জয়ের পর সাদমানদের অভিনন্দন জানাচ্ছেন নাজমুল (সবার ডানে)
জয়ের পর সাদমানদের অভিনন্দন জানাচ্ছেন নাজমুল (সবার ডানে)

নাজমুলরা জানতেন ম্যাচটা জিতবেন

টেস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশের অতীতে গর্ব করার মতো কিছু ছিল না। রাওয়ালপিন্ডিতে এবারের সিরিজের আগে ১৩ টেস্ট খেলে ১২টিতেই হেরেছে বাংলাদেশ, একবার ড্র এসেছে ২০১৫ সালে খুলনায়। বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন অবশ্য এবারের দুই টেস্টের সিরিজ শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে আগের রেকর্ড ভাঙার কথাই বলেছিলেন। প্রথম টেস্টেই তাঁর দল সে কথা রেখেছে। পাকিস্তানকে ১০ উইকেটে হারিয়ে ইতিহাস গড়েছে নাজমুলদের দল। ২০২২ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট জয়ের পর দেশের বাইরে আরও একবার টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল বাংলাদেশ

জয়ী অধিনায়ক হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে আসা নাজমুল জানালেন বিদেশের মাটিতে আরও একটি টেস্ট জয় দলের জন্য কতটা অর্থবহ, ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দেশের বাইরে খুব একটা জিতি না। নিউজিল্যান্ডের পর এখানে জিতলাম। এ বছর যখন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পরিকল্পনা করেছিলাম, বাইরের ম্যাচগুলো কীভাবে জিততে পারি বা ড্র করতে পারি, ঘরের মাঠে কীভাবে জিততে পারি—এমন পরিকল্পনা ছিল। আল্লাহর রহমতে ভালো একটা ফল এসেছে। আশা করি, এ জয়ে খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়বে। আশা করব, যেন সামনের ম্যাচগুলোতে এবং সিরিজগুলোতে আরও কত ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি।’

রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টের পঞ্চম দিনের শুরু থেকেই জয়ের সুবাস পাচ্ছিল বাংলাদেশ। ব্যাটিং–স্বর্গে পাকিস্তানের ৬ উইকেটে ৪৪৮ রানে ইনিংস ঘোষণার পর বাংলাদেশ সব উইকেট হারিয়ে করে ৫৬৫ রান। ১১৭ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। পঞ্চম দিনের খেলা শুরুর আগে বাংলাদেশ এগিয়ে ছিল ৯৪ রানে। পাকিস্তানকে চাপে ফেলার জন্য পেস, স্পিন—সব অস্ত্রই ছিল নাজমুলের হাতে। দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানকে ১৪৬ রানে অলআউট করার পর জয়ের জন্য মাত্র ৩০ রানের ছোট্ট লক্ষ্য তাড়া করতে হয় বাংলাদেশকে। জাকির হাসান ও সাদমান ইসলাম অবিচ্ছিন্ন থেকেই টপকে যান সেটি।

রাওয়ালপিন্ডিতে দুর্দান্ত এক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ

রোমাঞ্চকর পঞ্চম দিনের শুরুতে নিজেদের পরিকল্পনার কথা জানাতে গিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেছেন, ‘এটা দারুণ অনুভূতি। আজ সকালে যখন মাঠে এসেছিলাম, আমরা ম্যাচটা জিততে পারব, এই বিশ্বাস ছিল তখনই। কারণ, আমরা ৯৪ রানে এগিয়ে ছিলাম। উইকেটও কঠিন মনে হচ্ছিল, স্পিনাররা ভালো সাহায্য পাচ্ছিল। পেসারদের বল উঁচু-নিচু হচ্ছিল। আমরা বিশ্বাস করেছিলাম, যদি ঠিক জায়গায় বল করি, তাহলে আমরা ওদের হারাতে পারব। সেটাই হয়েছে।’

নাজমুল অবশ্য ঐতিহাসিক জয়ের উদ্‌যাপনটাকে দীর্ঘ করতে চান না। ৩০ আগস্ট একই ভেন্যুতে শুরু হতে যাওয়া সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে মনোযোগ দিতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘পরের ম্যাচটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ম্যাচটা কিন্তু শেষ। এখন এই মুহূর্তটা উপভোগ করে পরের টেস্টের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। আমাদের চিন্তা করতে হবে, কীভাবে পরের ম্যাচটা জিততে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, পরের ম্যাচটাও জিততে পারব।’