পাকিস্তানের বিশ্বকাপ শেষ। ইংল্যান্ডের কাছে হেরে পাকিস্তান বিশ্বকাপ শেষ করেছে পয়েন্ট তালিকার পাঁচ নম্বরে থেকে। বিশ্বকাপ শেষে পাকিস্তান ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, বাবর আজম কি অধিনায়ক হিসেবে থাকছেন?
এরই মধ্যে পাকিস্তানের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম খবর দিয়েছে, বিশ্বকাপ শেষে দায়িত্ব ছাড়তে পারেন বাবর। এই কঠিন সময়ে পাকিস্তানের ক্রিকেট পরিচালক মিকি আর্থারকে পাশে পাচ্ছেন পাকিস্তানের অধিনায়ক। গতকাল ইংল্যান্ডে বিপক্ষে হারার পর সংবাদ সম্মেলনে বাবরের অধিনায়কত্ব প্রসঙ্গে আর্থার বলেছেন, ভুল থেকে শিক্ষা নিলে ভুল করা কোনো অপরাধ নয়।
চলতি বিশ্বকাপে পাকিস্তান দারুণ শুরু করেছিল। নেদারল্যান্ডস ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করা বাবরের দল এরপর হারে টানা চার ম্যাচে। পরে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জিতলেও মূলত ওই টানা চার হারেই তারা বিশ্বকাপ থেকে অনেকাংশে ছিটকে যায়।
ব্যাট হাতে বাবরও ছিলেন গড়পড়তা। চারটি অর্ধশতকে ৪০ গড় আর ৮২.৯০ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন ৩২০, যা মোটেই বাবরসুলভ নয়। আর ব্যাট হাতে বাবর যে প্রত্যাশামতো পারফর্ম করতে পারেননি, সেটা তিনি নিজেই ইংল্যান্ড ম্যাচের আগে স্বীকার করেছেন। বিশ্বকাপের আগে এশিয়া কাপেও ব্যাটসম্যান ও অধিনায়ক বাবরের সময়টা ভালো কাটেনি। সব মিলিয়ে বাবরের অধিনায়কত্ব নিয়ে যেকোনো ধরনের সিদ্ধান্তই আসতে পারে।
এমন পরিস্থিতিতে আর্থার বলছেন, ‘বাবরের পাশে আছি। বাবর তরুণ একজন ব্যাটসম্যান, অধিনায়ক হিসেবেও সে প্রতিদিন শিখছে। সে প্রতিনিয়ত বেড়ে উঠছে, তাকে বেড়ে ওঠার সুযোগ দিতে হবে। সামনে এগোতে গেলে ভুল হবে। ভুল থেকে শিক্ষা নিলে ভুল করা অপরাধ নয়। দল হিসেবে আমরা অনেক ভুল করেছি, যদি দল এখান থেকে শিখতে পারে, তাহলে খুব ভালো দল হওয়ার সব উপাদানই এই দলে আছে।’
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের খেলার কৌশল নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে। এমনকি বিশ্বকাপের আগে অনেকেই বলেছেন, পাকিস্তান দল নব্বই দশকের ক্রিকেট খেলছে। আর্থারও মানছেন, পাকিস্তানকে ৩৩০ থেকে ৩৫০ করার মতো দল হয়ে উঠতে হবে, ‘ব্যাটিংয়ের কথা যদি বলি, আমাদের ৩৩০ থেকে ৩৫০ করার মতো দল হয়ে উঠতে হবে। যে দলগুলো এমনটা ধারাবাহিকভাবে করছে, তারাই সেমিফাইনালে। আমার মনে হয় না, আমরা ধারাবাহিকভাবে এমনটা করতে পেরেছি। যখন ফখর জামান দারুণ শুরু করে, তখনই আমরা পারি, কিন্তু একজনের ওপর তো আর প্রতিদিন ভরসা করতে পারি না।’
এশিয়া কাপে চোট পেয়ে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন নাসিম শাহ। বিশ্বকাপের আগে এই নাসিমই হয়ে উঠেছিলেন পাকিস্তানের প্রধান বোলার। পাকিস্তানের বোলিং ভালো না হওয়ার পেছনে আর্থার নাসিমের ছিটকে পড়াকে বড় কারণ হিসেবে দেখছেন, ‘অজুহাত দিচ্ছি না। নাসিম শাহ ধারাবাহিকভাবে ভালো বোলিং করতে পারত, যে কারণে শুরুর দিকে শাহিন শাহ আফ্রিদি আক্রমণাত্মক বোলিং করতে পারত, এরপর লেগ স্পিনার ও হারিস রউফকে দিয়ে আক্রমণ করাতে পারতেন। নাসিম না থাকায় আমাদের বোলিং আক্রমণে ভারসাম্য ছিল না। সমস্যা হয়েছে, কিন্তু এটা অজুহাত নয়। কারণ, সত্যি বলতে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলিনি।’