ফিফটির পর বরিশালের সৌম্য সরকার
ফিফটির পর বরিশালের সৌম্য সরকার

বিপিএল

বরিশালের বড় জয়, টানা হারের রেকর্ড ঢাকার

বিপিএলে টানা হারের নতুন রেকর্ড গড়ল দুর্দান্ত ঢাকা। ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে আজ রাতের ম্যাচে ৪০ রানে হেরেছে তাসকিন-শরীফুলরা। এটি তাদের টানা অষ্টম হার। বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসকে হারানোর পর আর জয়ের দেখা পায়নি দলটি। এর আগের রেকর্ড ছিল সিলেট রয়্যালসের। বিপিএলের প্রথম আসরে প্রথম সাত ম্যাচে হেরেছে দলটি।

অথচ আজ ম্যাচের শুরুতে ঢাকাই দাপট দেখিয়েছে। আগে ব্যাট করা বরিশালের ইনিংসে ১৯ রানে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে ভালো কিছুরই আভাস দিচ্ছিল দলটি। কিন্তু সেখান থেকে মাহমুদউল্লাহ ও সৌম্য সরকারের ১৩৯ রানের দুর্দান্ত জুটি বরিশালকে নিয়ে যায় ৪ উইকেটে ১৮৯ রানে। সে রান তাড়া করতে নেমে ঢাকা অলআউট হয়েছে ১৯.৪ ওভারে ১৪৯ রানে। বড় জয়ে পয়েন্ট তালিকার চারে উঠে এসেছে বরিশাল।

বড় লক্ষ্য তাড়া করার ক্ষেত্রে ঢাকা তাকিয়ে ছিল মোহাম্মদ নাঈমের দিকে। এবারের বিপিএলে ব্যাট হাতে ঢাকার একমাত্র ধারাবাহিক পারফর্মার এই বাঁহাতিই। কিন্তু আজ নাঈমের ইনিংস দীর্ঘ হতে দেননি বরিশালের হয়ে প্রথমবারের মতো বিপিএল খেলতে নামা ক্যারিবীয় ওবেদ ম্যাকয়। ২ বাউন্ডারিতে ১১ বলে ১০ রান করে আউট হন নাঈম। আরেক ওপেনার সাব্বির হোসেনও (৫) ইনিংস বড় করতে পারেননি। আগের ম্যাচে অর্ধশতক করা সাইফ হাসান আজ ১৩ বলে ১২ রানে থেমেছেন।

জুটিতে ১৩৯ রান যোগ করেছেন সৌম্য ও মাহমুদউল্লাহ

টপ অর্ডার ব্যর্থ হওয়ায় প্রতিযোগিতা থেকে ইনিংসের মাঝ পথেই ছিটকে পড়ে ঢাকা। তবু নিশ্চিত হারের ম্যাচে লড়াই করে যান অস্ট্রেলীয় অ্যালেক্স রস। ৩০ বল খেলে ৫২ রান করেছেন তিনি। রস আউট হওয়ার পর ইনিংসের ২ বল বাকি থাকতে ১৪৯ রানে থামে ঢাকার ইনিংস। ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছে বরিশালের মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।

বরিশালের জয়ের মঞ্চটা গড়ে দিয়েছে তাদের ব্যাটসম্যানরা। অথচ তাদের সর্বশেষ ম্যাচে চট্টগ্রামের বিপক্ষে ১৪৫ রানের জবাবে করতে পেরেছিল মাত্র ১২৯ রান। সেদিন তামিমদের ভুগিয়েছে টপ অর্ডারের মন্থর ব্যাটিং। আজ সেই টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানই দলীয় ১৯ রানে আউট। তাসকিন আহমেদ ও শরীফুল ইসলামের প্রথম স্পেলে ড্রেসিংরুমে ফিরতে হয় আহমেদ শেহজাদ (১০), তামিম ইকবাল (৪) ও মুশফিকুর রহিমকে (১)।

৩ উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন

খাদের কিনার থেকে বরিশালকে টেনে তোলেন সৌম্য ও মাহমুদউল্লাহ। দুজনই শুরুতে সময় নিয়েছেন। ঢাকার মূল বোলারদের সম্মান দিয়েছেন। এরপর স্ট্রোক প্লের দুর্দান্ত প্রদর্শনীতে রান বাড়িয়েছেন দুজনই। সৌম্য ৩২ বলে অর্ধশতক করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ৪৮ বলে ৭৫ রানে। ৪টি চার ও ৬টি ছক্কা ছিল সৌম্যর ১৫৬ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে। এবারের বিপিএলে এটিই সৌম্যর সর্বোচ্চ ইনিংস।

মাহমুদউল্লাহ দ্বিতীয় অর্ধশতক এসেছে ৩৭ বলে। তিনি আউট হয়েছেন ৪৭ বলে ৭৩ রান করে। ১৫৫ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ৭টি চার ও ৪টি ছক্কায়। দুজনের জুটি থেকে এসেছে ৮৫ বলে ১৩৯ রান। শেষের দিকে শোয়েব মালিক ১০ বলে অপরাজিত ১৯ রান যোগ করলে বরিশালের রান গিয়ে দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ১৮৯-এ। ঢাকার হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন তাসকিন ও শরীফুল। শ্রীলঙ্কান লাহিরু সামারাকুনের ৪ ওভার থেকে ৪৪ রান নিয়েছে বরিশাল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১৮৯/৭ (শেহজাদ ১০, তামিম ৪, সৌম্য ৭৫*, মুশফিক ১, মাহমুদউল্লাহ ৭৩, মালিক ১৯*; মেহরব ১–০–৭–০, শরীফুল ৪–০–৩৬–২, তাসকিন ৪–০–৩৫–২, সামারাকুন ৪–০–৪৪–০, চতুরঙ্গা ৪–০–২৮–০, সানি ১–০–১৪–০, সাব্বির ২–০–২৩–০)।

দুর্দান্ত ঢাকা: ১৯.৪ ওভারে ১৪৯ (সাব্বির ৫, নাঈম ১০, সাইফ ১২, রস ৫২, মেহরব ২৮, চতুরঙ্গা ৪, তাহজিবুল ৭, সামারাকুন ০, তাসকিন ১২, শরীফুল ৭, সানি ১*; মিরাজ ২.৪–০–১৭–২, আকিফ ৪–০–৪৭–১, ম্যাকয় ৪–০–১৯–২, তাইজুল ২–০–২২–০, সাইফউদ্দিন ৪–০–২১–৩, সৌম্য ৩–১–২১–০)।

ফল: ফরচুন বরিশাল ৪০ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: সৌম্য সরকার।