‘দক্ষিণ আফ্রিকা অবশেষে টপকাল সেমিফাইনাল-পাহাড়, যেটি অতীতে অনেক পুরুষ দলকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে।’
রিজা হেনড্রিকসের ব্যাটে ম্যাচজয়ী শট আসার পর ধারাভাষ্যে যখন এ কথা বলছিলেন শন পোলক, পাশে দাঁড়ানো ডেল স্টেইনের মুখে হাসি। স্টেইন জানেন, পোলক বাড়িয়ে বলছেন না মোটেও। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিলিয়ে এর আগে সাতবার যে ওই সেমিফাইনালেই আটকে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা! পোলক খেলেছিলেন তার দুটিতে, স্টেইন ছিলেন তিনটি সেমিফাইনালে।
বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল দক্ষিণ আফ্রিকাকে চোখ রাঙিয়েছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম। অবশেষে এইডেন মার্করামের দল টপকাল সেটি। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ত্রিনিদাদে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনাল জেতার পরও অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকাকে সন্তুষ্টি ঘিরে ধরেনি। তাঁরা জানেন, এখনো কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে বাকি একটি ম্যাচ—বার্বাডোজে আগামী পরশুর ফাইনাল।
ফাইনালে পৌঁছানোর অনুভূতি প্রসঙ্গে অধিনায়ক এইডেন মার্করাম বলেছেন, ‘এখন যা বোধ করছি, অবশ্যই সেটি দারুণ অনুভূতি। এ দলটা অনেক দিন একসঙ্গে আছে। ফাইনালে যেতে পেরে ভালো লাগছে। আমরা বিশ্বাস করি, বিশ্বের সেরা দলের সঙ্গে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারব এবং ট্রফি জিততে পারব। আমাদের সে সুযোগ পেয়ে এবং ফাইনালে যেতে পেরে ভালো লাগছে।’
বাঁহাতি স্পিনার কেশব মহারাজ বলেছেন, ‘অবশ্যই ড্রেসিংরুমে সবাই অনেক উজ্জীবিত। দল হিসেবে ইতিহাস গড়েছি। তবে এখনো এক ধাপ পেরোনো বাকি। ছেলেরা উজ্জীবিত। দল হিসেবে গত ৩-৪ বছরে আমরা অনেক দূর এসেছি। আরেকটি ম্যাচ বাকি, পুরো দেশ আমাদের সঙ্গে আছে।’
বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার তাব্রেইজ শামসিও বলেছেন একই ধরনের কথা, ‘আমরা বার্বাডোজ যাচ্ছি, কাজ এখনো শেষ হয়নি। আরেকটি বাকি আছে।’
ম্যাচের পর স্টেইনের সঙ্গে কথাও হয়েছে শামসির। সে আলোচনা প্রসঙ্গে পরে তিনি বলেন, ‘আমাকে বড় একটা আলিঙ্গন দিয়েছেন। এমন কথাই বলেছেন, যেমনটি আমি বললাম—এটা শুধু আমাদের জন্য নয়, দেশের মানুষের জন্য এবং যাঁরা আমাদের আগে খেলে গেছেন, তাঁদের জন্য। তাঁরাই ভিত গড়ে দিয়েছেন এ দলের উন্নতির। আমাদের দায়িত্ব সেটিকে আরেক ধাপ এগিয়ে নেওয়া।’
দ্রুতই আবেগকে চড়তে দিলে সেটি হিতে বিপরীত হয়ে যাওয়ার ভয় আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাত্র ৬ রানে ৩ উইকেট নেওয়া শামসি বলেন, ‘এমন কোনো ব্যাপার নেই, পুরো টুর্নামেন্টেই এ দলের দিক থেকে সেটি দেখে থাকবেন। আমরা আগ বাড়িয়ে কোনো ম্যাচ নিয়েই ভাবিনি। শুধু ঠিক পরের ম্যাচ, এরপর তার পরের ম্যাচটি নিয়ে ভেবেছি। এখন যেহেতু ফাইনালে গেছি, আমরা এখন বসে দেখতে পারি, কাদের সঙ্গে খেলব এবং এরপর প্রস্তুতি নিতে পারি। যেমনটি প্রতিটি দলের ক্ষেত্রেই করেছি।’
লক্ষ্য শুধু ফাইনালে খেলা নয়, বরং শিরোপা জেতা, শামসি মনে করিয়ে দিয়েছেন সেটিও, ‘অনেক বড় অর্জন (ফাইনালে খেলা)। তবে আমরা যখন বিশ্বকাপ খেলতে এসেছি, আমরা শুধু ফাইনালে যেতে আসিনি। অন্য দলগুলোর মতোই এখানে ফাইনাল জিততে এসেছি। আমাদের কাছে কিছুই অতিরঞ্জিত নয়।’