ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবদন্তি ব্রায়ান লারা
ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবদন্তি ব্রায়ান লারা

টেস্ট ক্রিকেটকে বাঁচাতে ‘তিন মোড়লে’র বাইরে অন্যদেরও দায়িত্ব নিতে বললেন লারা

ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বাইরে অন্য দলগুলোকেও টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি গুরুত্বারোপের আহ্বান জানিয়েছেন ব্রায়ান লারা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি এই ব্যাটসম্যান বলেছেন, টেস্ট ক্রিকেটকে বাঁচানোর জন্য অন্যান্য দেশেও টেস্ট ক্রিকেটে মনোযোগ বাড়াতে হবে।

অস্ট্রেলিয়ার ‘দ্য এজ’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।

টি-টোয়েন্টির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তায় কয়েক বছর ধরে টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি দলগুলোর গুরুত্ব কমে যাওয়ার ইঙ্গিত মিলছে। বর্তমানে ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াই টেস্ট বেশি খেলে, বেশির ভাগই নিজেদের মধ্যে। ভারত যেমন বছরের শুরুতে ৫ টেস্টের সিরিজ খেলবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে, বছরের শেষ দিকে সমসংখ্যক টেস্ট আছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। কিন্তু এর বাইরে অন্যান্য দলের টেস্ট সিরিজ দুই বা সর্বোচ্চ তিন টেস্টের সিরিজে সীমাবদ্ধ থাকছে।

অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চলমান টেস্ট সিরিজটিই যেমন দুই ম্যাচের। লারার মতে, টেস্ট ক্রিকেট এখন নির্দিষ্ট কিছু দেশের মধ্যে কেন্দ্রীভূত হয়ে গেছে, যা ছড়িয়ে দেওয়া দরকার, ‘সামগ্রিকভাবে খেলাধুলা খুবই ছোটখাটো একটা জিনিস। আর ক্রিকেটে আপনি কখনোই জানেন না কখন ঢুকছেন, কখন বের হচ্ছেন। শুধু ইংলিশ ক্রিকেট, অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট বা ভারতীয় ক্রিকেট নয়, সব ক্রিকেটের উন্নতির জন্য আমাদের সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।’

টি-টোয়েন্টির কারণে টেস্টে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সর্বশেষ উদাহরণ দক্ষিণ আফ্রিকা। ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট এসএ টোয়েন্টিতে মূল খেলোয়াড়েরা খেলবেন বলে দক্ষিণ আফ্রিকা অনভিজ্ঞ দল পাঠাচ্ছে নিউজিল্যান্ডে। যে দলের সাতজনেরই এখনো অভিষেক হয়নি। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহ যেটির সমালোচনা করতে গিয়ে এটি টেস্ট ক্রিকেটের মৃত্যুর মুহূর্ত নির্ধারণী কি না, প্রশ্নও তুলেছেন।

১৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ১৩১ টেস্ট খেলা লারা দক্ষিণ আফ্রিকার প্রসঙ্গটি টেনে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সবাই নিজেদের সেরা দল গঠন করতে চায়। দক্ষিণ আফ্রিকা যা করেছে, তাদের নিজস্ব একটা কারণ আছে। কিন্তু আমি যখন দলটার দিকে তাকাই, একজনও নেই যাকে আমি চিনি। এখন তিন সংস্করণ একসঙ্গে চালাতে গিয়ে সূচি খুব ঠাসা হয়ে গেছে।’

টেস্ট ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকায়ও ছড়ানো দরকার মন্তব্য করে লারা বলেন, ‘আমার মতো মানুষ যে কিনা টেস্ট খেলেছে, যে খেলাটার জন্য আমার ভালোবাসা আছে, আমি সেই খেলাটার মরণ দেখতে চাই না। আমি আশা করি ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড ত্রিভুজের বাইরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকায়ও টেস্টের গুরুত্ব ফিরে আসুক।’