আপাতত মাস দেড়েকের ছুটি। আর সেই ছুটিতে যাওয়ার আগে যেভাবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের শেষটা করতে চেয়েছিল বাংলাদেশ, সেই চাওয়াও পূরণ হয়েছে। সিলেটে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিটা জিতেছে বাংলাদেশ, আর তাতে দুই ম্যাচের সিরিজও সাকিব আল হাসানরা জিতেছেন ২-০ ব্যবধানে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল বাংলাদেশ।
দেড় মাস পর এশিয়া কাপ, সেটা হবে ওয়ানডে সংস্করণে। তারপর ওয়ানডে বিশ্বকাপ। বাংলাদেশের এই টি-টোয়েন্টি দলের বেশির ভাগই খেলোয়াড় আছেন ওয়ানডে দলেও। এই টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়টা বাংলাদেশকে পরের দুটি বড় টুর্নামেন্টেও বেশ আত্মবিশ্বাস দেবে বলে মনে করেন সাকিব। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এই সিরিজ থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্তি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেছেন, ‘ওয়ানডে দলে যারা খেলে, তাদের অনেকেই এই টি-টোয়েন্টি দলেও আছে। ফলে ওরা এখান থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস নিয়েই এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপে যাবে।’
সাকিব নিজেও তো আত্মবিশ্বাসে টগবগ থাকার কথা। গতকালের ম্যাচটায় প্রথমে বল হাতে ১৫ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন, পরে ব্যাট হাতে ১১ বলে ১৮ রান করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। ম্যাচসেরা খেলোয়াড় তো হয়েছেনই, দুই ম্যাচের সিরিজে ৩৭ রান ও ৪ উইকেট নিয়ে হয়েছেন সিরিজসেরাও। তবে নিজের পারফরম্যান্সের চেয়ে দলের তরুণ খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স নিয়ে বেশি উচ্ছ্বসিত বাংলাদেশ অধিনায়ক।
বাংলাদেশের এই টি-টোয়েন্টি দলে তরুণেরা এরই মধ্যে সাহসী ক্রিকেট খেলে নিজেদের আলাদা করে চিনিয়েছেন। গতকালও আফগানিস্তানের দেওয়া ১৭ ওভারে ১১৯ রানের লক্ষ্যে তরুণ ব্যাটসম্যানদের ওপরই আস্থা রাখতে চেয়েছেন অধিনায়কসহ টিম ম্যানেজমজেন্ট। এ কারণেই নাকি আফিফ হোসেনকে ওপেনিংয়ে পাঠিয়েছেন লিটন দাসের সঙ্গে, সাকিব নিজে ৪ নম্বরে না নেমে পাঠিয়েছেন তাওহিদ হৃদয়কে। ম্যাচ শেষে সাকিবই বললেন, ‘আমি ও কোচিং স্টাফরা মিলে চেয়েছিলাম, তরুণেরা বেশি সময় ধরে ব্যাটিং করুক, ম্যাচটা শেষ করুক।’
সেই পথে খুব ভালোভাবেই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। বিনা উইকেটেই ৬৬ রান ছিল একসময় বাংলাদেশের। তারপর অবশ্য দ্রুত ৩টি উইকেট চলে যাওয়ায় সাকিবকে নামতেই হয়েছে। তবে ম্যাচ জেতা নিয়ে সাকিবের কখনোই একটু শঙ্কা জাগেনি, ‘হুটহাট কয়েকটা উইকেট পড়ে গেলেও নার্ভাস হওয়ার মতো কিছু আসলে ছিল না। আমাদের শুরুটা যে রকম হয়েছিল, জানতাম যে আমরা সব সময় ওদের চেয়ে এগিয়ে আছি। মাঠের যে কন্ডিশন ছিল, ওদের স্পিনারদের জন্য কাজটা কঠিন হবে, এটা জানতাম।’
বৃষ্টির পর বোলিং করা আসলেই কঠিন হয়ে গিয়েছিল। পরপর দুই ম্যাচে বাংলাদেশ পরে ব্যাট করায় এই জায়গায় কিছুটা সুবিধা তো পেয়েছেই। সাকিব স্বীকার করলেন সেটাও, ‘টস–ভাগ্য কিছুটা সাহায্য করেছে, এটা বলতেই হবে।’
দুই ম্যাচেই পরে বোলিং করায় আফগানিস্তানকে ভুগতে হয়েছে কিছুটা। আগের ম্যাচ শেষে তো এ নিয়ে কিছুটা আক্ষেপও করেছিলেন আফগানিস্তান অধিনায়ক রশিদ খান। তবে এবার আর এ নিয়ে কোনো আক্ষেপের কথা বললেন না রশিদ, ‘আবহাওয়া কোনো অজুহাত হতে পারে না। টি-টোয়েন্টিতে ফল সামর্থ্য ও দক্ষতায় নির্ধারিত হয়, আমরা আজ সেই জায়গায় বেশ পিছিয়ে ছিলাম।’