মাঠ ও মাঠের বাইরের নানা সমস্যা দূর করতে কী করা উচিত, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের মতামত চাইছে কমিটি।
একটু দূর থেকে যাঁরা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে দেখেন, তাঁদের কাছে নাভানা টাওয়ার বিস্মৃতপ্রায় এক নাম হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্তদের কাছে তা নয়। গুলশানের এই ভবনেই একসময় ছিল বিসিবির প্রধান কার্যালয়, বিসিবির শাখা হিসেবে এখনো যেটি মাঝেমধ্যেই সক্রিয় হয়ে ওঠে।
বর্তমানে সেখানেই পূর্বাচলের শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের কার্যালয়। এ ছাড়া বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বাজে পারফরম্যান্স ও ভবিষ্যৎ করণীয় ঠিক করার কাজটাও বিসিবির বিশেষ কমিটি করছে এই অফিস থেকেই।
বিসিবির পরিচালক এনায়েত হোসেনের নেতৃত্বে আরও দুই পরিচালক মাহবুবুল আনাম ও আকরাম খানকে নিয়ে গঠিত বিশেষ কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেছে গত পরশু। প্রথম দিন তাঁরা ডেকেছিলেন দুই নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন ও হাবিবুল বাশার এবং বিশ্বকাপ দলে থাকা দুই ক্রিকেটার মোস্তাফিজুর রহমান ও লিটন দাসকে।
কাল দ্বিতীয় দিনে বিশেষ কমিটির সামনে হাজির হন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ ও দলের ম্যানেজার রাবীদ ইমাম। বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ খেলতে নাসুম ছিলেন চট্টগ্রামে। সেখান থেকে বিমানে করে ঢাকায় এসে বিশেষ কমিটির সঙ্গে কথা বলে আবার চট্টগ্রামে চলে গেছেন নাসুম।
বিশ্বকাপ–ব্যর্থতা নিয়ে কমিটির সামনে কে কী বলছেন, সেসব স্বাভাবিকভাবেই গোপন রাখা হচ্ছে। পরশু কমিটির সঙ্গে কথা বলার পর উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি মিনহাজুল ও হাবিবুল। কাল মুঠোফোনে ম্যানেজার রাবীদ ইমামের কাছে সাক্ষাতের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনিও কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। মুঠোফোনে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি নাসুমের সঙ্গে।
পরশু প্রথম দিনের আলোচনা শেষেই অবশ্য কমিটির প্রধান এনায়েত হোসেন বলেছিলেন, তাঁরা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছেন। সবার সঙ্গে কথা বলা শেষে কমিটি তাঁদের রিপোর্ট বোর্ডে জমা দেবে, যাতে ভবিষ্যতের জন্য কিছু সুপারিশও থাকবে। এরপর বোর্ড থেকেই যা উদ্যোগ নেওয়ার নেওয়া হবে, বিশ্বকাপ–ব্যর্থতার পর্যালোচনা সম্পর্কে জানানো হবে সংবাদমাধ্যমকেও। অবশ্য অতীতে এ ধরনের তদন্ত রিপোর্ট সংবাদমাধ্যম পর্যন্ত আসার উদাহরণ নেই।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বকাপের দল নির্বাচনপ্রক্রিয়া থেকে শুরু করে ক্রিকেটারদের মাঠের পারফরম্যান্স, মাঠের বাইরে কোচ–ক্রিকেটারদের আচরণ; বিশেষ করে প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের বিরুদ্ধে অন্য কোচিং স্টাফ সদস্যদের সঙ্গে অসহযোগিতামূলক আচরণ ও কিছু জুনিয়র ক্রিকেটারের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের যে অভিযোগ উঠেছে; সেসব বিষয়েই দলসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্য জানতে চাইছে কমিটি। এ ছাড়া ভবিষ্যতে মাঠ ও মাঠের বাইরের এসব সমস্যা দূর করতে কী করা উচিত, সে ব্যাপারেও মতামত জানতে চাওয়া হচ্ছে।
কমিটি যদিও চাইছে তাদের পর্যালোচনা রিপোর্ট ও সুপারিশ যত দ্রুত সম্ভব বোর্ডে জমা দিয়ে দিতে, সম্ভব হলে আসন্ন নিউজিল্যান্ড সফরের আগেই; তবে কাজটা একটু কঠিন হবে বলেই মনে হচ্ছে। মিরপুরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে আগামীকাল। দলের সঙ্গে থাকা কোচ–ক্রিকেটারদের এই টেস্ট চলাকালীন বিশ্বকাপ–ব্যর্থতার আলোচনায় ডাকার কথা নয়।
ওদিকে টেস্ট যেদিন শেষ হবে, সেদিন রাতেই তিন ওয়ানডে ও তিন টি–টোয়েন্টির সিরিজ খেলতে নিউজিল্যান্ডের বিমান ধরার কথা বাংলাদেশের। তার ওপর এখনো কথা বলা হয়নি বিশ্বকাপের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের সঙ্গেই। মাগুরা–১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন সাকিব। দলীয় নেতা–কর্মীদের সঙ্গে সভা করতে আজ মাগুরা যাওয়ার কথা আছে তাঁর। নিউজিল্যান্ড সিরিজের ব্যস্ততা থাকায় কোচ হাথুরুসিংহেকেও পাওয়া যাচ্ছে না সহসা।