০-১২ কি এবার ১-১২ হবে!
পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৩ টেস্ট খেলে বাংলাদেশ কখনো জিততে পারেনি। সেই অপূর্ণতা কি এবার দূর হবে রাওয়ালপিন্ডিতে, নাকি আর আরেকবার দূর থেকে শুধু জয়ের সুবাস নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে?
এই প্রশ্নের উত্তর মেলাতেই আগামীকাল রাওয়ালপিন্ডি টেস্টের পঞ্চম দিনটা শুরু করবে নাজমুল হোসেনের বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিমের দারুণ এক ইনিংসে ভর করে চতুর্থ দিনটা নিজেদের করে নেওয়া বাংলাদেশ এমন স্বপ্ন দেখতেই পারে।
প্রথম জয়ের সেই স্বপ্ন পূরণে বোলারদের দিকেই তাকিয়ে পুরো বাংলাদেশ। মুশফিকের ১৯১ রানের ইনিংসে ভর করে বাংলাদেশ নিজেদের ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ ৫৬৫ রান করে। আর তাতেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ১১৭ রানের লিড পেয়ে যায় বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ লিড এটিই। দিন শেষে সেটি কমে হয়েছে ৯৪ রানে।
শরীফুল ইসলাম অসাধারণ বোলিং করেছেন আজ শেষ বিকেলে। সাইম আইয়ুবকে উইকেটকিপার লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দিকে বাধ্য করে দলকে প্রথম উইকেট এনে দিয়েছেন এই বাঁহাতি পেসার। দলীয় ৫ রানে ও ব্যক্তিগত ১ রানে ফিরেছেন সাইম। আর কোনো উইকেট না হারিয়ে পাকিস্তান দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে তুলেছে ২৩ রান।
বাংলাদেশ জিতে গেলে সেটি বড় খবরই হবে। পাকিস্তানও যদি এই ম্যাচ জিতে সেটিও বড় খবরই হবে। চতুর্থ দিনে এসে যে ম্যাচের প্রথম দুই ইনিংস শেষ হয়েছে, সেই ম্যাচে কোনো দল জিতলে তো সেটি বড় খবরই। এই ম্যাচের ফলের ঘরে ড্র না লিখতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান, দুই দলকেই খুব বাজে খেলতে হবে শেষ দিনে।
বাংলাদেশ দিনটা শুরু করেছিল ৫ উইকেটে ৩১৬ রান নিয়ে। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস বিচ্ছিন্ন হন দিনের খেলার নবম ওভারে। ৫২ রানে দিন শুরু করা লিটন ফেরেন আর ৪ রান যোগ করে। তাতে ভাঙে দুজনের ১১৪ রানের জুটি।
বাংলাদেশের ইনিংসের সবচেয়ে বড় জুটিটা হয় এরপরই। মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে সপ্তম উইকেটে ১৯৬ রান যোগ করেন মুশফিক। টেস্টে সপ্তম উইকেটে বাংলাদেশের এটিই সর্বোচ্চ জুটি। সপ্তম উইকেটে বাংলাদেশের আগের সর্বোচ্চ ছিল ১৪৫। ২০১০ সালে হ্যামিল্টনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে যে জুটিটি গড়েছিলেন সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ।
মুশফিকের আউটেই ভাঙে জুটি। পেসার মোহাম্মদ আলীর বলে উইকেটের পেছনে মোহাম্মদ রিজওয়ানের গ্লাভসে ক্যাচ তুলে চতুর্থ ডাবল সেঞ্চুরিটা খোয়ান মুশফিক।
১২০ রান করেই টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ডে জাভেদ ওমরকে পেছনে ফেলা মুশফিক একবার বেঁচেছেন রিভিউ নিয়ে। দিনের ষষ্ঠ ওভারের ঘটনা ছিল সেটি। মোহাম্মদ আলীর আবেদনে সাড়া দিয়ে এলবিডব্লু দিয়েছিলেন আম্পায়ার রিচার্ড কেটেলবরো। রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান সে সময়ে ৫৯ রানে দাঁড়ানো মুশফিকুর।
সেই মুশফিক ফেরেন দিনের শেষ সেশনে দলকে ৫২৮ রানে রেখে। ৩৪১ বলের ইনিংসে ২২টি চার ও ১টি ছক্কা মারা ব্যাটসম্যান ফেরার পর আরও ৩৭ রান যোগ করতে পারে বাংলাদেশ। ১৭৯ বলে ৭৭ রান করা মিরাজ ফেরেন নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে দলকে ৫৫৭ রানে রেখে।
পাকিস্তান: ৪৪৮/৬ ডি. ও ১০ ওভারে ২৩/১ (শফিক ১২*, মাসুদ ৯*; শরীফুল ১/১৩)।
বাংলাদেশ: ১৬৭.৩ ওভারে ৫৬৫ (মুশফিক ১৯১, সাদমান ৯৩, মিরাজ ৭৭, লিটন ৫৬, মুমিনুল ৫০, শরীফুল ২২; নাসিম ৩/৯৩, আফ্রিদি ২/৮৮, আলী ২/৮৮, খুররম ২/৯০, সাইম ১/৩৪)।
(৪র্থ দিন শেষে)