নাসির হোসেন
নাসির হোসেন

ঢাকার জয়ের নায়ক ‘অলরাউন্ডার’ নাসির

বেলা ১২টা বাজতে না বাজতেই মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ফ্লাড লাইট জ্বলে উঠল। না জ্বালিয়ে উপায় কী, ভরদুপুরেই যে সন্ধ্যা নেমেছে।  কুয়াশার ভারী চাদরে সাদা ক্রিকেট বলটা দূর থেকে দেখা মুশকিল। সে জন্যই আলোকস্বল্পতায় খুলনা টাইগার্স ও নতুন দল ঢাকা ডমিনেটরসের ম্যাচ শুরু হলো আধঘণ্টা দেরিতে।

কিন্তু ঠান্ডা আবহাওয়ায় প্রথমে ব্যাট করা খুলনার ব্যাটিং কোনো উত্তাপ ছড়াতে পারল না। মিরপুরে সচরাচর যেমন মন্থর উইকেট দেখা যায়, তেমন উইকেটেই একের পর এক ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন উইকেটে থিতু হওয়ার পর। পুরো ২০ ওভার ব্যাটিং করে ৮ উইকেটে ১১৩ করে থেমেছে খুলনা। ওই রান পেরোতেই শেষ ওভার পর্যন্ত খেলতে হয়েছে ঢাকাকে। অধিনায়ক নাসির হোসেনের অপরাজিত ৩৬ রানের ইনিংসের সৌজন্যে ৫ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটে জিতেছে ঢাকা ডমিনেটরস।

এবারের বিপিএলে দুটি নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজির মধ্যে ঢাকা একটি। টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় পাওয়ার আনন্দটা তাই দেখা গেছে খেলোয়াড়দের শরীরী ভাষায়। জয়টাও ছিল কষ্টার্জিত। সে জন্য অর্জনের আনন্দটাও ছিল মধুর। খুলনার ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নামা ঢাকা শুরুতেই হারিয়েছে ওপেনার আহমেদ শেহজাদকে। হাতে বল লাগায়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাঁকে।

ইনিংস বড় করতে পারেননি সৌম্য

তিনে নামা সৌম্য সরকার ভালো শুরু করলেও ইনিংস দীর্ঘ হয়নি। ব্যক্তিগত ৫ রানের সময় একবার আউট হয়েছিলেন। কিন্তু এডিআরএস (এডিশনাল ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম) নিয়ে রক্ষা পান সৌম্য। শেষ পর্যন্ত ১৩ বলে ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৬ রান করে আউট হন তিনি। ইনিংস বড় হয়নি মোহাম্মদ মিঠুনেরও (১৪ বলে ৮)। তবে চাপের মুখে প্রথমে উসমান গনি ও পরে আরিফুল হকের সঙ্গে জুটি গড়ে ঢাকার জয় নিশ্চিত করেন নাসির। ৩৬ বলে ৩৬ রান করার আগে ২ উইকেট নেওয়া নাসিরই হয়েছেন ম্যাচসেরা।

ঢাকার জয়ের কৃতিত্বটা বোলারদেরও দিতে হয়। তাসকিন আহমেদ, আল আমিন হোসেনদের নিয়ে গড়া বোলিং আক্রমণই যে ঢাকার শক্তি, সেটি আজ টের পেয়েছে খুলনার ব্যাটসম্যানরা। তাসকিনের ৪ ওভারে মাত্র ১৪ রান নিতে পেরেছে খুলনা। আরেক পেসার আল আমিন হোসেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন ৪ ওভারে ২৮ রান দিয়ে। তবে দুই স্পিনার নাসির ও আরাফাত সানিও ভালো করেছেন। দুজনের ৮ ওভারে রান এসেছে মাত্র ৫৩, উইকেট ৪টি।

খুলনার ব্যাটসম্যানরাও যেন খেলছিলেন খোলসবন্দি হয়ে। পাওয়ার প্লেতে তাদের হাত খুলতে দেননি তাসকিন। চোট থেকে ফেরা তামিম ইকবাল ১৫ বল খেলে ৮ রান করে আউট হন সানির বলে স্কয়ার লেগে ক্যাচ দিয়ে। আরেক বাঁহাতি শারজিল খানের উইকেট নেন অধিনায়ক নাসির নিজেই। বাকি কাজটা করেছেন মূলত আল আমিন। ৪ উইকেট নিয়ে ভেঙে দিয়েছেন খুলনার মিডল অর্ডার। সর্বোচ্চ ২৪ রান এসেছে খুলনার অধিনায়ক ইয়াসিরের ব্যাট থেকে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ১১৩/৮ (ইয়াসির ২৪, সাইফউদ্দিন ১৯, আজম ১৮; আল আমিন ৪/২৮, সানি ২/২৪, নাসির ২/২৯)।
ঢাকা ডমিনেটরস: ১৯.১ ওভারে ১১৭/৪ (নাসির ৩৬*, মুনাবিরা ২২, সৌম্য ১৬; সাইফউদ্দিন ২/২২, মিকেরেন ১/১৮, ওয়াহাব ১/৩২)।
ফল: ঢাকা ডমিনেটরস ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নাসির হোসেন