ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ মানেই সমর্থকদের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনা
ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ মানেই সমর্থকদের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনা

ভারত-পাকিস্তানের বিশ্বকাপ ম্যাচ: হোটেল না পেয়ে হাসপাতালে বুকিং

বেশ অপেক্ষার পর বিশ্বকাপের সূচি ঘোষণা করা হয়েছে, স্বাভাবিকভাবেই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে আগ্রহ তুঙ্গে। তরতর করে বাড়ছে হোটেল রুমের ভাড়া। অক্টোবরের ১৫ তারিখ আহমেদাবাদে মুখোমুখি হবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। সে সপ্তাহে আহমেদাবাদের হোটেলগুলোয় থাকতে গেলে গুনতে হবে চড়া মূল্য। মানুষ তাই হাঁটছেন বিকল্প পথে। তাঁরা এখন খোঁজখবর নিচ্ছেন হাসপাতালে, যদি সেখানে থাকার ব্যবস্থা হয়!

শুধু গুজরাটের বাইরে থেকে নয়, ভারতের বাইরে থেকেও মানুষ এমন ব্যবস্থার খোঁজখবর নিচ্ছেন বলে জানিয়েছে আহমেদাবাদ মিরর। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে হবে বিশ্বকাপের ফাইনাল, তবে এর আগে বড় আগ্রহ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ঘিরেই। এ ম্যাচকে ঘিরে অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে হোটেলগুলোয় থাকতে প্রতি রাতে খরচ করতে হতে পারে ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার রুপি। বলা হচ্ছে, কোনো কোনো হোটেলে নাকি রাতপ্রতি ১ লাখ রুপি (প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা) খরচ করতে হতে পারে!

খরচ কমাতে ভারতের বাইরে থেকে আসা দর্শকেরা খোঁজখবর নিচ্ছেন হাসপাতালে। যেখানে হোটেলের মতো সকালের নাশতা, নৈশভোজের ব্যবস্থাও আছে। তবে শুধু থাকার জন্য তো আর হাসপাতালে যাওয়া চলে না। তাই নেওয়া হচ্ছে একটি উপায়। এ ব্যাপারে সান্নিধ্য হাসপাতালের চিকিৎসক পরশ বলেছেন, ‘যেহেতু হাসপাতাল, তাই তারা ফুল বডি চেক-আপের সঙ্গে রাতে থাকার কথাও বলছেন। এতে দুটি উদ্দেশ্যই পূর্ণ হয়—টাকাও বাঁচে, স্বাস্থ্য পরীক্ষাও হয়।’

ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ ১৫ অক্টোবর

শাহ নামের এক যৌন–বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘তাঁরা যেকোনো কিছুর জন্য প্রস্তুত, যেটির প্রস্তাবই দেন না কেন—ডিলাক্স রুম, স্যুট রুম। আমাদের কক্ষ সীমাবদ্ধ, আর আমরা রোগীদের প্রাধান্য দেব বলে এসব অগ্রিম বুকিং নেওয়ার ব্যাপারে আমাদের বিচক্ষণতা কাজে লাগাচ্ছি।’

শুধু দুই-একটি হাসপাতালে যে এমন প্রস্তাব আসেনি, স্টার্লিং হাসপাতালের চিকিৎসক নিখিল লালা নিশ্চিত করেছেন সেটিই, ‘আমরাও ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা থাকা যায় কি না, এমন জিজ্ঞাসার মুখোমুখি হচ্ছি। বিশেষ করে ১৫ অক্টোবরের আশপাশে। আমাদেরও পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্যাকেজ আছে।’

হুট করে রাতে অবস্থান করে স্বাস্থ্য পরীক্ষার এই চল যে বিশ্বকাপকে ঘিরে, লালা জানেন সেটি, ‘১৫ অক্টোবর ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচের কারণেই এমন হচ্ছে। শুধু আমাদের হাসপাতালে নয়, অন্য শহরের হাসপাতালেও একই দৃশ্য। ফলে আমরা স্বাস্থ্য পরীক্ষার ভিন্ন প্যাকেজের কথা ভাবছি।’

স্বাভাবিকভাবেই হাসপাতালগুলোয় রুম ভাড়া হোটেলগুলোর মতো হবে না। ২৪ ঘণ্টায় এখানে ৩ হাজার থেকে ২৫ হাজার রুপি খরচ হতে পারে। এর মধ্যে খাবার তো আছেই, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পরীক্ষাও অন্তর্ভুক্ত। রোগীর সঙ্গে একজন পরিদর্শকও থাকতে পারেন, সে ক্ষেত্রে এটি হয়ে উঠতে পারে দুই বেডের ঘর।

এ প্রসঙ্গে গুজরাটের অ্যাপোলো হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিরাজ লাল আহমেদাবাদ মিররকে বলেছেন, ‘সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মধ্যে আমরা বেশি রোগী পাই। তবে এখন আমরা অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে সর্বোচ্চসংখ্যক বুকিং পেয়েছি পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষার, যার মাধ্যমে তাঁরা এখানে অবস্থানও করবেন।’

কেউ কেউ আবার অনুরোধ করেছেন—যাতে একসঙ্গে থাকার ব্যবস্থা করা যায়! ১৫ অক্টোবরই বুকিং দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁরা। তবে খেলা দেখার জন্য হাসপাতাল বুক করে রাখা কতটা বিবেচকের কাজ হচ্ছে, এমন প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে।