বার্ষিক সাধারণ সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান
বার্ষিক সাধারণ সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান

বাণিজ্য করবে না বিসিবি, বললেন নাজমুল হাসান

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হওয়ার সুযোগ নেই। শেয়ার বিক্রি বা শেয়ার কেনারও কোনো পরিকল্পনা নেই। বিসিবির সাধারণ পরিষদের বার্ষিক সভা শেষে হোটেল সোনারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে আজ এ কথা বলেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান।

বার্ষিক সভায় বিসিবির গঠনতন্ত্রে দুটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ৬–এর উপ–অনুচ্ছেদ ৬.১৭ ও উপ–অনুচ্ছেদ ৬.২০–এর সংশোধনী প্রস্তাব দুটিকে কেন্দ্র করে কৌতূহল ছড়িয়েছিল—বিসিবি কি তাহলে লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠতে বাণিজ্যিক দিকে যাচ্ছে? এমনকি বিসিবি শেয়ারবাজারে যাচ্ছে—ছড়িয়েছিল এমন গুঞ্জনও

সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান সংশোধনী প্রস্তাব দুটি অনুমোদন হওয়ার কথা জানানোর পর এক প্রশ্নের জবাবে সংস্থার প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘বিসিবির বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হয়ে ওঠার কোনো সুযোগ নেই। এটা বিভ্রান্তিকর তথ্য। ব্যাংকিং কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে আইনি পরামর্শ মেনেই এটা (সংশোধনী) করা হয়েছে। বিসিবি টিভি করার পরিকল্পনার কারণে বিসিবিকে আইনগত কাঠামোর মধ্যে আসতে হবে। এ জন্যই মূলত এই দুটি সংশোধনী। বিসিবির সংশোধনীতে বলা আছে, ঝুঁকিবিহীন বিনিয়োগ। এটা সব সময় আমাদের মাথায় রাখতে হবে।’

এ সময় বিসিবির শেয়ারবাজারে যাওয়ার গুঞ্জন খণ্ডন করে বোর্ড সভাপতি পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘কে শেয়ার কিনবে? শেয়ার কিনতে যাব কেন?’ তিনি বলেন, ‘আইনের ধারায় অনেক কিছু লেখা থাকে, যেহেতু আইনটা সবার জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু আমরা তো সব করব না। আমরা সেটুকুই করব, যেটা আমাদের জন্য প্রযোজ্য। আমরা শেয়ারের ব্যবসা করি নাকি? আমরা তো ক্রিকেট বোর্ড!’ শেয়ার বিক্রি করা বা শেয়ার কেনার কোনো পরিকল্পনা বিসিবির নেই বলেও স্পষ্ট করেছেন তিনি।

বিসিবি টেলিভিশন চালুর উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে নাজমুল হাসান বলেন, ‘উদ্দেশ্যটা হচ্ছে যেকোনো ধরনের খেলা (ক্রিকেট) দেখানো। আমাদের এখানে দুটো চ্যানেল আছে, টি স্পোর্টস ও গাজী টিভি, ওরা খেলা দেখায়। যে সমস্ত খেলা ওরা দেখায় না বা দেখাতে পারে না, সেগুলো আমরা দেখাব।’

রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে হয়ে গেল বিসিবির সাধারণ পরিষদের বার্ষিক সভা

উদাহরণ হিসেবে মেয়েদের ক্রিকেটের প্রসঙ্গ টেনেছেন তিনি, ‘এখন ছেলেদের খেলা হচ্ছে। মেয়েদের খেলাটা দেখাতে পারছে না কেউ। এখন কেউ যদি দেখতে চায়, তাহলে একটা অপশন দরকার আমাদের। আমি চাই, আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটও দেখানো হোক। ঘরোয়া ক্রিকেট যদি দেখানো হয়, তাহলে খেলার মান আরও ভালো হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা নিয়েও প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেন, ‘আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা হয়ে গেছে বরিশাল ছাড়া সবগুলো।’ বরিশাল থেকে নির্বাচিত বিসিবি পরিচালক আলমগীর খান অসুস্থ, তাই বরিশালে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা করতে দেরি হচ্ছে বলে জানান তিনি।

বিসিবি সভাপতি জানান, আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার কার্যক্রম হিসেবে পরীক্ষামূলকভাবে প্রতিটি অঞ্চলকে একটি করে টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে বলা হয়েছে। বিসিবির কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা অনুদান নিয়ে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা টুর্নামেন্ট চালাবে।

২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাজেট অনুমোদন হয়েছে সভায়। এ সময়ে বিসিবির সম্ভাব্য আয় ধরা হয়েছে ৪৪৬ কোটি টাকা, সম্ভাব্য ব্যয় ৪০৭ কোটি টাকা।