নেপালের জন্য ম্যাচটি ছিল ঐতিহাসিক—এশিয়া কাপে প্রথম, পাকিস্তানের বিপক্ষে যেকোনো সংস্করণেই প্রথম ম্যাচ। মুলতানে শুরুটাও নেপালিজরা করেছিল আশাজাগানিয়া, ২৫ রান তুলতেই দুই ওপেনারকে হারায় পাকিস্তান। এরপর ব্যাটিংয়ে শাহিন শাহ আফ্রিদির প্রথম দুই বলে দুই চার মারেন কুশল ভুরতেল। তবে এ ম্যাচে নেপালের সুখস্মৃতি যেন অতটুকুই।

বাবর আজমের রেকর্ড গড়া সেঞ্চুরি, ইফতিখার আহমেদের টর্নেডো ইনিংসের পর পাকিস্তানি বোলারদের তোপে ঐতিহাসিক মুহূর্ত ম্লান হয়ে গেছে নেপালের। ২৩৮ রানের বড় জয়ে এশিয়া কাপ শুরু করেছে পাকিস্তান। এ টুর্নামেন্টে রানের হিসাবে এর চেয়ে বড় জয় আছে মাত্র একটি। ২০০৮ সালে করাচিতে হংকংকে ২৫৬ রানে হারিয়েছিল ভারত। নিজেদের ইতিহাসে অবশ্য এর চেয়ে বড় ব্যবধানে আরও দুটি জয় আছে পাকিস্তানের।

টসে জিতে ব্যাটিং নেয় পাকিস্তান। মুলতানের উইকেট অবশ্য ছিল ধীরগতির। দুই ওপেনার ফেরার পর মোহাম্মদ রিজওয়ানকে নিয়ে ৮৬ রানের জুটিতে পুনর্গঠনের কাজটি করেন বাবর। তবে রিজওয়ানের অদ্ভুত রানআউটের পর সালমান আগাও দ্রুত ফিরলে চাপে পড়ে পাকিস্তান। থ্রো থেকে বাঁচতে লাফ দিয়েছিলেন রিজওয়ান, সরাসরি থ্রো ভাঙার সময় ক্রিজের বাইরে ছিলেন তিনি। তবে স্বাভাবিক গতিতে এগোলেও সহজেই ক্রিজে পৌঁছাতে পারতেন।

সেঞ্চুরির পর ইফতিখার, পাশে আরেক সেঞ্চুরিয়ান বাবর

রিজওয়ান-সালমান ফিরলেও এরপর বাবর ও ইফতিখারের পাল্টা আক্রমণের কোনো জবাব দিতে পারেনি নেপাল। পিচ্ছিল ফিল্ডিংও ভুগিয়েছে তাদের। ৫৫ রানে জীবন পান বাবর নিজেই।

সেটির চড়া মূল্যও দিতে হয় নেপালকে। এক ইনিংসেই বাবর খেলেছেন ভিন্ন ভিন্ন গতিতে। ফিফটি করতে তাঁর লাগে ৭২ বল, এরপর সেঞ্চুরিতে যান পরের ৩৭ বলে। আর শেষ ৫১ রান করেন মাত্র ২২ বলে। ১০২তম ইনিংসে বাবরের এটি ১৯তম সেঞ্চুরি, ওয়ানডেতে আর কারও এত দ্রুত এতগুলো সেঞ্চুরি নেই। পাকিস্তানের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরিসংখ্যায় সাঈদ আনোয়ারকে (২০) ছুঁতেও আর একটি প্রয়োজন বাবরের।

অবশ্য বাবর তাঁর ইনিংস গড়তে পেরেছেন অন্য প্রান্তে ইফতিখারের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের সুবাদে। ৪৩ বলে ফিফটি করেছিলেন, সেঞ্চুরিতে যান মাত্র ৬৭ বলে। এশিয়া কাপে এটি চতুর্থ দ্রুততম সেঞ্চুরি। ইফতিখারের ইনিংস ফিরিয়ে এনেছে বিস্মৃত এক ঘটনাও। ২০১৯ সালের মার্চের (মোহাম্মদ রিজওয়ান) পর পাকিস্তানের শীর্ষ তিন ব্যাটসম্যানের বাইরের কেউ সেঞ্চুরির দেখা পেলেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ইফতিখারের এটি প্রথম তিন অঙ্ক। ইনিংসে ১১টি চারের সঙ্গে ৪টি ছক্কা মারেন ইফতিখার। বাবর ও রিজওয়ানের জুটিতে ওঠে ২১৪ রান, পঞ্চম উইকেটে পাকিস্তানের যেটি সর্বোচ্চ।

দাঁড়াতেই পারেনি নেপাল

শাহিন শাহ আফ্রিদির প্রথম দুই বলে দুই চারে নেপালের রান তাড়া শুরু করেন কুশল ভুরতেল। কিন্তু সে পর্যন্তই। সে ওভারে ২ উইকেটের পর পরের ওভারে আরেকটি উইকেট হারায় তারা। ১৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে দারুণ চাপে পড়া নেপালকে নিয়ে একটু এগিয়ে যান সম্পাল কামি ও আরিফ শেখ। চতুর্থ উইকেট জুটিতে দুজন যোগ করেন ৫৯ রান। আরিফকে ফিরিয়ে সে জুটি ভাঙেন হারিস রউফ। নেপালও এরপর বেশিক্ষণ টেকেনি।

এরপর শাদাব খান ও মোহাম্মদ নওয়াজের ঘূর্ণির কবলে পড়ে এশিয়া কাপের নবাগত দলটি। ২৩.৪ ওভারে ১০৪ রান তুলতেই থামে তারা। শাদাব নেন ৪ উইকেট, ২টি করে নেন আফ্রিদি ও রউফ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ৩৪২/৬ (বাবর ১৫১, ইফতিখার ১০৯*, রিজওয়ান ৪৪; কামি ২/৮৫, করন ১/৫৪, লামিচানে ১/৬৯)
নেপাল: ২৩.৪ ওভারে ১০৪ (কামি ২৮, আরিফ ২৬; শাদাব ৪/২৭, রউফ ২/১৬, আফ্রিদি ২/২৭)
ফল: পাকিস্তান ২৩৮ রানে জয়ী