টেস্টে নেতৃত্বের অভিষেকে শতক তুলে নিয়েছেন নাজমুল হোসেন
টেস্টে নেতৃত্বের অভিষেকে শতক তুলে নিয়েছেন নাজমুল হোসেন

নাজমুলের শতকে বাংলাদেশের দিন

শুরু করেছেন ছক্কা-চারে। দিনের দ্বিতীয় সেশনের শুরুতে দলের ২৩ রানের সময় ক্রিজে নেমে প্রথম স্কোরিং শটটাই খেলেন মিড অনে উড়িয়ে। এজাজ প্যাটেলের সেই ওভারের এক বল পরই আরও একটি বাউন্ডারি মারেন, এবার মিড অফ দিয়ে চার। বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেনের ইনিংসের শুরুটা ছিল এমন। একটা পর্যায়ে ৪৮ বলে তাঁর রান ছিল ৪০।

নাজমুলের ইনিংসের পরের অধ্যায়টা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। তিনি অর্ধশত করেছেন ৯৫ বলে। তার মানে নাজমুল পরের ১০ রান করেছেন ৩৭ বলে। রানের গতি কমিয়ে বাংলাদেশের ইনিংসটাকে নিয়ন্ত্রণ করেছেন, করেছেন নিজের ইনিংসও। এতেই ধরা দিয়েছে আরও একটি টেস্ট শতক। ১৯২ বল খেলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করা নাজমুলের টেস্ট ক্যারিয়ারের পঞ্চম শতক এটি, এ বছর তৃতীয়। বাংলাদেশের হয়ে অধিনায়ক হিসেবে টেস্টে অভিষেকে একমাত্র ক্রিকেটারের রেকর্ডও গড়লেন নাজমুল।

তাঁর ইনিংসে ভর করে তৃতীয় দিন শেষে সিলেট টেস্টের নিয়ন্ত্রণ এখন বাংলাদেশের হাতে। তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ২১২। নাজমুল অপরাজিত আছেন ১৯৩ বলে ১০৪ রান করে। তাঁর সঙ্গী মুশফিকুর রহিমের রান ৭১ বলে ৪৩। ৯৬ রানের অবিচ্ছিন্ন এই জুটির সৌজন্যে বাংলাদেশ এগিয়ে ২০৫ রানে।

দিনের প্রথম সেশনে নিউজিল্যান্ডের শেষ দুই ব্যাটসম্যানকে তুলে নেন মুমিনুল হক

এর আগে ৮ উইকেটে ২৬৬ রান নিয়ে দিন শুরু করা নিউজিল্যান্ডের দুই লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান কাইল জেমিসন ও টিম সাউদি দ্রুতই রানটাকে তিন শর ঘরে নিয়ে যান। বাংলাদেশের ভাগ্য বদলায় ড্রিংকস ব্রেকের পরপরই। মুমিনুল হকের করা ১০২তম ওভারে আউট হন জেমিসন ও সাউদি। নিউজিল্যান্ডের ইনিংস থামে ৩১৭ রানে, লিড ৭ রানের।

বাংলাদেশও নতুন বলের কঠিন সময়টা পার করে দুই ওপেনার জাকির হাসান ও মাহমুদুল হাসানের সৌজন্যে। দুজন মিলে ২৩ রান যোগ করেন ৭৩ বল খেলে। তবে থিতু হয়ে আউট হয়েছেন দুজনই, সেটাও মাত্র ৩ রানের ব্যবধানে। জাকিরকে প্রথম ইনিংসের মতোই আউট করেন এজাজ প্যাটেল। নাজমুলের স্ট্রেইট ড্রাইভে হাত ছুঁইয়ে মাহমুদুলকে রানআউট করেন বোলার সাউদি।

জাকির–মাহমুদুলের উদ্বোধনী জুটি খুব বেশি রান এনে দিতে পারেনি

জোড়া আঘাতের পর অনেকটা নতুন করেই শুরু করতে হয় সদ্য ক্রিজে আসা নাজমুল ও মুমিনুল হককে। দুজনই সেটি করেছেন প্রতি আক্রমণে। স্পিন ছিল দ্বিতীয় সেশনে নিউজিল্যান্ডের আক্রমণের প্রধান অস্ত্র। মুমিনুল ড্রাইভ, কাট আর নাজমুল সুইপ শটে কিউইদের ওপর চড়াও হন। একটা পর্যায়ে দুজনেরই স্ট্রাইক রেট ছিল ৮০–এর ঘরে। দ্বিতীয় সেশনের শেষ দিকে দুজনই রয়েসয়ে খেলেছেন।

১৯৩ বলে শতক পূর্ণ করেন নাজমুল হোসেন

ছন্দপতন হয় মুমিনুলের ভুলে। ইনিংসের ৪১তম ওভারে এজাজ প্যাটেলের হালকা ঝুলিয়ে দেওয়া ডেলিভারি ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে অন ড্রাইভ করেন মুমিনুল। বল সোজা মিড অনে থাকা হেনরি নিকোলসের হাতে যেতে দেখেও ক্রিজে ছেড়ে উইকেটের মাঝামাঝি চলে যান মুমিনুল। অন্য প্রান্তে নাজমুল তখন নিজের ক্রিজে দাঁড়িয়ে। বিপদ বুঝতে পেরে মুমিনুল নিজের ক্রিজে ফেরার চেষ্টা করলেও সফল হননি। নিকোলসের থ্রো ধরে স্টাম্প ভেঙে দেন টম ব্লান্ডেল। ৬৮ বলে ৪০ রান করে ফিরেছেন মুমিনুল। তাঁর বিদায়ে ভেঙেছে ৯০ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।