১ বছর ২ মাস ১৮ দিন, শুধু দিনের হিসাবে ৪৪৫ দিন। ঋষভ পন্ত সর্বশেষ প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট ম্যাচটা খেলেছেন ঠিক এত দিন আগে। এবারের আইপিএল দিয়ে আবার তাঁর মাঠে ফেরার কথা। শোনা যাচ্ছে, গত কিছুদিনে তিনি যে কয়টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছেন, সেগুলোতে ব্যাট হাতে আর উইকেটকিপিংয়ের গ্লাভস হাতে স্বচ্ছন্দই ছিলেন।
২০২২ সালের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় ভয়ংকর চোট পান পন্ত। এরপর তো অনেকের মনেই শঙ্কা জেগেছিল, ভারতের এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান আর কোনো দিন ক্রিকেট খেলতে পারবেন কি না। কিন্তু চোটের সঙ্গে লড়াই করে পন্ত আবার মাঠে ফেরার অপেক্ষায়। এখন তো ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের সচিব জয় শাহ বলছেন, আইপিএলে ঠিকভাবে কিপিং করতে পারলে পন্তকে রাখা হবে জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে।
দিল্লি ক্যাপিটালসের প্রধান কোচ রিকি পন্টিং কয়েক দিন আগেই বলেছেন, পন্ত আইপিএলে খেলবেন। দিল্লি দলের সহ-মালিক পার্থ জিন্দাল ইএসপিএনক্রিকইনফোকে বলেছিলেন, পন্ত এরই মধ্যে উইকেটকিপিংও শুরু করেছেন এবং আইপিএলের জন্য পুরো ফিট।
এবার জয় শাহ সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, ‘সে ভালো ব্যাটিং করছে, ভালো উইকেটকিপিং করছে। আমরা তাকে শিগগিরই ফিট ঘোষণা করব। সে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে পারলে আমাদের জন্য সেটা হবে বিরাট ব্যাপার। সে আমাদের বড় এক সম্পদ। সে যদি কিপিং করতে পারে, তাহলে বিশ্বকাপেও খেলতে পারে। দেখা যাক, আইপিএলে সে কেমন করে।’
পন্ত ভারতের ক্রিকেটের জন্য যে বড় এক সম্পদ, সেটা তাঁর পরিসংখ্যানও বলবে। ভারতের হয়ে এখন পর্যন্ত খেলা ৩৩ টেস্টে ৫টি সেঞ্চুরি ও ১১টি ফিফটিতে ৪৩.৬৭ গড়ে ২২৭১ রান করেছেন। ওয়ানডেতে একটি সেঞ্চুরি ও ৫টি ফিফটিসহ ৩৪.৬০ গড়ে তাঁর রান ৮৬৫। টি-টোয়েন্টিতে তিনি ভারতের হয়ে খেলেছেন ৬৬ ম্যাচ। ৩টি ফিফটিতে করেছেন ৯৮৭ রান।
৩০ ডিসেম্বর দুর্ঘটনার আগে সর্বশেষ পন্ত বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন। মিরপুরে ২২ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ২৫ ডিসেম্বর শেষ হওয়া সেই ম্যাচে তিনি দুই ইনিংসে করেছেন ৯৩ ও ৯ রান। চার দিনের মধ্যে ভারতের ৩ উইকেটে জেতা ম্যাচে উইকেটকিপার হিসেবে নিয়েছেন ৪টি ক্যাচ, করেছেন একটি স্টাম্পিং।
পন্ত ২০২২ সালের ৩০ ডিসেম্বর হরিদ্বারে নিজের শহর রুর্কিতে যাওয়ার সময় গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়েন। দিল্লি-দেরাদুন মহাসড়কে রাস্তার ডিভাইডারে ধাক্কা খেয়ে তাঁর গাড়িতে আগুন লেগে গিয়েছিল। প্রথমে তাঁকে সেখানে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে তাঁকে নেওয়া হয় দেরাদুনের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে। পরে পন্তকে উন্নত চিকিৎসার জন্য মুম্বাইয়ে কোকিলাবেন ধীরুভাই আম্বানি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।