ড্যারিল মিচেলের ১৩০, রাচিন রবীন্দ্রর ৭৫, এ দুজনের ১৫৯ রানের তৃতীয় উইকেট জুটির পরও ২৭৩ রানেই অলআউট হয়ে গেছে নিউজিল্যান্ড। ধর্মশালায় পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুই দলের লড়াইয়ে প্রথম ইনিংসে শেষ দিকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারত, যার নেতৃত্ব দিয়েছেন দলে ফিরেই ৫ উইকেট নেওয়া মোহাম্মদ শামি। শেষ ১০ ওভারে নিউজিল্যান্ড মাত্র ৫৪ রান তুলতে হারিয়েছে ৬ উইকেট।
শেষের মতো শুরুটাও বেশ ভালো ছিল ভারতের। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ফর্মে থাকা ডেভন কনওয়ে ও উইল ইয়াংয়ের উইকেটের বিনিময়ে প্রথম ১০ ওভারে মাত্র ৩৪ রান তোলে নিউজিল্যান্ড, প্রথম পাওয়ারপ্লেতে এবারের বিশ্বকাপে যেটি তৃতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। কনওয়ে ৯ বল খেলে কোনো রানই করতে পারেননি, সিরাজকে ফ্লিক করতে গিয়ে শর্ট মিডউইকেটে ধরা পড়েন শ্রেয়াস আইয়ারের হাতে। যেটি ছিল দারুণ ক্যাচ। প্রথমবারের মতো এবারের বিশ্বকাপে খেলতে নামা মোহাম্মদ শামির বলে বোল্ড হওয়ার আগে ২৭ বলে ১৭ রান ইয়াংয়ের।
মিচেল ও রবীন্দ্র অবশ্য লম্বা একটা সময় হতাশ করে গেছেন ভারতীয়দের। টুর্নামেন্টে দারুণ করতে থাকা ভারতের ফিল্ডিং-ও এদিন মাঝের লম্বা একটা সময় ছিল হতাশাজনক। জুটি গড়তে থাকা দুই ব্যাটসম্যানেরই সহজ ক্যাচ মিস করেছে তারা। ১২ রানে ভারতের সেরা ফিল্ডার রবীন্দ্র জাদেজার হাতে বেঁচে যান রবীন্দ্র। মিচেল জীবন পান দুবার—৬০ রানে উইকেটকিপার রাহুলের পর ৭৩ রানে তাঁর ক্যাচ ছাড়েন যশপ্রীত বুমরা। রবীন্দ্র আবার দুবার বাঁচেন রিভিউ নিয়ে, দুবারই তাঁকে আউট দিয়েছিলেন আম্পায়ার আদ্রিয়ান হোল্ডস্টক।
ভাগ্যকে কাজে লাগিয়ে প্রায় ২৫ ওভার ব্যাটিং করে ১৫৯ রানের জুটি গড়েন মিচেল ও রবীন্দ্র, নিউজিল্যান্ডকে সেটি এনে দেয় বেশ শক্ত একটা ভিত। রবীন্দ্র ৭৫ রান করে থামেন শামির অফ কাটারে ক্যাচ দিয়ে, তিনটি ক্যাচ ফেলার পর অবশেষে একটি নিতে সফল হয় তারা। কেইন উইলিয়ামসনের অনুপস্থিতিতে তিন নম্বর পজিশনটা অবশ্য দারুণভাবেই নিজের করে নেওয়ার আরেকটি প্রমাণ রেখেছেন রবীন্দ্র।
বেশ কিছুদিন ধরে দুর্দান্ত থাকা মিচেল আজও শুরু থেকেই ছিলেন ইতিবাচক। ভারতের অন্যতম বড় অস্ত্র কুলদীপের ওপর শুরু থেকেই চড়াও হয়েছিলেন, এ বাঁহাতি রিস্ট স্পিনারের বিপক্ষে দুর্দান্ত পায়ের কাজ ছিল মিচেলের। সব মিলিয়ে কুলদীপের ২৮ বলে ৪৪ রান নেন মিচেল, মারেন ৩টি ছক্কা। ক্যারিয়ারে এক ইনিংসে কোনো ব্যাটসম্যান কুলদীপের কাছ থেকে এত রান তোলেননি। ৬০ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করা মিচেল শতক পূর্ণ করেন ১০০তম বলে।
হার্দিক পান্ডিয়া নেই বলে ভারত খেলছে শুধু ৫ জন বোলার নিয়েই, ফলে কুলদীপ সেভাবে বিরতিও পাননি। অবশ্য শেষ ৩ ওভারে মাত্র ১২ রান দেওয়া কুলদীপ নেন টম ল্যাথাম ও গ্লেন ফিলিপসের উইকেট। কুলদীপের মতো শেষ দিকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় ভারতও। নিজের শেষ ২ ওভারে ৩ উইকেট নেন শামি। ৪৮তম ওভারে মিচেল স্যান্টনার ও ম্যাট হেনরি বোল্ড হন পরপর ২ বলে। হ্যাটট্রিক না পেলেও পরের ওভারে এসে মিচেলকে থামান শামি, যেটি তাঁর পঞ্চম উইকেট। প্রথম ৪ বলে ১০ রান তোলার পর মিচেল ধরা পড়েন কোহলির হাতে।