আগামী চার বছরে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির আয়ের প্রায় ৪০ শতাংশ পেতে যাচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। প্রস্তাবিত কাঠামো অনুযায়ী ভারত যা পাবে, তার ধারেকাছেও নেই অন্য কোনো ক্রিকেট বোর্ড।
আইসিসির প্রাক্কলিত ৬০ কোটি মার্কিন ডলার আয়ের মধ্যে ভারত পাবে ২৩ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার (প্রায় ২৪৯২ কোটি টাকা), যা মোট অর্থের ৩৮.৫ শতাংশ।
আর কোনো দেশের ক্রিকেট বোর্ড ১০ শতাংশও পাবে না। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড পাবে ৪.৪৬ শতাংশ। অর্থের অঙ্কে যা ২ কোটি ৬৭ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২৯০ কোটি টাকা।
আইসিসির সংশ্লিষ্ট নথিপত্রের ভিত্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ক্রিকেট ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো।প্রস্তাবিত মডেলটি ২০২৪–২৭ চক্রে বাস্তবায়িত হবে।
বিসিসিআইয়ের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয় করবে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। আইসিসির বার্ষিক আয়ের ৬.৮৯ শতাংশ তথা ৪ কোটি ১৩ লাখ মার্কিন ডলার যাবে তাদের ঘরে। এর পরের নামটা ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ)। দেশটির সম্ভাব্য বার্ষিক আয় ৬.২৫ শতাংশ অর্থাৎ, ৩ কোটি ৭৫ লাখ ডলারের বেশি।
আইসিসির পূর্ণ সদস্যদের মধ্যে বিসিসিআই, ইসিবি ও সিএর পর ৫ শতাংশের বেশি আয় করা চতুর্থ বোর্ড পিসিবি। পাকিস্তানের ক্রিকেট কর্তৃপক্ষ পেতে যাচ্ছে ৩ কোটি ৪৫ লাখ ডলারের (৫.৭৫ শতাংশ) বেশি।
অন্যদের মধ্যে নিউজিল্যান্ডের এনজেডসি প্রায় ২ কোটি ৮৩ লাখ ৮০ হাজার, শ্রীলঙ্কার এসএলসি ২ কোটি ৭১ লাখ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিডব্লিউআই ২ কোটি ৭৫ লাখ ডলার পাবে। পূর্ণ সদস্যদের মধ্যে সবচেয়ে কম পাবে আফগানিস্তান, ১ কোটি ৬৮ লাখ ডলার ( ২.৮০ শতাংশ)। অর্থপ্রাপ্তির দিক থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড আছে ৮ নম্বরে।
প্রাথমিকভাবে আইসিসির একটি দল এবং পরে পরিচালনা পর্ষদের ফিন্যান্স অ্যান্ড কমার্শিয়াল অ্যাফেয়ার্স কমিটি রাজস্ব বণ্টনের এই কাঠামো তৈরি করেছে, যা গত মার্চে আইসিসির বোর্ড সভায় উত্থাপন করা হয়। চারটি মানদণ্ড ধরে আইসিসির আয় বণ্টন করা হয়েছে।
এগুলো হচ্ছে—সংশ্লিষ্ট দেশের ক্রিকেট ইতিহাস, আইসিসি টুর্নামেন্টগুলোতে ছেলে ও মেয়েদের আসরে গত ১৬ বছরের পারফরম্যান্স, আইসিসির বাণিজ্যিক আয়ে অবদান এবং আইসিসির পূর্ণ সদস্য হিসেবে নির্ধারিত অর্থ, যেটি সব দেশেরই সমান।
আইসিসির টুর্নামেন্টগুলোয় পারফরম্যান্সের ক্ষেত্রে মূলত মানদণ্ড ধরা হয়েছে নকআউট পর্বের পারফরম্যান্সকে। সেখানে সবার ওপরে অস্ট্রেলিয়া (২১.৯ শতাংশ)। তাদের পরে আছে ইংল্যান্ড (১৮.৫ শতাংশ) ও ভারত (১৭.৪ শতাংশ)। ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ এখানে অন্তর্ভুক্ত নয়।
তবে বাণিজ্যিক আয়ে অবদান বেশি ভারতের। ক্রিকেটের বৈশ্বিক সংস্থাটির বাণিজ্যিক আয়ের ৮৫.৩ শতাংশ বিসিসিআইয়ের বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে ক্রিকইনফোর দেখা সংশ্লিষ্ট নথিপত্রে এ বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
প্রস্তাবিত এই কাঠামো নিয়ে মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই মতামত জানানোর কথা সদস্য দেশগুলোর।