টুর্নামেন্টে ৫টি ম্যাচে অন ফিল্ড দায়িত্বে ছিলেন শরফুদ্দৌলা
টুর্নামেন্টে ৫টি ম্যাচে অন ফিল্ড দায়িত্বে ছিলেন শরফুদ্দৌলা

শরফুদ্দৌলা বললেন, ‘এলিট প্যানেলে ঢোকা বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সেরই পুরস্কার’

বিশ্বকাপে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যে পারফরম্যান্স করেছিলেন, যে ‘ভাবমূর্তি’ তৈরি করেছিলেন, এলিট প্যানেলে ঢোকা সেটিরই পুরস্কার বলে মনে করেন আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে আজ আইসিসির এলিট প্যানেলে ঢুকেছেন বাংলাদেশের এ আম্পায়ার।

ভারতের মাটিতে গত বছরের শেষ দিকে হয়ে যাওয়া বিশ্বকাপে আম্পায়ারের দায়িত্ব পালন করেন শরফুদ্দৌলা। টুর্নামেন্টে ৫টি ম্যাচে অন ফিল্ড দায়িত্বে ছিলেন তিনি। বিশ্বকাপে অন ফিল্ড আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করা প্রথম বাংলাদেশি আম্পায়ারও তিনি।

বিশ্বকাপে দায়িত্ব পালন প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাবেক এ বাঁহাতি স্পিনার বলেছিলেন, ‘বিশ্বকাপে যাওয়ার আগেই বলেছিলাম, বিশ্বকাপে ম্যাচ করার সুযোগ পাওয়াটা আমার জন্য প্রত্যাশিত ছিল। যখন প্রত্যাশা থাকে, তখন একটা প্রস্তুতিও থাকে। সেদিক থেকে আমি মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলাম। আমি কখনোই বিষয়টিকে অত বড় করে দেখতে চাইনি। আমি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বকাপে ম্যাচ করছি, এটা অবশ্যই গর্বের বিষয়। তবে আমার কাছে আম্পায়ারিংয়ের সবচেয়ে বড় অর্জন টেস্ট ম্যাচ পরিচালনা করা, সেটা আগেই হয়েছে। এবার নতুন একটা অধ্যায় যোগ হলো ক্যারিয়ারে। নিজের পারফরম্যান্সে আমি সন্তুষ্ট। আমার মনে হয়, আমি সম্মানটা অর্জন করতে পেরেছি।’

তবে বিশ্বকাপের সে পারফরম্যান্সই তাঁকে এলিট প্যানেলে তুলে এনেছে বলেও মনে করেন শরফুদ্দৌলা। এলিট প্যানেলে ঢোকার পর আজ বিসিবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘ভালো আম্পায়ারিং করে মুগ্ধ করতে পেরেছিলাম, একটা ভাবমূর্তি গড়তে পেরেছিলাম। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বকাপে গিয়েও নার্ভাস ছিলাম না। আমার মনে হয় সেটিরই পুরস্কার আজকের এই অর্জন।’

বিশ্বকাপে শরফুদ্দৌলা (ডানে), ভারতের এলিট প্যানেলের আম্পায়ার নিতিন মেননের সঙ্গে

আম্পায়ারের সর্বোচ্চ স্তরে উঠে পেছনের দিকেও ফিরে তাকিয়েছেন শরফুদ্দৌলা, যিনি পরিচিত সৈকত নামেই। প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে নিজের প্রথম ম্যাচ পরিচালনার স্মৃতিচারণা করে বলেছেন, ‘ধানমন্ডির ৮ নম্বর মাঠে তৃতীয় বিভাগের বাছাইপর্বের একটা ম্যাচ করতে যাই। তখন তো অতটা নিয়মকানুন জেনে আসিনি আম্পায়ারিং করতে। জানতাম না কোন জুতা পরতে হয়। ফরমাল শু পরে গিয়েছিলাম। দেখে একজন স্কোরার বলল, “সৈকত ভাই, এই শু-তে তো আম্পায়ারিং করে না।” এরপর একটা বলে ওয়াইড ও বাই হয়েছিল। আমি ওয়াইডের সংকেত দিলাম, বাইও দিলাম। আসলে তো ওয়াইড হলে বাইয়ের সংকেত দিতে হয় না। সেখান থেকে শুরু। এরপর অনেক অভিজ্ঞতা হলো।’

ভবিষ্যতে যাঁরা আম্পায়ার হতে চান, তাঁদের প্রতি শরফুদ্দৌলার বার্তা, ‘আপনি জনপ্রিয় চরিত্র হতে পারবেন না। আপনাকে এমন একজন হতে হবে, যাঁকে অন্যরা সম্মান করে। আত্মবিশ্বাস ধরে রেখে লক্ষ্যটা স্থির রাখতে পারে, সাফল্য আসবেই।’