সাকিব-তামিমের দ্বৈরথে জিতলেন সাকিব আল হাসান। সাকিবের দল রংপুর রাইডার্স চট্টগ্রামে আজ রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে তামিমের ফরচুন বরিশালকে হারিয়েছে ১ উইকেটে। তামিম ইকবালের সঙ্গে ব্যক্তিগত দ্বৈরথেও জিতেছেন সাকিব। বোলিংয়ে এসেই প্রথম বলে সাকিব পেয়ে গেছেন তামিমের উইকেট। এরপর আবু হায়দারের (৫/১২) রেকর্ড বোলিংয়ে বরিশালকে ১৫১ রানে আটকে লক্ষ্যটা ৩ বল হাতে রেখে পেরিয়ে যায় রংপুর। এতে লিগ পর্ব শীর্ষে দুইয়ে থেকে শেষ করা নিশ্চিত হলো দলটির। যার অর্থ হলো ২৫ ফেব্রুয়ারি সরাসরি প্রথম কোয়ালিফায়ারে খেলবে নুরুল হাসানের রংপুর।
সর্বশেষ এই জয়ে ১১ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট হলো রংপুরের। সমান ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে বরিশাল আছে তিনে। আজ রংপুরকে হারাতে পারলে তৃতীয় দল হিসেবে প্লে-অফ নিশ্চিত করে ফেলত দলটি। কিন্তু তামিম-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর দলকে এখন অপেক্ষা করতে হচ্ছে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সেদিন মিরপুরে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষে খেলবে বরিশাল।
১৯তম ওভারে রংপুরের শেষ ব্যাটসম্যান হাসান মাহমুদ যখন উইকেটে এলেন ১০ বলে ২ রানের সমীকরণ দলটির। কাইল মায়ার্সের করা ওভারের শেষ চারটি বল ঠেকিয়ে শেষ ওভারের প্রথম বলে শামীম হোসেনকে স্ট্রাইক দেন হাসান। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের করা শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে শামীম ১ রান নেওয়াতে আবার স্ট্রাইকে হাসান। সব চাপ যেন তখন জাতীয় দলের এই পেসারের ওপর। পরের বলটা তাঁর ব্যাটের কানায় লেগে শূন্য স্লিপ এলাকা দিয়ে পেরিয়ে যায় বাউন্ডারি।
এমন নখ কামড়ানো সমাপ্তি দেখার কথা ছিল না। ব্রেন্ডন কিং যে দুর্দান্ত সূচনা এনে দিয়েছিলেন রংপুরকে। প্রথম ২ ওভারে ২১ রান তোলে রংপুর, ২১ রানই ছিল ১১ বল খেলা কিংয়ের। তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে প্রথম উইকেট হারায় দলটি। কাইল মায়ার্সের বলে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ তোলেন মুমিনুল। ক্যারিবীয় ওপেনার কিং এরপর সাকিব আল হাসানকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ২৩ বলেই যোগ করেন ৫৩ রান।
ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে যখন কিং স্টাম্পড হলেন রংপুরের স্কোর ৭৪/২। আউট হওয়ার আগে ২১ বলে ৩ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৫ রান করেছেন কিং। সাকিব ফেরেন অষ্টম ওভারে দলকে ৮২ রানে রেখে। ১৫ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ২৯ রান করেছেন সাকিব।
এরপর আর ৫ রানের মধ্যে আরও ২ উইকেট তুলে নিয়ে রংপুরকে ভালোই চাপে ফেলে বরিশাল। রংপুর অধিনায়ক নুরুল হাসান (২) ও অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান (৭) ফেরেন অল্পতেই। নিউজিল্যান্ড তারকা জিমি নিশাম এরপর টম মুরসে নিয়ে দলের রানটাকে ১১৮-তে নিয়ে যান। ১৭ বলে ১৭ রান করে মুরসের বিদায়ের পর ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসকে নিয়ে আরও ১৯ রান করে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে যান নিশাম। ওবেদ ম্যাকয়ের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ১৭ বলে ২৮ রান করা নিশাম।
প্রিটোরিয়াস ফেরেন দলকে ১৪৯ রানে অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে। ১৯তম ওভারে ফিরে যান বোলিং-নায়ক আবু হায়দার।
ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১৫১/৯ (মায়ার্স ৪৬, তামিম ৩৩, ব্যান্টন ২৬, ম্যাকয় ১২*; আবু হায়দার ৫/১২, হাসান ২/৩১, সাকিব ১/২৫, নিশাম ১/২৭)
রংপুর রাইডার্স: ১৯.৩ ওভারে ১৫৫/৯ (ব্রান্ডন ৪৫, সাকিব ২৯, নিশাম ২৮, প্রিটোরিয়াস ১৩; মিরাজ ৩/২৪, ম্যাকয় ৩/৩৪, মায়ার্স ২/৩১, মহারাজ ১/৩১)
ফল: রংপুর ১ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: আবু হায়দার (রংপুর রাইডার্স)।