ভারতের মাটিতে এবার অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট সিরিজ জয়ের সুযোগ দেখছেন হিলি ও গিলক্রিস্ট
ভারতের মাটিতে এবার অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট সিরিজ জয়ের সুযোগ দেখছেন হিলি ও গিলক্রিস্ট

‘ভারত যা–তা উইকেট না বানালে অস্ট্রেলিয়ার সুযোগ থাকবে’

২০০৪ সালের পর ভারতে আর টেস্ট সিরিজ জিততে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। দেশটিতে খেলা সর্বশেষ ১৪ টেস্টে মাত্র একবারই জিতেছে তারা। তবে ১৭ বছরের খরা কাটিয়ে এবার ভারত থেকে ট্রফি নিয়ে ফিরবেন প্যাট কামিন্স,স্টিভেন স্মিথ,ডেভিড ওয়ার্নাররা-এমনটাই বিশ্বাস অস্ট্রেলিয়ার সাবেক দুই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান ইয়ান হিলি ও অ্যাডাম গিলক্রিস্টের।
উপমহাদেশের স্পিন-সহায়ক পিচে এশিয়ার বাইরের দলগুলোর টেস্টে নাকাল হওয়া নতুন কিছু নয়। ভারতও বেশির ভাগ সময় টার্নিং উইকেট বানিয়ে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করে। তবে হিলি মনে করেন, ভারত এবার খেলার ‘অনুপযোগী’ পিচ না বানালে অস্ট্রেলিয়াই সিরিজ জিতবে। ২০০৪ সালের সিরিজ জয়ী দলের অন্যতম সদস্য গিলক্রিস্টের মতে, তাঁদের মতো মানসিকতা নিয়ে খেললে কামিন্সের দল ভালো কিছু করবে।

১১৯ টেস্ট খেলা হিলি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘ওরা (ভারত) ভালো দল পেয়েছে। কিন্তু আমি ওদের স্পিনারদের ভয় পাই না। যদি না ওরা যা-তা উইকেট তৈরি করে।’

২০০৪ সালে শেষবার ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিতেছে অস্ট্রেলিয়া

হিলির ভবিষ্যদ্বাণী ভারত ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতবে, ‘গতবার ওরা যা-তা উইকেট তৈরি করেছিল। দুটি উইকেট ভয়ংকর ছিল। আমার মনে আছে, স্পিনাররা প্রথম দিন থেকেই মাথার ওপর চড়ে লাফালাফি করছিল। এ ধরনের উইকেট বানালে ওরা আমাদের চেয়ে ভালো করবে। আমার ভবিষ্যদ্বাণী হলো, (মিচেল) স্টার্ক প্রথম টেস্ট খেলতে না পারলে ভারত ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতবে। কিন্তু ফ্ল্যাট উইকেট তৈরি করলে আমাদের সম্ভাবনা আছে।’

ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে বাঁ হাতের আঙুলে চোট পান অস্ট্রেলিয়ার প্রধান পেসার মিচেল স্টার্ক। তাঁর পুরোপুরি সেরে উঠতে আরও তিন সপ্তাহ লেগে যেতে পারে।

হিলি বলেছেন, ‘ওর (স্টার্ক) প্রথম টেস্ট না খেলতে পারাটা নিঃসন্দেহে উদ্বেগের। আসল বিষয় হলো, পরের তিন টেস্টে আপনার যে বোলিং দরকার, তা পাওয়ার জন্য খুব বেশি সময় থাকবে না। স্টার্ক দ্বিতীয় টেস্টে ফিরলেও দুর্দান্ত ছন্দে নাও থাকতে পারে। কারণ, সে কোনো প্রস্তুতি ম্যাচ পাবে না।’

দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে আঙুলে চোট পাওয়ায় ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে অনিশ্চিত মিচেল স্টার্ক

টার্নিং উইকেটের কথা মাথায় রেখে ৪ স্পিনার নিয়ে ভারতে যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। মূল স্পিনার নাথান লায়নের সঙ্গে প্রত্যাশিতভাবেই আছেন বাঁহাতি অ্যাস্টন অ্যাগার ও লেগ স্পিনার মিচেল সোয়েপসন। চতুর্থ স্পিনার হিসেবে রাখা হয়েছে তরুণ টড মার্ফিকে। তবে গিলক্রিস্ট মনে করেন, ২০০৪ সালের মতো এবারও তিন পেসার ও এক স্পিনার নিয়ে বোলিং আক্রমণ সাজালে ভালো করবে অস্ট্রেলিয়া, ‘তিন বিশেষজ্ঞ পেসারের সঙ্গে ছিল শেন ওয়ার্ন। এই বোলিং আক্রমণ দিয়েই আমরা সিরিজ জিতেছিলাম। আমি ওদের (কামিন্সদের) বলব, তারা যেন আমাদের মতো মানসিকতা নিয়ে খেলে। ভারতের পিচ বলে শুধু স্পিন দিয়ে বোলিং করালে চলবে না।’

ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে তরুণ স্পিনার টড মার্ফিকে দলে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া


উত্তরসূরিদের ফিল্ডিং সাজানোর উপায়ও বাতলে দিয়েছেন গিলক্রিস্ট, ‘শুরু থেকেই স্টাম্প বরাবর বোলিং করে যেতে হবে। আক্রমণাত্মক চিন্তা বাদ দিয়ে কিছুটা রক্ষণাত্মক হতে হবে। উইকেটের জন্য ধৈর্য ধরতে হবে জরুরি। একটা স্লিপ, শর্ট কাভার, শর্ট মিড-উইকেটে ফিল্ডার রাখলেই যথেষ্ট। বাউন্ডারি আটকানোর জন্য সীমানায় ফিল্ডার রাখা জরুরি মনে করি।’

৯ ফেব্রুয়ারি নাগপুর টেস্ট দিয়ে শুরু হবে এবারের বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির লড়াই। পরের তিন টেস্ট দিল্লি, ধর্মশালা ও আহমেদাবাদে।

অস্ট্রেলিয়া দল: প্যাট কামিন্স (অধিনায়ক), ডেভিড ওয়ার্নার, উসমান খাজা, মারনাস লাবুশেন, স্টিভেন স্মিথ, ট্রাভিস হেড, ক্যামেরন গ্রিন, অ্যালেক্স ক্যারি, মিচেল স্টার্ক, নাথান লায়ন, জশ হ্যাজলউড, স্কট বোল্যান্ড, অ্যাস্টন অ্যাগার, ল্যান্স মরিস, মিচেল সোয়েপসন, ম্যাট রেনশ, পিটার হ্যান্ডসকম্ব, টড মার্ফি।