বড় টুর্নামেন্টে পাকিস্তান দলের ব্যর্থতা মানেই খেলোয়াড়দের দিকে সমালোচনার তির ধেয়ে আসা। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও একই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হচ্ছেন দেশটির ক্রিকেটাররা। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের কাছে হেরে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পর সাবেকদের কথার বাণও সামলাতে হচ্ছে বাবর আজম-শাহিন আফ্রিদিদের।
নিউইয়র্কে গত রোববার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে হারের পর থেকে ওয়াসিম আকরাম, সেলিম মালিক, শোয়েব আখতার, শহীদ মালিকরা পাকিস্তান দলকে রীতিমতো ধুয়ে দিয়েছেন। এবার তাতে যোগ দিলেন শোয়েব মালিকও। পাকিস্তানের ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য মালিক বর্তমান অধিনায়ক বাবর আজমের পদত্যাগ দাবি করেছেন। সেই সঙ্গে দলের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের ব্যাটিং নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
৪২ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার টেন স্পোর্টসে বলেন, ‘আমি অনেক দিন ধরে (বাবর আজমকে) বলছি, অনুগ্রহ করে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দাও। তুমি একজন বড় মাপের খেলোয়াড়, তুমি নিজের সেরাটা তখনই দিতে পারবে, যখন তোমার ওপর অতিরিক্ত দায়িত্ব থাকবে না। বাবর যদি নেতৃত্ব থেকে দূরে থাকে, সেটা ওর জন্যই ভালো হবে।’
পাকিস্তানের এই দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান অধিনায়ক বাবর আর উইকেটকিপার মোহাম্মদ রিজওয়ান। দুজন মিলে এখন পর্যন্ত খেলেছেন ২২৩টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। এর মধ্যে কিছুদিন পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় বাদ দিলে বেশির ভাগ ম্যাচে বাবর-রিজওয়ানই ওপেনিংয়ে নেমেছেন। তবে ভারতের বিপক্ষে তাঁদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা কোনো কাজে আসেনি।
১২০ রান তাড়া করতে নেমে যশপ্রীত বুমরার বলে ব্যক্তিগত ১৩ রানে আউট হন বাবর। রিজওয়ান ৩১ রান করলেও বল ‘গিলে ফেলেছেন’ ৪৪টি। রিজওয়ানও বুমরার শিকার হয়েছেন। তাঁর আউটের মুহূর্ত ছিল আরও দৃষ্টিকটু। হাতে ৭ উইকেট নিয়ে ৩৬ বলে ৪০ রান লাগত পাকিস্তানের। এমন সহজ সমীকরণের সামনেও অযথা বুমরার বলে চালিয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হন।
রিজওয়ানদের ‘কাণ্ডজ্ঞানহীন’ ব্যাটিং নিয়ে বেজায় চটেছেন মালিক, ‘জিততে হলে ১২০ রান তাড়া করতে হতো। এমন দিনেই তুমি স্ট্রাইক রেট বাড়ানোর চেষ্টা করতে গেলে কেন? জয়ের ভিত গড়ে দেওয়াই ছিল। একজন অধিনায়ক ও একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে এ ধরনের পরিস্থিতিতে যদি তোমাদের মস্তিষ্ক কাজ না করে, তাহলে কবে করবে? বলতে বাধ্য হচ্ছি, এই দলকে সমর্থন করা বন্ধ করতে হবে।’
রিজওয়ানের শট নির্বাচন নিয়ে মালিকের কথা, ‘সে (রিজওয়ান) কী ধরনের শট খেলল, আমি বুঝে উঠতে পারিনি। সে দীর্ঘদিন ধরে খেলছে, পিএসএলে (মুলতান সুলতানসকে) নেতৃত্বও দিচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতি সম্পর্কে ওর স্বচ্ছ ধারণা আছে। সে এই ম্যাচ নিজের করে নিতে পারত। অথচ ভারতের প্রধান বোলারকে (বুমরাকে) মারতে গিয়ে উইকেট দিয়ে এল। ওরা ওই সময় বুমরাকে বোলিংয়ে নিয়েই এসেছিল উইকেট এনে দেওয়ার জন্য।’
টানা দুই হারে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়ের শঙ্কায় পড়ে গেছে পাকিস্তান। বাবর-রিজওয়ান-আফ্রিদিদের সুপার এইটে খেলতে হলে গ্রুপ পর্বের শেষ দুই ম্যাচ বড় ব্যবধানে জিততে তো হবেই, তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য ম্যাচগুলোর দিকেও।
বিশ্বকাপে টিকে থাকার লড়াইয়ে আজ কানাডার বিপক্ষে মাঠে নেমেছে পাকিস্তান। এখন পর্যন্ত ম্যাচটা পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণেই আছে। নিউইয়র্কে কানাডার দেওয়া ১০৭ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪ ওভার শেষে বিনা উইকেটে ১৯ রান করেছে পাকিস্তান।