৩৯৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে তৃতীয় দিন শেষে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ৫ উইকেটে ৬৩ রান। মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট নিয়ে এরপর আর আলোচনা হয়নি যে নিউজিল্যান্ড টেস্ট বাঁচাতে পারবে কি না! আলোচনাটা ছিল এ রকম—কখন আর কত রানে হারবে কিউইরা।
ম্যাচ বাঁচাতে নিউজিল্যান্ডকে করতে হতো অলৌকিক কিছু। মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের চতুর্থ দিনে আজ অলৌকিক কিছু ঘটেনি। এমনকি ন্যূনতম লড়াইটাও করতে পারেনি কিউইরা। জেমস অ্যান্ডারসনের তোপে চতুর্থ দিনের প্রথম সেশনেই নিউজিল্যান্ড গুটিয়ে যায় ১২৬ রানে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে স্বাগতিকদের হার ২৬৭ রানের বড় ব্যবধানে।
চতুর্থ দিন নিউজিল্যান্ডের ৫ উইকেটের ৪টিই নিয়েছেন অ্যান্ডারসন। তাঁর এই তাণ্ডবে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ১৫ বছর পর জয়ের টেস্ট জিতল ইংলিশরা। এর আগে সর্বশেষ ২০০৮ সালে নিউজিল্যান্ডে টেস্ট জিতেছিল ইংল্যান্ড। আর কোচ ব্র্যান্ডন ম্যাককালাম ও অধিনায়ক বেন স্টোকসের অধীনে খেলা ১১ টেস্টের ১০টিতেই জিতল ইংল্যান্ড।
জিততে হলে রেকর্ড গড়তে হতো নিউজিল্যান্ডকে। এর আগে ৩২৪ রানের বেশি রান তাড়া করে জিততে পারেনি তারা। এমনকি নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ৩৪৫ রানের বেশি তাড়া করে জিততে পারেনি কোনো দলই। সব মিলিয়ে আজ মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা ছিল নিছক আনুষ্ঠানিকতা।
দিনের প্রথম উইকেটটা জ্যাক লিচ নিলেও কিউইদের ওপর আসল তোপটা দেগেছেন অ্যান্ডারসনই। কিউই ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ড্যারিল মিচেল কিছুটা প্রতিরোধ না গড়লে চতুর্থ ইনিংসে ১০০ রান পেরোনোই হয়তো সম্ভব হতো না তাদের। মিচেলের অপরাজিত ৫৭ রান হারের ব্যবধানটাই শুধু কমাতে পেরেছে।
প্রথম ইনিংসে অবশ্য লড়াইটা ভালোই জমিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। ইংল্যান্ডের ৩২৫ রানের জবাবে তারা করেছিল ৩০৬ রান। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ইংলিশরা ৩৭৫ রান করলে ম্যাচটা বেশ কঠিন হয়ে নিউজিল্যান্ডের জন্য। এর মধ্যে চতুর্থ ইনিংসে অ্যান্ডারসন-ব্রডের তোপে পড়ে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি টিম সাউদির দল।নিউজিল্যান্ডের গুটিয়ে দেওয়ার আগে অবশ্য এই টেস্টেই জুটিতে হাজারতম উইকেট নেওয়ার মাইলফলক গড়েন অ্যান্ডারসন–ব্রড। এখন সবাইকে ছাড়িয়ে যৌথভাবে তাঁদের উইকেট ১০০৯টি।
প্রথম ইনিংসে ৮৯ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৪ রান করে ম্যাচসেরা হয়েছেন ইংল্যান্ডের হ্যারি ব্রুক। ম্যাচ শেষে প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, ‘এই জয়ে সম্ভবত কারও একক কৃতিত্ব নেই। আমরা সবাই দারুণভাবে ভূমিকা রেখেছি। বিশেষ করে এমন উইকেটে বোলারদের কথা আগে বলতে হয়।’
নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক টিম সাউদি ম্যাচ বলেছেন, ‘হতাশাজনক। তবে ইংল্যান্ডকে কৃতিত্ব দিতে হবে। কৌশলগত দিক থেকে তারা খুব ভালো খেলেছে।’