গ্রাহাম থর্প (১৯৬৯–২০২৪)
গ্রাহাম থর্প (১৯৬৯–২০২৪)

আত্মহত্যা করেছেন গ্রাহাম থর্প

সাবেক ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যান গ্রাহাম থর্প আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে তাঁর পরিবার। ৫ আগস্ট তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। ঠিক কীভাবে ৫৫ বছর বয়সী থর্পের মৃত্যু হয়েছে, সেটি সে সময় জানানো হয়নি।

ইংল্যান্ডের হয়ে ১০০টি টেস্ট ও ৮২টি ওয়ানডে খেলা থর্পের স্ত্রী অ্যামান্ডা দ্য টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, কয়েক বছর ধরেই বিষণ্নতা ও দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন তিনি।

অ্যামান্ডা বলেন, ‘একজন স্ত্রী এবং দুজন কন্যা, যারা তাকে ভালোবাসত এবং যাদের সে ভালোবাসত, তারা থাকার পরও ওর পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে সে এতটা অসুস্থ ছিল যে, সে সত্যিই বিশ্বাস করত, সে না থাকলেই আমরা ভালো থাকব। আসলেই সে এমন করেছে এবং আত্মহত্যা করেছে। এতে আমরা বিধ্বস্ত হয়ে গেছি।’

খেলোয়াড়ি-জীবন শেষে কোচিংয়ে আসেন থর্প। ইংল্যান্ডের সহকারী কোচের দায়িত্বও বেশ কিছুদিন পালন করেন। ২০২২ সালে আফগানিস্তানের প্রধান কোচ হওয়ার কথা ছিল তাঁর। তবে সে বছরের মে মাসে ‘গুরুতর অসুস্থ’ অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল বলে জানা যায়। তখনো ঠিক অসুস্থতা খোলাসা করে বলা হয়নি।

থর্পের স্ত্রী বলছেন, সে সময় আসলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনি, ‘কয়েক বছর ধরেই গ্রাহাম বিষণ্নতা ও দুশ্চিন্তায় ভুগছিল। ২০২২ সালের মে মাসে সে আত্মহত্যার জোরালো চেষ্টা চালায়। এরপর তাকে আইসিইউতে (নিবিড় পর্যবেক্ষণ কক্ষ) লম্বা সময় থাকতে হয়।’

গুরুতর অসুস্থ হয়ে ২০২২ সালে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন গ্রাহাম থর্প। আদতে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনি।

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে উন্নতির লক্ষণ দেখা দিলেও গ্রাহামকে তাড়া করেছে পুরোনো সমস্যা। অ্যামান্ডা বলেন, ‘আশার ঝিলিক দেখা দিয়েছিল, পুরোনো গ্রাহামকে একটু দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু এরপরও সে বিষণ্নতা ও দুশ্চিন্তায় ভুগেছে। মাঝেমধ্যে যেটা খুবই গুরুতর হয়ে পড়ে। পরিবার হিসেবে আমরা তাকে সহায়তা করেছি। সে অনেক, অনেক রকমের চিকিৎসা করিয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছুই কাজে দেয়নি।’

অ্যামান্ডা বলেন, ‘গ্রাহাম মানসিক দিক দিয়ে শক্ত হিসেবে বিবেচিত ছিল মাঠে। তার মানসিক স্বাস্থ্যও এক সময় ভালো ছিল। কিন্তু মানসিক অসুস্থতা সত্যিকারের একটি অসুখ এবং যে কাউকে আক্রান্ত করতে পারে।’ 

থর্পকে তাঁর প্রজন্মের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান বিবেচনা করা হতো। তাঁর এমন চলে যাওয়া নিয়ে বড় মেয়ে ২২ বছর বয়সী কিটি বলেছেন, ‘আমরা এটা নিয়ে কথা বলতে লজ্জা পাই না। এটিকে লুকানোর কিছু নেই, লজ্জারও কিছু নেই। আমরা আগে তাকে সাহায্য করছিলাম যাতে সে ঠিক হয়, তাকে রক্ষা করতে চেয়েছিলাম। এ কারণে আমরা কিছু বলিনি।’

গ্রাহামের নামে এখন একটি ফাউন্ডেশন তৈরির কথা ভাবছে তাঁর পরিবার। কিটি বলেন, ‘এখন এ খবর জানানোর সময়, সেটি যতই বীভৎস হোক না কেন। আমরা কথা বলার মতো পর্যায়ে যেতে চেয়েছি এবং এটি জানানোর অবস্থায় যেতে চেয়েছি। এখন সচেতনতা বাড়াতে চাই।’

(**আত্মহত্যার ভাবনা এলে বা কোনো ধরনের মানসিক সমস্যায় ভুগলে প্রয়োজনীয় সহায়তা গ্রহণ করুন)